গ্রামে ব্যারিকেড। নিজস্ব চিত্র
ভূশণ্ডি গৃহবন্দি হল! গ্রামে করোনা আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়তেই, জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি শনিবার সকাল থেকে সালার ব্লকের ওই গ্রাম দুয়ারে কুলুপ এঁটেছে। দু`দিন আগেও যে গ্রামে বাজার-দোকান ছিল আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতো খোলা, গ্রামের মাচায় সান্ধ্য আড্ডাও বসত প্রায় নিয়ম করে, গ্রামের এক বৃদ্ধের করোনা আক্রান্তের খবর মিলতেই সেই বেপরোয়া ভাব সেঁধিয়েছে। মহকুমা প্রশাসনও গ্রামটিকেই কোয়রান্টিনে পাঠিয়ে রাস্তার মোড়ে বাঁশের ব্যারিকেড লাগিয়ে স্তব্ধ করে দিয়েছে চলাচল। গ্রামের বাসিন্দাদেরও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিশেষ কোনও প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে পা-রাখা নৈব নৈব চ।
শুক্রবার ভূশণ্ডি গ্রামের ক্যানসার আক্রান্ত এক বৃদ্ধের রক্ত ও লালারস পরীক্ষা করা হয় কলকাতার ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালে। পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ‘পজ়িটিভি’ আসতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ভয় পেয়ে এত দিন যাঁরা `ও কিছু লয়` বলে গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, বাহিরমুখো হওয়া বন্ধ করেন তাঁরাও। এ দিন দুপুরেই ওই গ্রামের প্রায় সব ক`টি প্রবেশপথেই ব্যারিকেড তুলে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সালু গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে শুরু হয়েছে প্রহরা। গ্রামে বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এখন থেকে তাঁরাই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবেন বলে ঠিক হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই বৃদ্ধের পরিবারের ১৩ জন সদস্যকে সালারের কর্মতীর্থ ভবনে সরকারি কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে। চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে, ওই পরিবারের সঙ্গে ইতিপূর্বে গ্রামের কারা মেলামেশা করেছেন, তাঁদের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ২৮ জনকে চিহ্নিত করে সরকারি কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, “সালারের ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে এসেছেন সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। ওই বৃদ্ধকে কলকাতার এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তবে, তিনি ভাল আছেন।”
মুর্শিদাবাদ বর্ধমানের সীমান্তবর্ত্তী গ্রাম ভুশণ্ডি। ওই গ্রাম থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার আগড়ডাঙা। এ দিন ওই এলাকাতেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সালু পঞ্চায়েতের খাঁড়েরা, আলেপুর ও কেতুগ্রামের আগড়ডাঙা তিনটি গ্রাম জুড়ে এ দিন সকাল থেকেই করোনার ছায়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভূশণ্ডির স্থানীয় বাসিন্দা সাগর শেখ, সাবির শেখরা বলেন, “আমাদের এই গ্রামগুলি গায়ে গা লাগানো। ফলে সব গ্রামেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে।`` সালু অঞ্চল প্রধান তৃণমূলের মুস্তাক আলি বলেন, “পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ভূশণ্ডি গ্রামের বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় জিনিস আমরা পৌঁছে দিচ্ছি। বাসিন্দাদের কাছেও অনুরোধ করা হচ্ছে কেউ যেন বাড়ির বাইরে যাতায়াত না করেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy