ছবি: সংগৃহীত।
বছর খানেক আগে সেরিব্রাল অ্যাটাকের পর থেকে কোমরের ব্যথায় ভুগছেন কৃষ্ণনগরের সত্যগোপাল চক্রবর্তী। প্রতি তিন মাস অন্তর কলকাতা যেতে হয় চিকিৎসার জন্য। স্ত্রী মমতা চক্রবর্তীর হাঁটুর ক্ষয় রোগ। তিনিও কলকাতায় চিকিৎসা করান। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতা যেতে সাহস পাচ্ছেন না তাঁরা। এ দিকে ব্যথা বেড়েছে।
কলকাতার যেখানে দেখান, সেখানে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা বলেছিল, টাকা পাঠালে হোয়াটস অ্যাপে চিকিৎসকের পরামর্শ দেবে। কিন্তু তাতে ভরসা পাচ্ছেন না চক্রবর্তী পরিবার। ব্যথা নিয়েই অপেক্ষায় আছেন সুদিন ফেরার। করিমপুরের এক মহিলা শিরদাঁড়ার সমস্যার জন্য বহরমপুরে ডাক্তার দেখান। কিন্তু এই সময় ডাক্তার দেখাতে যেতে পারছেন না। ডাক্তারবাবও ফোন ধরছেন না। ফলে পুরনো প্রেসক্রিপসনের ওষুধই খেয়ে চলেছেন তিনি।
লকডাউনের সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন হাড়়, স্নায়ু বা শিরার পুরনো ব্যথায় ভোগা রোগীরা। কারণ, জেলায় এই সব রোগের চিকিৎসক পাওয়া কঠিন। জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই সব বিভাগ নেই বা থাকলেও পরিষেবা মেলে নামমাত্র। বড় বেসরকারি হাসপাতালও জেলায় অমিল যেখানে এই সব পরিষেবা মিলবে। ফলে এই কঠিন সময়ে অধিকাংশ রোগী না পেয়েছেন চিকিৎসক, না পেয়েছেন ওষুধ।
কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা ৫৪ বছরের শিখা নন্দীর রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রয়েছে। তার জন্য চার বছর ধরে নিয়মিত খেতে হয় হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন। কিন্তু করোনার কারনে কয়েক দিনের মধ্যেই বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় ওই ওষুধ। শেষ পর্যন্ত একজন পরিচিত চিকিৎসকের সাহায্যে ওষুধ পান তিনি। এ রকম উদাহরণ অজস্র। কৃষ্ণনগর এভি স্কুল মোড়ের এক ওষুধের দোকানদার বললেন, ‘‘আমাদের চেম্বারে হাড়ের চিকিৎসক কলকাতা থেকে আসেন। লকডাউনের প্রথম দু’ মাস তিনি আসতে পারেননি। পুরনো রোগীদের সমস্যা শুনে হোয়াটস অ্যাপে ওষুধ বলে দিয়েছেন।কিন্তু নতুন রোগীরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট না-পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।’’
কৃষ্ণনগরের অস্থি চিকিৎসক অভিজিৎ ঘোষ বললেন, ‘‘লকডাউনের প্রথম বারো দিন চেম্বার খুলিনি। তারপর চেম্বার খুললেও সব রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোগী দেখা সমস্যার হওয়ায় এক বেলা রোগী দেখেছি। ফলে অনেকেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাননি।’’ আনলক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর হাসপাতালের আউটডোরে ভিড় বাড়ছে। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের অস্থি বিশেষজ্ঞ অঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘লকডাউনের শুরুর দিকে রোজ গড়ে ১০-১৫ জন করে রোগী ভর্তি হচ্ছিলেন। এখন তা বেড়ে ২০-৪০ জন হচ্ছে। আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় ২০০ জন রোগী পাচ্ছি।’’ কল্যাণী জেএনএমের অস্থি বিশেষজ্ঞ অর্ণব বিশ্বাসের কথায়, ‘‘গত জুন মাসে আনলক শুরুর পর থেকে রোগী ভর্তির সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy