গঙ্গা ভাঙন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
মুর্শিদাবাদে গঙ্গা ভাঙন রুখতে শুক্রবার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে এলাকায় গঙ্গা ভাঙন পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর শমসেরগঞ্জের সভায় গিয়ে গঙ্গা ভাঙন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান মমতা। বলেন, ‘‘গঙ্গা ভাঙন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের প্রকল্প। তা সত্ত্বেও কোনও সাহায্য করে না। শুধু রাজনীতি, অশান্তি নিয়ে মাথা ঘামায়।’’ কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হওয়ার পরই গঙ্গা ভাঙন রোধে ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে জেলা প্রশাসনের বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠক থেকে শমসেরগঞ্জে গঙ্গা ভাঙন মোকাবিলায় ৫০ কোটি টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা। শুক্রবার সেই শমসেরগঞ্জে দাঁড়িয়ে এ জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। চলতি বছরেই পঞ্চায়েত ভোট রয়েছে। ইতিমধ্যেই ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার মালদহের ইংরেজবাজারে অভিষেকের মঞ্চে গিয়েছিলেন মমতা। সেখান থেকেও কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। এই আবহে গঙ্গা ভাঙনের মতো গুরুতর সমস্যায় কেন্দ্র সাহায্য করছে না বলে যেমন অভিযোগ করলেন মমতা, একই সঙ্গে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিলেন।
শুক্রবার মমতা বলেন, ‘‘গতকাল ৫০ কোটি টাকা ঘোষণা করেছিলাম। আজ ১০০ কোটি টাকা ঘোষণা করলাম। ভাঙনের পার সারানো যাবে। যাঁরা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, তাঁদের পাট্টা দেওয়া হবে। একটু দূরে জায়গা নেবেন। যাঁরা এমন জায়গায় রয়েছেন, যা একেবারে জলের তলায় প্রায়। তাঁদের সরে যেতে হবে।’’ এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘নিজের বাসস্থান কেউ ছাড়তে চায় না। একটা আবেগ কাজ করে। কিন্তু জীবনের থেকে তো বড় কিছু নয়।’’ নদী থেকে ৪-৫ কিমি দূরে বাড়ি তৈরির পরামর্শ দেন মমতা। এর পরই সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং সেচ সচিবের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ‘‘এই কাজটা ভাল করে করতে হবে। এই বছরই তোমরা যদি ১০০ কোটি টাকার কাজ করতে পারো, তা হলে পরের বছর আমি দেখে নেব আরও।’’
কয়েক দিন আগে শমসেরগঞ্জে গঙ্গা ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে পার্থ বলেছিলেন যে, যদি কেন্দ্র না টাকা দেয়, তা হলে রাজ্যই কাজ করবে। গত ২৬ এপ্রিল নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে যা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘‘আমি পার্থ ভৌমিকের একটা স্টেটমেন্ট দেখেছি যে, গঙ্গা ভাঙন আমরাই হাতে নিয়ে করব। এটার ব্যাপারে কোনও ক্লিয়ারেন্স তো আসেনি।’’ পার্থের মন্তব্যের জন্য তাঁকে সতর্কও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
গঙ্গা ভাঙন নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘যতটা রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামায়, অশান্তি নিয়ে মাথা ঘামায়, প্ররোচনা নিয়ে মাথা ঘামায়, কুৎসা নিয়ে মাথা ঘামায়, মিথ্যা কুৎসা রটায়, মাথাটা যদি সঠিক কাজে ব্যবহার করত, প্রকৃতি আরও রূপসী বাংলা রূপে রূপান্বিত হতে পারত।’’ বাংলা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে বলে টাকা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিন্হা পাল্টা বলেছেন, ‘‘চুরি করবে আবার বড় বড় কথা বলবে! ২০২৪ সালের আগেই টাকা দেবে। হিসাব দিন পুরো টাকা দেবে। তৃণমূলের লুট করার জন্য টাকা বিলিয়ে দেওয়া যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy