Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
জেলা জুড়ে বৃহস্পতিবারের ছবি শনিবারেও
lockdown

লকডাউনে ফাঁকা শহর-গ্রাম

সকাল ছ’টা থেকেই দুই পুলিশ জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশি আধিকারিকরা বেরিয়ে পড়েছিলেন নিজের নিজের এলাকা টহল দিতে।

রঘুনাথগঞ্জে লকডাউনের বিধি ভাঙায় তৎপর পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

রঘুনাথগঞ্জে লকডাউনের বিধি ভাঙায় তৎপর পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০ ০২:২০
Share: Save:

বেলাগাম করোনার রাশ টানতে সাপ্তাহিক লকডাউনের দ্বিতীয় দিন শনিবারেও জেলা জুড়ে সজাগ ছিল পুলিশি নজরদারি। সেই সঙ্গে ছিল মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা। দুইয়ে মিলে সপ্তাহের দ্বিতীয় লকডাউনের দিনে যেন ফিরে এল প্রথম লকডাউনের দিনেরই ছায়া।
সকাল ছ’টা থেকেই দুই পুলিশ জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশি আধিকারিকরা বেরিয়ে পড়েছিলেন নিজের নিজের এলাকা টহল দিতে। ফেস কভার বা মাস্ক ছাড়া মানুষের জটলা খাঁকি উর্দি দেখামাত্র এক ছুটে আড়াল খুঁজেছে। পাশাপাশি পুলিশের নজরদারির আড়ালে গলির মধ্যে চলেছে আড্ডার ঠেকও। বহরমপুর থেকে ডোমকল, কান্দি থেকে ধুলিয়ান, লালবাগ থেকে ফরাক্কা সর্বত্র ছিল এক ছবি। তবে এ দিন পুলিশের নজরদারি বেশি ছিল শহর ছাড়িয়ে শহর লাগোয়া এলাকায়। কোথাও কোথাও প্রত্যন্ত গ্রামেরও ঘুরেছে পুলিশ গাড়ির চাকা।
তবে এ দিন সর্বস্তরের মানুষজনের মধ্যেও সচেতনতা বেড়েছে বলছে পুলিশ। রাস্তায় লোকজন বা যানবাহন দেখা যায়নি বললেই চলে। রঘুনাথঞ্জ ও জঙ্গিপুর শহরে সকালের দিকে দু’একটি টোটো রাস্তায় বেরিয়েছিল। সবগুলোকেই বিকেল পর্যন্ত আটকে রাখে পুলিশ। এ দিন অবশ্য শামসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান এলাকার নিয়মভঙ্গকারি মানুষজনকে পুলিশের লাঠির সামনেও পড়তে হয়েছে। বিড়ি মহল্লা অরঙ্গাবাদ ছিল শুনশান। তবে বাড়িতে বসে শ্রমিকদের বিড়ি বাঁধাইয়ে কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি।
ইতিমধ্যেই জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণের মুখে পড়েছে শমসেরগঞ্জ, ফরাক্কা ব্লক। দুটি জায়গাতেই লকডাউন সফল। বহরমপুর, ভগবানগোলা, রানিতলা, কান্দিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’একটি দোকান খোলার চেষ্টা করলে ঝাঁপ ফেলে দোকান বন্ধ করছে পুলিশ।
হরিহরপারা, নওদা, বরঞা, বেলডাঙা, বহরমপুরে আনাজ বাজার থেকে মাছ মাংসের দোকান এমনকি নিয়মমেনে মুদির দোকানও বন্ধ ছিল সর্বত্র। ওই সব এলাকায় ওষুধের দোকান খোলা থাকলেও রোগীর আনাগোনা কম ছিল মহকুমা হাসপাতালসহ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। গণ পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতি কম থাকায় বেশ কিছু পরিষেবা
ব্যাহত হয়েছে।
এদিন ডোমকলে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ফারুক মহম্মদ চৌধুরী রাস্তায় নেমে কালিতলা, শেখপাড়া, বাজিতপুর প্রভৃতি এলাকায় মাইকে প্রচার করে মানুষজনকে লকডাউন পালন করার জন্য অনুরোধ করেছেন। অসচেতন লোকজন ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করলে তাঁদের আটক করা হয়েছে। গাড়ির চালককে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রথম দিনের মতো বহরমপুরের রাস্তায় বেরিয়ে কড়া হাতে লকডাউন সামলেছেন মুর্শিদাবাদ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিস সুপার অনীশ সরকার।
পুলিশের বারংবার ঘোষণার পরেও বৃহস্পতিবারের তুলনায় শনিবার নিয়ম মানার বহর দেখতে কোথাও কোথাও বাড়ির বাইরে পা রেখেছিল উৎসুক জনতা। তাদের আটক করেছে পুলিশ।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, “সাপ্তাহিক লকডাউনের দ্বিতীয় দিনের থেকে বেশি পুলিশ মোতায়েন ছিল জেলায়। বহরমপুর লাগোয়া কর্ণসুর্বণ, রাধারঘাট প্রভৃতি এলাকায় বেশি নজরদারি ছিল। ভবিষ্যতে এই নজরদারি আরও বাড়বে।”
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এদিন বহরমপুর, ডোমকলে পঞ্চাশের বেশি ও অন্যত্র জেলা জুড়ে দেড়শো জন নিয়মভঙ্গকারিকে আটক করা হয়েছে।
সাগরদিঘির বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু জানান পুলিশ ও প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে শনিবারের লকডাউনে সন্ধে পর্যন্ত সাগরদিঘিতে ৬০ জনকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে লকডাউন ভাঙার নির্দিষ্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

lockdown Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy