জলঙ্গির জল এখন এমনই কালো। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
বর্ষাকালের শুরুতে কিছুটা হলেও বেড়েছে জলঙ্গি নদীর জল। কিন্তু সেই জলের রং কালো। আর সেই কারণে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে নদী-সংলগ্ন এলাকার মৎস্যজীবীদের। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, প্রতি বছর একই ঘটনা ঘটলেও তেহট্ট ২ ও জেলা প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই কেন?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পচা-কালো জল জলঙ্গি নদীতে প্রবেশ করতে শুরু করার ফলে নদীর রং কালো হয়ে গিয়েছে। এই কালো দূষিত জলের কারণে আগের মতো এবারেও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরার আশঙ্কা করছেন মৎস্যজীবীরা। বছরভর মাছ বিক্রি করে যাঁদের সংসার চলে, মাছ মরে গেলে রুটিরুজিতে টান পড়বে তাঁদের, আশঙ্কা মৎস্যজীবীদের।
স্থানীয় মৎস্যজীবী ও প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতি বছর জলঙ্গি নদীতে জল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কালো জল মিশে গিয়ে নদীর মাছ মরতে শুরু করে। কিছু দিন এমন চলার পর ফের নদীতে ঘোলা জল এলে মাছ মরা বন্ধ হয়। অভিযোগ, মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙার কাছে রয়েছে গোবরা বিল, যেখান থেকে সুতির খালের উৎপত্তি। জানা গিয়েছে, ওই খালের দূষিত-কালো জল এসে মিশেছে মুর্শিদাবাদ জেলার বালি টুঙ্গির কাছে জলঙ্গি নদীতে। সারা বছর খালের সঙ্গে নদীর যোগাযোগ বন্ধ থাকে। শুধুমাত্র বর্ষায় জল বাড়লে জলঙ্গি নদীর সঙ্গে সুতির খালের কালো জলের সংযোগ ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সুতির খালের সঙ্গে জলঙ্গি নদীর সরাসরি যোগাযোগ না থাকলেও সারা বছর জল থাকে ওই খালে। ওই খালের আশেপাশে রয়েছে জনবসতি। এলাকার মানুষ খালের জলে বিভিন্ন আবর্জনা ফেলেন সারা বছর। একই সঙ্গে খালের দুই পাড়ের এলাকায় পেঁয়াজ-রসুন চাষ ভাল হয়। সেই পেঁয়াজ-রসুনের অব্যবহৃত ও অবশিষ্টাংশ সরাসরি খালে ফেলে দেওয়া হল। সেগুলি পচে গিয়ে খালের জলকে প্রতিনিয়ত দূষিত করে চলেছে। বর্ষাকালে সেই দূষিত, কালো জল ঢুকে পড়ছে জলঙ্গি নদীতেও।
পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর বর্ষার সময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে জলঙ্গি নদী ও সুতির খালের জল বাড়তে থাকে। সুতির খালের জল ঢুকে দূষিত হয় জলঙ্গি নদী। এলাকার মৎস্যজীবী সমীর হালদার, রাকেশ হালদারেরা বলছেন, প্রতি বারের মতো সুতির খালের জল ঢুকতে শুরু করেছে জলঙ্গি নদীতে। রং বদলাতে শুরু করেছে নদীর জলের। আমরা মাছ মরার আতঙ্কে রয়েছি।” তাঁদের আরও অভিযোগ, প্রতি বছর একই পরিস্থিতি হলেও উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে দেখা যায় না প্রশাসনকে। এই বিষয়ে তেহট্ট ২ মৎস্য বিভাগের আধিকারিক মিঠুন মণ্ডল বলেন, “জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” জেলা মৎস্য দফতরের আধিকারিক শুভেন্দু হালদার বলেন, “গত বছর মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনকে এই বিষয়ে অবগত করা হয়েছিল। বলা হয়, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। তবুও দেখা হচ্ছে।” জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, “বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy