Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
রক্তপরীক্ষায় লাগছে টাকা
Dengue

জলবন্দি শহর, ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি

ধুলিয়ানের পুরপ্রধান, তৃণমূলের সুবল সাহা বলেন, “রবিবারও প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছে। জমা জলে ডুবে রয়েছে শহরের বহু এলাকা। আমার ওয়ার্ডে গুড়িপাড়া পুরোপুরি জলের তলায়। ফলে জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। পুরসভা কেরোসিন কিনে এনে ছড়াচ্ছে। তা-ও মিলছে না।”

বিমান হাজরা
ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪৩
Share: Save:

জলবন্দি ধুলিয়ানে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সমশেরগঞ্জে এখনও পর্যন্ত ৭৭ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। গত মাসেও যে সংখ্যাটা ছিল মাত্র ১১।

ধুলিয়ান পুরসভার হিসেবে, গত চার দিনে জ্বরে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। তাঁদের মধ্যে দুলু মহালদার (৫৫), মাসুম শেখ (২০), সাবিয়া বিবি (৪৫), আনারুল মহালদার (৩০) ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাঞ্চনতলার কামাথ এলাকার বাসিন্দা। অন্য জন রতনপুরের মেরি খাতুন (৪০)। তবে সমশেরগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক গোলাব হোসেন বলেন, ‘‘বাড়ির লোকজন ও পুরকর্তারা ডেঙ্গির কথা বললেও প্রতিটি মৃত্যুর কারণ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।’’

ধুলিয়ানের পুরপ্রধান, তৃণমূলের সুবল সাহা বলেন, “রবিবারও প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছে। জমা জলে ডুবে রয়েছে শহরের বহু এলাকা। আমার ওয়ার্ডে গুড়িপাড়া পুরোপুরি জলের তলায়। ফলে জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। পুরসভা কেরোসিন কিনে এনে ছড়াচ্ছে। তা-ও মিলছে না।”

ঘটনা হল, রবি ও সোমবার এক জনও স্বাস্থ্যকর্মীর দেখা মেলেনি গোটা শহরে। উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি খোলা নেই। পুরসভা ও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোথাও খোলা হয়নি জরুরি পরিষেবা বিভাগ। পুরপ্রধানের ওয়ার্ডে কোমর জলে দাঁড়িয়ে রাজু মণ্ডল, শেফালি দাসেরা অভিযোগ করেন, “জলে না পড়েছে কেরোসিন, না এসেছে স্বাস্থ্যকর্মী।”

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, সব গ্রামেই জ্বরের প্রকোপ রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ৭৭ জনের ডেঙ্গি নিশ্চিত করেছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় ঘুরে সন্দেহজনক মনে হলে রক্তপরীক্ষা করানোর জন্য ‘স্লিপ’ দিচ্ছেন, যাতে তাঁরা ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে রক্তপরীক্ষা করান। পুরপ্রধানের অভিযোগ, “রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডেঙ্গির রক্তপরীক্ষা করা হবে বিনা পয়সায়। অথচ অনুপনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো রোগীদের থেকে ৪৯০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। স্লিপ দেখানো সত্ত্বেও। শনিবারই স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি।”

টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই পরীক্ষাগার চলছে পিপিপি মডেলে, পুরোপুরি সরকারি নয়। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরেই ওই সংস্থাকে বলে দেওয়া হয়েছে, ডেঙ্গির রক্তপরীক্ষার জন্য যাতে কোনও পয়সা নেওয়া না হয়।” ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এ কথা দাবি করলেও এ দিন অনুপনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, যথারীতি ডেঙ্গির রক্তপরীক্ষার জন্য রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। বেলা ১টা নাগাদ চসকাপুর থেকে জিয়াউল হক জ্বর নিয়ে ভর্তি স্ত্রী জোৎস্না খাতুনের রক্তপরীক্ষা করাতে আসেন। তাঁর কাছে ছিল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসকের দেওয়া স্লিপ। তাঁর আক্ষেপ, “সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি থাকা সত্ত্বেও এবং ডাক্তারের দেওয়া স্লিপ দেখিয়েও ৪৯০ টাকা দিতে হল। অথচ সরকার বলছে, রক্তপরীক্ষা হবে বিনামূল্যে।” একই অভিযোগ চসকাপুরের সাজিম শেখেরও। তাঁর ছ’বছরের ছেলে শিস মহম্মদ চার দিন ধরে জ্বরে ভুগছে। তাঁর অভিযোগ, “রবিবার ছেলের রক্তপরীক্ষার জন্য আমার কাছ থেকে ৬০০ টাকা নেওয়া হয়েছে।” ওই পরীক্ষাগারে কর্মরত নাসিরুদ্দিন শেখের দাবি, “টাকা না নেওয়ার কোনও নির্দেশ বিএমওএইচ এখনও দেননি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Waterlogged Mosquito Dengue ধুলিয়ান
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy