প্রতীকী ছবি
গাঙ্গেয় অববাহিকায় বৃষ্টি না হওয়ায় মুর্শিদাবাদের নদীগুলিতে জলস্তর কমছে। একই সঙ্গে জেলার প্লাবিত এলাকা থেকেও জল নামতে শুরু করেছে। ফলে পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিকের পথে এগোচ্ছে। এমনই দাবি জেলা প্রশাসনের।
তবে, জল কমলেও গঙ্গা ও ব্রাহ্মণী নদীর জল বৃহস্পতিবারও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। বিপদসীমার কাছাকাছি থাকা ভাগীরথীরও কিছুটা হলেও জল কমেছে। জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, মুর্শিদাবাদের নদীগুলির জল দ্রুত নামছে। ফলে ভয় অনেকটাই কেটেছে। বিপদসীমার কাছে থাকলেও দ্বারকার জল তেমন ভয়ঙ্কর নয় বলেই সেচ দফতরের দাবি।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিমতিতায় বিপদসীমার উপরে দিয়ে বয়ে চলা গঙ্গার জলস্তর কিছুটা কমেছে। বুধবার সেখানে গঙ্গার জলস্তর ২২.৩৭ মিটার। বৃহস্পতিবার তা কমে দাঁডিয়েছে ২২.৩৬ মিটার। ব্রাহ্মণী নদীর জলস্তর ছিল ২১.০৫ মিটার। বৃহস্পতিবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০.৭৯ মিটার। ভাগীরথীতে ১৬.৫৫ থেকে কমে ১৬.৫২ মিটার হয়েছে। তবে, দ্বারকার জলস্তর ১৬.৭৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭.৩০ মিটার।
অন্য দিকে বন্যার জল নামার সঙ্গে সঙ্গে ডায়েরিয়া-সহ নানা রোগ দেখা দিতে পারে। তাই মুর্শিদাবাদে বন্যা কবলিত এলাকা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও স্বাস্থ্য দফতরকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্য দফতর ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা।
তিনি বলেন ‘‘বন্যার জল নামতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে কাজ করছেন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে ওই সব এলাকার টিউবওয়েল শোধন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহুর্তে জেলা জুড়ে প্রায় ৪০টি ত্রাণ শিবির চলছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, ওই ত্রাণ শিবিরে চিকিৎসা-সহ স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা নিয়মিত যাচ্ছেন। এ ছাড়া আশাকর্মী থেকে স্বাস্থ্য কর্মীরা হ্যালোজেন ট্যাবলেট, ওআরএস এলাকায় বিলি করছেন। জ্বর-সর্দির ওষুধের প্রয়োজন হলে তাও দেওয়া হচ্ছে। শোধন না হওয়া পর্যন্ত বন্যার জলে ডুবে যাওয়া টিউবওয়েলের জল পান করতে নিষেধ করা হচ্ছে।
প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করলেও কিছু কিছু এলাকায় ক্ষোভও রয়েছে। জলঙ্গির চর পরাশপুরের বাসিন্দা জাবদুল মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের এলাকা জলের তলায়। প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্যদফতরের কারও দেখা নেই। অসহায় ভাবে আমাদের দিন কাটছে।’’ যদিও স্থানীয় ঘোষপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বেবি নাজনিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তো করা হয়েছে। নালিশ করলেই হবে!’’
মুর্শিদাবাদের স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলছেন, ‘‘বন্যা কবলিতে এলাকায় আমাদের কর্মীরা ঘুরে ঘুরে খোঁজ খবর করছেন। ওআরএস, হ্যালোজেন ট্যাবলেট-সহ নানা ওষুধ বিলি করা হচ্ছে। এই সময় বাসিন্দাদের কী করণীয় সে বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, যে সব টিউবওয়েল বন্যার জলের তলায় গিয়েছিল শোধন না করা পর্যন্ত ওই টিউবওয়েলের জল পান করতে নিষেধ করা হচ্ছে। উঁচু জায়গায়, যেখানে টিউবওয়েল জলের তলায় যায়নি সেখান থেকে জল এনে পান করতে বলা হচ্ছে। এক গ্লাস জলে একটি হ্যালোজেন দেওয়ার আধ ঘণ্টা পরে সেই জল পান করার কথা বলা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy