শুক্রবার ট্রেন চলবে ভাবতেই পারিনি। ট্রেনই তো আমাদের ভাত-রুটি! প্রতি দিন সাত সকালেই জঙ্গিপুর থেকে যাই আজিমগঞ্জ চানাচুর আনতে। দিনভর ট্রেনের এই পথেই সেই চানাচুর বিক্রি করে সন্ধেবেলায় ফেরা।
বাড়ি ফেরার সময় পরিবারের জন্য চাল-ডাল নিয়ে ফিরি। কিন্তু স্টেশনে স্টেশনে এই তান্ডব রেলের চেয়েও বেশি ক্ষতি করেছে আমার মতো গরিব মানুষদের, ট্রেনই যাদের রুজির একমাত্র পথ।
আমার উপর নির্ভর করে আছে পরিবারের পাঁচ-পাঁচটা মানুষ। গত বৃহস্পতিবার থেকে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের শুরু। সে দিনও ভাবিনি ট্রেনের উপর এমন হামলা হতে পারে। শুক্রবার বিকেলে শুরু হল হামলা জঙ্গিপুর স্টেশনে। জ্বলল একে একে আশপাশের সব স্টেশন। সেই থেকে ট্রেন নেই। ব্যবসা বন্ধ। রোজ আসি, আর ঘুরে যাই। তাই অপেক্ষায় ছিলাম কবে ট্রেন চলবে। আজ সকালেই শুনি ট্রেন চলবে। তাই এসেছি। যাত্রী কম, তাতে ক্ষতি নেই। ধীরে ধীরে লোক বাড়বে। ট্রেন চলতে শুরু করলেই যাত্রী বাড়বে। আমার মতো অসংখ্য মানুষ বাঁচবে। এ ভাবে ট্রেন পুড়িয়ে কার কী লাভ হল, জানি না, তবে আমাদের ক্ষতি হয়ে গেল চরম। রাজনীতি বুঝি না। দিন রাত লড়াই করি পেটের জন্য। শুধু আমি নই, ওই অন্ধ ভিখিরিটা বসে আছে ওর ক্ষতিটা কেউ আন্দাজ করতে পারেন? ও জানে ট্রেন চলছে না, স্টেশনে একটিও লোক নেই। তবুও সে বসে থাকে যদি ট্রেনটা চালু হয়। দুটো যাত্রী এলে সে দুটো টাকা ভিক্ষে পাবে। ওর কোনও দোষ নেই, আমারও কোনও দোষ নেই, অথচ এই তাণ্ডবের চরম শাস্তি ভোগ করলাম আমরাই।
হকার, বালিঘাটা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy