নৈশালোকে ভলিবল। নিজস্ব চিত্র
ঘড়িতে তখন কাঁটায় কাঁটায় সন্ধে সাতটা। নবগ্রাম থানার কিরীটেশ্বরী মন্দির লাগোয়া মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ। দর্শকরা আনচান করছেন কখন খেলা শুরু হয়। করোনা আবহ, দূরত্ববিধি—এসব তখন কারও মাথায় নেই। অতিথির আসনে সেই সময় বসে রয়েছেন নবগ্রাম ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি কামাল হোসেন। দর্শকদের মধ্যে অনেককে চোখে পড়ল যাঁরা মাস্ক ছাড়াই চলে এসেছেন নৈশালোকে ভলিবল খেলা দেখতে। যা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, করোনা আবহে যখন জমায়েত নিষিদ্ধ তখন এমন টুর্নামেন্ট আয়োজন করল কারা! প্রশাসনই বা কোনও পদক্ষেপ করল না কেন?
স্থানীয় সূত্রে খবর, নবগ্রাম কিরীটেশ্বরী তরুণ সমিতি নামে একটি ক্লাবের উদ্যোগে রবিবার সারারাতের ভলিবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। খেলা চলে সোমবার ভোর পর্যন্ত। জেলার মোট আটটি দল অংশ নেয়। কিন্তু করোনা আবহে একসঙ্গে অনেক মানুষের জমায়েত যখন নিষিদ্ধ তখন খোলা মাঠে এভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হল। অভিযোগ, সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে সেই খেলা হল। শাসকদলের একজন নেতা উপস্থিত থেকে আয়োজকদের উৎসাহ দিলেন কী করে, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। আয়োজকদের তরফে ওই ক্লাবের সম্পাদক সৌমিত্র দাসের দাবি, ‘‘আমাদের তৃণমূলের যুব সভাপতি বলেছিলেন, সমস্ত সাবধানতা অবলম্বন করে যেন টুর্নামেন্ট হয়। আমরা সমস্ত সতর্কতা মেনেই খেলা পরিচালনা করেছি। কোনও ভিড় হয়নি।’’ ঘটনাচক্রে, সৌমিত্র-ও এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। যদিও দর্শকদের একাংশের দাবি, দূরত্ববিধি শিকেয় তুলেই সারারাত ধরে ওই টুর্নামেন্ট হয়েছে। এ বিষয়ে কামালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। আয়োজকরা আমায় হাত ধরে ওখানে নিয়ে যায়। তবে সব নিয়িম মেনেই খেলা হয়েছে।’’
শাসকদলের নেতার উপস্থিতিতে এমন খেলার আয়োজন নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। নবগ্রাম পূর্ব ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ যাদবের কটাক্ষ, ‘‘শাসকদলের লোকজনই আয়োজক। তাই তাদের ক্ষেত্রে নিয়মের কোনও বালাই নেই। গায়ে তৃণমূলের ছাপ থাকলে আর কোনও চিন্তা নেই। নিয়ম-কানুন সব চুলোয় যাক।’’এ নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিশ্বজিৎ ভাদুড়ি বলেন, ‘‘যেহেতু ওই ক্লাব জেলা ক্রীড়া সংস্থার অনুমোদনপ্রাপ্ত নয়, তাই আমরা কোনও পদক্ষেপ করতে পারছি না। কিন্তু প্রশাসনের উচিত ক্লাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’’ নবগ্রামের বিডিও অমূল্যচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। এমন হয়ে থাকলে ওই ক্লাব কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy