গ্রামে জল ঢুকছে। গোবরা পঞ্চায়েতের নয়াচর গ্রামে। ছবি: সন্দীপ পাল
বুধবার সকালে বিপদসীমা ছাড়িয়ে গেল ভাগীরথী। সন্ধ্যায় দেখা যায় চূড়ান্ত বিপদ সীমার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে ভাগীরথী। ফুঁসছে জেলার অন্যান্য নদীও। বেশিরভাগ নীচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সার্বিকভাবে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে সেচ দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন।
বুধবার সকালে ভাগীরথী এবং জলঙ্গি নদী ৮.৪৪ মিটারের বিপদসীমা ছাপিয়ে গিয়ে ৮.৫৪ মিটারে পৌঁছে যায়। সন্ধ্যা নাগাদ ভাগীরথী এবং জলঙ্গির জলস্তর দিয়ে দাঁড়ায় ৮.৭৭ মিটারে। ভাগীরথী এবং জলঙ্গি এই দুই নদী ৯.০৫ মিটারের কাছে পৌছে গিয়েছে। অন্যদিকে এ দিন সকালে চূর্ণীর জলস্তর ছিল ৫.৬১ মিটার এবং মাথাভাঙ্গার ৬.৪৬ মিটার। যা বিপদ সীমার থেকে অনেকটাই নীচে। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টি থেমে গেলেও অন্যান্য জায়গার বিভিন্ন নদীতে যে জলস্ফীতি হয়েছিল তা ভাগীরথী হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদিয়া হয়ে সেই প্রবাহ নীচের দিকে নামছে। ফলে এই সময়ে ভাগীরথীর জলস্তর বেড়েছে। আশপাশের জেলার নদীগুলির জলস্তরের উপর নদিয়ার নদীগুলির জলস্তর ওঠানামা অনেকটাই নির্ভর করে। মুর্শিদাবাদের পাগলা, বাঁশনোই, কালজানি, মাধবজানি ও গুমানি এই পাঁচটি নদীর জল ভাগীরথীতে এসে পড়ে। ফলে সেগুলিতে জলস্ফীতি হলে তার প্রভাবে ভাগীরথীর জলস্তর ওঠানামা করে।
নদী বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বীরভূমের ব্রাহ্মণী, ময়ূরাক্ষীর মতো একাধিক নদীর জলস্তর বাড়ার প্রভাব পড়বে নদিয়াতেও। পূর্ব বর্ধমানের অজয় নদের জলস্তরের উপরেও নজর রাখা হচ্ছে। এই সমস্ত নদীর জল যখন নীচের দিকে নামে তা নদিয়ার নদীগুলির উপরে প্রভাব ফেলে। কাটোয়ার কাছে অজয় নদ ভাগীরথীতে পড়ছে। সেই জল নদিয়া দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। আবার পদ্মা এবং ভৈরবের জল এসে মিশছে জলঙ্গিতে। ফলে বৃষ্টি থামলেও পাশ্ববর্তী জেলাগুলির বিভিন্ন নদীর জলস্তরের উপর নজর রাখা হচ্ছে। ভাগীরথীর জলস্তর বৃদ্ধির কারণে বুধবার রাত দশটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত শান্তিপুর-গুপ্তিপাড়া ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
অতিবৃষ্টির কারণে কালীগঞ্জে ভাগীরথীর জল বাড়তে শুরু করেছে। জলের পরিমাণ আর সামান্য বাড়লেই তা বিপদসীমা ছাড়াবে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ব্লকের নদী তীরবর্তী বেশ কিছু জনপদে জল ঢুকতে শুরু করেছে। বানভাসি হওয়ার আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে স্থানীয়দের। শুধুমাত্র অতিবৃষ্টি নয়, বিভিন্ন ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার ফলে কালীগঞ্জে ভাগীরথীর জলস্তর বেড়েছে। জলস্তর বাড়ায় আতঙ্কে নদী সংলগ্ন এলাকার কয়েক হাজার পরিবার। জলস্তর আরও বাড়লে তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবরা পঞ্চায়েতের নয়াচর গ্রামে জল ঢুকেছে। গ্রামের বেশ কয়েকটি রাস্তা জলের তলায়। মাটিয়ারি, বল্লভপাড়া ও তেজনগর ঘাটে জল অনেকটাই উপরে উঠে এসেছে। এমনকী চর কুঠুরিয়াতেও রাস্তায় জল উঠেছে। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে প্রশাসনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy