—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আবার হাট বসেছে। তবে বিখ্যাত ছড়ার মতো শুক্রবারেও নয়, বকশীগঞ্জেও নয়, শনিবারে হাট বসেছিল পদ্মা পাড়ের গ্রাম চর পরাশপুরে। আর এই চরের গ্রাম তৈরি হওয়ার পরে প্রথম হাটের বেচাকেনায় বেজায় খুশি গ্রামের মানুষ থেকে ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সন্ধ্যা নামার অনেক আগেই হাটে ওঠা আনাজ থেকে অন্য সামগ্রী বিকিয়ে যায়। আদতে এতদিন এই আনাজ থেকে নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী আনতে গেল আমাদের কয়েক কিমি দুর্গম পথ মাড়িয়ে যেতে হত রায়পাড়া হাট অথবা জলঙ্গি বাজারে।
তা ছাড়া তা নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফকে হাজারও কৈফিয়ত দিতে হতো। আর এখন ব্যবসায়ীরা পৌঁছে যাচ্ছে একেবারে চরের গ্রামে। ফলে মানুষ হাতের কাছে সে সব পেয়ে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে উজাড় করে দিয়েছে।
একটা সময় জলঙ্গির চরের গ্রাম পরাশপুর ও উদয়নগর খণ্ড ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে থাকলেও সেখানে যাতায়াত করতে গেলে রীতিমতো বিএসএফের জওয়ানদের কাছে সচিত্র পরিচয়পত্র দেখিয়ে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই যাতায়াত করতে হত।
এমনকি বাইরের গ্রাম থেকে আত্মীয়-স্বজন গেলেও পরিচয়পত্র দেখিয়ে আত্মীয়দের সনাক্ত করেই যাওয়া যেত সেই গ্রামে। ভারতীয় মূল ভূখণ্ড থেকে যে কোনও সামগ্রী সেই চরের গ্রামে নিয়ে যেতে গেলে চলত তল্লাশি। এমন কি বেশ কিছু সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ ছিল বিএসএফের। বিএসএফ জওয়ানদের দাবি, নিজেদের ব্যবহারের নাম করে অনেক সময় বেশ কিছু সামগ্রী নিয়ে গিয়ে চরের গ্রামের বাসিন্দারা পাচার করত বাংলাদেশে। যদিও চরের গ্রামের বাসিন্দাদের আগাগোড়াই দাবি ছিল বিএসএফ একেবারে সীমান্তের শূন্য লাইন বরাবর প্রহরা করলেই এই অভিযোগ আর তোলার প্রয়োজন হবে না। তাঁরাও নিশ্চিন্তে ভারতীয় মূল ভূখণ্ডে যাতায়াত করতে পারবেন। বিএসএফ নিশ্চিন্তে টহলদারি করতে পারবে সীমান্তে। তা ছাড়া নিজ দেশে নিরাপত্তার বিষয়টিও আরও বেশি জোরদার হবে সীমান্তে টহলদারির কারনে।
সপ্তাহখানেক থেকে বিএসএফ সরে গিয়েছে একেবারে সীমান্তের শূন্য লাইনে। ফলে এখন চরের গ্রামে যাতায়াত বা গ্রামবাসীদের মূল ভূখণ্ডে আসতে গেলে কোনও বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না। অনেক ফেরিওয়ালাও এখন অনায়াসে পৌঁছে যাচ্ছেন চরের গ্রামে। আর শনিবার থেকে সেই গ্রামে ফ্লাড সেন্টারের সংলগ্ন এলাকায় বসেছে হাট।
গ্রামের বাসিন্দা ঘোষ পাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য জাব্দুল মণ্ডল বলছেন, ‘‘অনেক এলাকায় এখন হাটের গুরুত্ব কমে গিয়েছে। কিন্তু চরে এই প্রথম হাট বসার আনন্দটা যে কিরকম ছিল সেটা যে ব্যবসায়ীরা এসেছিল তারাই ভাল বলতে পারবে। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে ব্যবসায়ীদের পণ্য বিক্রি হয়ে গিয়েছে।’’
ঘোষপাড়া থেকে যাওয়া আনাজ ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলছেন, "কখনও চরের গ্রামে আনাজ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। কারণ বিএসএফ এতদিন সেখানে যেতে দিত না। শনিবার প্রথম সেখানে গিয়ে দেখলাম মানুষের আবেগ। আমাদেরও ভাল বেচাকেনা হয়েছে প্রথম দিনে।’’
সব মিলিয়ে পরাশপুরের হাট জমে উঠেছিল শনিবার। সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শনিবার এই দু’দিন ওই হাট বসবে বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী সরে যাওয়ায় তাই নিরাপত্তা ও সুযোগসুবিধা দুই বেড়েছে বলে দাবি চরের গ্রামের বাসিন্দাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy