Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Indian Railways

চা, ঘুগনি বিক্রির ছাড়পত্র মেলেনি স্টেশনেও

রেজিনগর থেকে লালগোলা কম বেশি পাঁচশো হকারের রোজগার হতো কামরায় কামরায় খাবার থেকে খেলনা নানান সামগ্রী ফেরি করে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০২:১৩
Share: Save:

দীর্ঘ সাত মাস পর লালগোলা শিয়ালদহ শাখায় গড়িয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন। অথচ সেই ট্রেনে গত দুদিনেও শোনা যায়নি হকারদের হাঁকডাক। ট্রেন যাতায়াতে স্বস্তি ফিরেছে স্টেশন লাগোয়া হরেক কিসিমের দোকানের বিক্রেতাদের। কিন্তু রেল সফরে হকারদের ছাড়পত্র মেলেনি। এমনকি স্টেশন চত্বরেও ওদের বসতে দেওয়ার মতো আশার কথা শোনাননি রেলকর্তারা। ফলে ট্রেন চললেও হাসি ফুটল না ওদের মুখে।

অথচ মাস দু’য়েক আগে রেলের করোনাকালে ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি শুরু হওয়ার পর আবার পুরোনো রোজগারের পথে ফেরার আশা করেছিলেন তন্ময়, সাধন, গণেশরা। চলতি বছরের ২৪ মার্চ থেকে করোনা ঠেকাতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় রেল যোগাযোগ। বন্ধ হয়ে যায় বহু হকারের একমাত্র রোজগারের পথ। কত মানুষ পেটের দায়ে বদলে ফেলেছিল পেশা। রোজগার হারিয়ে কত মানুষ চোখের জল ফেলেছে আড়ালে তার ইয়ত্তা নেই। বহরমপুর কৃষ্ণনগর শাখায় বাদাম বিক্রি করতেন গনেশ হালদার। এদিন তিনি বলেন, ‘‘রোজগার খুব বেশি হতো না। কিন্তু সেটা ধারাবাহিক রোজগার হতো।" চা বিক্রেতা তন্ময় সাহা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা তো করোনা বিধি মেনেই বিক্রি করতাম। সেই ছাড়পত্র দিক না কর্তারা!’’ লালগোলা শাখায় গরমে কুলফি আর শীতে কখনও ঘুগনি কখনও ফল বিক্রি করতেন জিয়াগঞ্জের দিনেশ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘সংসার টানতে গিয়ে লকডাউনে অনেক ধার দেনা হয়ে গিয়েছে। সেই দেনা শোধ করে সংসার টানতে রোজগার জরুরি। আমরা নিয়ম মেনেই চলবো তবু হকারি করার অনুমতি দিক সরকার।’’

হকারদের ট্রেনে ওঠার দাবি করছেন সাধারণ যাত্রীরাও। এন আর সি আতঙ্কে বেশ কিছু স্টেশনে আগুন লাগানোর ঘটনায় তখনও বন্ধ ছিল রেল যোগাযোগ। সেই সময় ও বেচাকেনা বন্ধ ছিল হকারদের। এক রেল যাত্রী শুকদেব সাউ বলেন, ‘‘ওরা যে শুধু হকারি করে জিনিসপত্র বিক্রি করে তা নয়। নিত্য দিন যাতায়াতে এদের অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও হয়ে যায়। যাত্রীদের অনেক উপকারেও লাগেন তাঁরা। এমনিতেও ভিড় হচ্ছে। করোনা সুরক্ষার নীতি মেনে ওদেরও উঠতে দিলে অসুবিধা কোথায়।’’

রেজিনগর থেকে লালগোলা কম বেশি পাঁচশো হকারের রোজগার হতো কামরায় কামরায় খাবার থেকে খেলনা নানান সামগ্রী ফেরি করে। তাদের আবার রোজগারের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস পরিচালিত হকার সংগঠনের চেয়ারম্যান ভাস্কর বাজপেয়ী। তিনি বলেন, ‘‘সবার জন্য ট্রেন পরিষেবা চালু হল অথচ বাদ পড়লো ওই খেটে খাওয়া মানুষ গুলোই। সরকারের উচিত অবিলম্বে হকারদের ট্রেনে ওঠার অনুমতি দেওয়া। নীতি মেনেই তাঁরা উঠবেন। না হলে বহু মানুষ না খেতে পেয়ে মরে যাবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy