—ফাইল চিত্র।
শেষ পর্যন্ত হাতে রইল সেই হতাশাই!
শনিবারের বাজেটে বিড়ির উপর ২৮ শতাংশ জিএসটি বহাল রাখায় কার্যত অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ল বিড়ি শিল্প। সঙ্কটে পড়ল জঙ্গিপুরের ৭ লক্ষ বিড়ি শ্রমিকের রুজি।
আশা ছিল, বিড়ি যেহেতু কুটির শিল্প, সে কথা মাথায় রেখে অন্তত বিড়ির উপর থেকে এ বারে কিছুটা কমানো হবে জিএসটি’র হার। কিন্তু শনিবারের কেন্দ্রীয় বাজেট সঙ্কট থেকে বিড়ি শিল্পকে কোনও আশার আলো দেখাতে পারেনি।
এমনিতেই জঙ্গিপুর মহকুমায় বিড়ি শিল্পে জড়িয়ে রয়েছেন প্রায় ৭ লক্ষ শ্রমিক। দাবি, তাঁদের এখনও ন্যুনতম সরকারি মজুরি জোটে না। ২৫৪টাকা ৯২ পয়সার জায়গায় তাঁরা হাতে পান প্রতি হাজারে সাকুল্যে ১৫২ টাকা। ২৮ শতাংশ জিএসটি’র দাপটে বিড়ি বিক্রি কমেছে ৩৬ শতাংশেরও বেশি। ফলে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিনের বেশি কাজও জোটে না তাঁদের। শ্রমিক ও মালিক সংগঠনের আশা ছিল জিএসটি কমলে স্থিতাবস্থা ফিরবে বিড়ি শিল্পে। কিন্তু বাজেট সে আশায় ছাই দিয়েছে। তামাক আইন চালুর উপরে জোর দেওয়ায় বিড়ি শ্রমিকদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ারও আশা ছিল তাঁদের, কিন্তু বাজেট বক্তৃতায় সে সবের কোনও উল্লেখই করেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
ধুলিয়ানের তারাপুর কেন্দ্রীয় বিড়ি শ্রমিক হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নত করতে উদ্যোগ নেবে দিশা শোনাবে বাজেট— এমনও আসা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু কানাকড়িও বরাদ্দ বাড়েনি বিড়ি শ্রমিকদের চিকিৎসা খাতে। জঙ্গিপুরের বিড়ি শিল্প মহল্লায় প্রায় ৪০টিরও বেশি ছোট বড় কারখানা রয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থায় দৈনিক বিড়ি উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি। ভিন রাজ্যের বাজারের উপরই নির্ভরশীল জঙ্গিপুরের এই বিড়ি। টোব্যাকো আইনের বিধিনিষেধ ও জিএসটি’র কারণে দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে বিড়ি বিক্রি যে ভাবে কমছে তাতে ভবিষ্যতে বিড়ি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা যে আর সম্ভব নয়, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিড়ি মালিক সংগঠনের কর্তারা। বিড়ি মালিক সংগঠনের সম্পাদক রাজকুমার জৈন শনিবার বাজেট শেষে জানান, টোব্যাকো আইনের বিধি নিষেধের চাপ নিয়ে তাঁদের বলার কিছু নেই। সেই নিষেধ মেনেও চলছিল কারখানাগুলো। বিড়ি শ্রমিকেরাও কাজ পাচ্ছিলেন। কিন্তু এখন মালিকেরা শিল্প মন্দা হলে অন্য ব্যবসায় চলে যেতে পারেন। অনেকেই সেই পথে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু জঙ্গিপুর মহকুমা থেকে ৭ লক্ষ শ্রমিক কাজ হারালে কি ভয়াবহ অবস্থা হবে ভাবতে পারছেন!’’
রাজ্যের শ্রমপ্রতি মন্ত্রী জাকির হোসেন নিজে বিড়ি মালিক। ইতিমধ্যেই বিড়ির বিকল্প নানা ব্যবসায় পা রেখেছেন তিনি। বলছেন, “ধুমপানের উপর বিধিনিষেধ বাড়ছে। দক্ষিণী রাজ্যের বিড়ির দাম কম। ২৮ শতাংশ জিএসটি দিয়ে বাংলার বিড়ি তাদের সঙ্গে বাজারে এঁটে উঠতে পারছে না। তাই বাজারে বিড়ির বিক্রি প্রায় ৩৬ শতাংশ কমেছে। কাজ কমেছে শ্রমিকদের। জঙ্গিপুরের ঘরে ঘরে বিড়ি শ্রমিক। একটা শিল্প বন্ধ হয়ে গেলে তার বিকল্প রুজির ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ভূমিকা নজরে পড়ছে না।”
ধুলিয়ানের এক বিড়ি কারখানার মালিক সাগর শেখ বলছেন, “সব বিধি নিষেধই তো মেনে নিয়েছেন বিড়ি মালিকেরা। কিন্তু চড়া হারে জিএসটি বসানোয় বাজারে বাংলার বিড়ি পাল্লা দিতে না পেরে মার খাচ্ছে। তাই আশা ছিল যদি জিএস টি ২৮ শতাংশ থেকে কিছুটা কমে, কিন্তু তা আর হল কই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy