মতিরুল বিশ্বাস। — নিজস্ব চিত্র।
ইটভাটা নিয়ে সংঘাতের কারণেই কি খুন হতে হল নদিয়ার তৃণমূল নেতা মতিরুল বিশ্বাসকে? পুলিশ এক প্রকার নিশ্চিত এই খুনের মূলচক্রী খালেক কবিরাজ ওরফে রাজকুমার। পুলিশের অনুমান, এই রাজকুমারের সঙ্গেই নদিয়ার আজলামপুরের ইটভাটা নিয়ে মতিরুলের সংঘাত উঠেছিল চরমে। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে মাস খানেক আগেই মতিরুলকে শেষ করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল রাজকুমার। তখন স্থানীয় দুই দুষ্কৃতীর মাধ্যমে ঝাড়খণ্ড এবং বাংলাদেশের দুই ভাড়াটে খুনির সঙ্গে যোগাযোগও করেছিল সে। কিন্তু সে বার বানচাল হয়ে যায় মতিরুলকে খুনের ছক। বৃহস্পতিবার খুনের আগে দুপুর থেকে বেশ কয়েক বার এলাকা ঘুরে দেখে রাজকুমার এবং তিন আততায়ী। রাজকুমারের মোবাইলের কল লিস্ট এবং তাকে ফোন করা একাধিক ব্যক্তির টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে এমনটাই অনুমান করছে পুলিশ। ইতিমধ্যে ওই এলাকার ৪টি সিসিটিভির ফুটেজও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ওই কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত শেরিফুল শেখ ওরফে কিতাব নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিতাবকে ৭ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
মতিরুল খুনের পর প্রথমে আটক এবং পরে গ্রেফতার করা হয় কিতাব এবং সাহেবকে। শুক্রবার টানা জেরার পর এবং তাদের মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখে একাধিক সন্দেহভাজনের তালিকা তৈরি করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইলের কল লিস্ট দেখে জানা গিয়েছে, গত ১৫ দিনে ধৃতদের সঙ্গে রাজকুমারের একশো বারের বেশি দীর্ঘ সময় ধরে কথোপকথন হয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, খুনের দিন দুপুর ১২টার পর থেকে বিকেল ৫টা ৪০ পর্যন্ত কিতাব, সাহেব এবং রাজকুমারের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখাচ্ছে টিয়াকাটা বাজার থেকে যেখানে খুন হয়েছে সেই এলাকা পর্যন্ত। সেই রাজকুমারকে খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশের অনুমান, বৃহস্পতিবার রাজকুমারের নেতৃত্বে নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে মোট ৭ জন ভাড়াটে খুনি নওদায় জড়ো হয়। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ঘটনার মাস খানেক আগে মতিরুলকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল রাজকুমার। সে বার সে ‘নিজের লোক’ হিসাবে বেছে নিয়েছিল মতিরুলেরই বিশ্বস্ত সঙ্গী কিতাবকে। কিন্তু সে বারের মতো মতিরুলকে খুনের ছক বানচাল হয়ে যায়। রাজকুমার তখন স্থানীয় ২ দুষ্কৃতীর মাধ্যমে ঝাড়খণ্ড এবং বাংলাদেশের ২ ভাড়াটে খুনির সঙ্গে যোগাযোগ করে। কত টাকার বিনিময়ে মতিরুলকে খুনের সুপারি দেওয়া হয়েছিল তা জানতে ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ইটভাটা নিয়ে ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই এই খুন হয়েছে। যদিও এ নিয়ে পুলিশ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। ধৃতদের কাছ থেকে কয়েকটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘এক জনকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy