ফাইল চিত্র
একটা গুলি যেন এখনও শব্দময়!
বিজিবি-বিএসএফ বিবাদের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পদ্মায় মাছ ধরা। সপ্তাহভর বন্ধ থাকার পরে তা চালু হলেও নদীভাসি ধীবরেরা যেন গুলির শব্দ কানে নিয়েই মাছ ধরতে নেমেছেন। ইলিশ ধরার ভরা মরসুমের চেনা আবহটাই বদলে গিয়েছে।
শুধু পদ্মা নয়, মূল পদ্মার শাখা নদীতে দাপিয়ে ঘুরে বেড়ানো নৌকা গুলিতেও এখন পতপত করে উড়ছে ভারতীয় পতাকা, সেই নৌকা জলে ভাসাতে গেলেও লাগছে অনুমতি। যাবতীয় কাগজপত্র, ধীবরদের সচিত্র পরিচয়পত্র দেখে তবেই নদীতে নামতে পারছেন তাঁরা।
শুধু তাই নয়, নদীতে নাও ভাসানোর আগে, ফুট চারেকের টিনের ডোঙাতেও তল্লাশি চলছে তুমুল। সীমান্তের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, একটা ঘটনা যেন আমূল বদলে দিয়েছে সীমান্তে চেহারা। পদ্মায় গুলি কাণ্ড এবং সেই গুলিতে এক বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যুর পরে এখন প্রতিটি পদক্ষেপ সতর্ক ভাবে ফেলছে বিএসএফ।
পদ্মার ধারে কাছে ভিড়তে গেলে এখন হাজারও কৈফিয়তের সামনে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। রবিবার, কাকমারি সীমান্তের পদ্মা পাড়ে দাঁড়িয়ে বছর দশেকের বাচ্চু মণ্ডলের আক্ষেপ, ‘‘নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছে বাবা। পদ্মা পাড়ে গিয়ে বাবাকে খাবার দিয়ে আসব সেই উপায়ও নেই আমাদের। বাধ্য হয়েই খাবার ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’’
সাত দিন পরে নদীতে এখন অজস্র নৌকার ভিড়। আশপাশের শিরচর, কাকমারি— ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামগুলির বহু মৎস্যজীবী এখন দিনভর পদ্মায় ভেসে ইলিশ ধরছেন। বেলার দিকে এক বার ঘাটে নাও ভিড়িয়ে মাছ নামিয়ে ফের ভেসে পড়েন তাঁরা। এটাই রেওয়াজ। সেই সময়ে বাড়ি থেকে আনা খাবারের ডিব্বাটা সঙ্গে নিয়ে নেন। কিন্তু ঘাটে নাও ভেড়ালেও বিএসএফের অনুশাসনে খাবার নেওয়ার এখন আর উপায় নেই।
কেবল মাছ ধরার ক্ষেত্রে নয়, ১৭ অক্টোবর সকালে পদ্মায় গুলি কাণ্ডের পর থেকেই বদলে গেছে গোটা সীমান্তের চেহারা। টানা এক সপ্তাহ মৎস্যজীবীরা নামতে পারেনি পদ্মায় এমনকি সীমান্ত পেরিয়ে নো ম্যানস ল্যান্ডে নিজের জমিতে আবাদ করার প্রশ্নেও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
জলঙ্গির চাষি মইনুদ্দিন মণ্ডল বলছেন, ‘‘চরের মাঠে যাওয়া নিয়ে বিএসএফ বরাবরই সমস্যা করত। কিন্তু পাঁচটা প্রশ্নের পরে ছাড়ও মিলত। পদ্মায় গুলি কাণ্ডের পর থেকে সেই সমস্যাটা আরও প্রকট হয়েছে।’’ এখন ওই জমিতে চাষ করতে যাওয়াই প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড়।
এ ব্যাপারে বিএসএফের ছোট্ট জবাব— উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ, কিচ্ছু করার নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy