Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

অস্বস্তি নিয়ে গড়াল চাকা

সাকুল্যে জনা ৪০ যাত্রী নিয়ে দু’টি ট্রেনই নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পেরেছে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।

 সাকুল্যে এই ক’জন।  জঙ্গিপুরে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

সাকুল্যে এই ক’জন। জঙ্গিপুরে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩৬
Share: Save:

রেলের চাকা গড়াল পূর্ব রেলের নিউ ফরাক্কা-আজিমগঞ্জ শাখায়।

নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জেরে ওই রেলপথে ১৫টি স্টেশনের ১০টিতেই ব্যাপক ভাঙচুর হয়। চারটি স্টেশনে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। দু’দিন ধরে রেলপথ পরিদর্শনের পর, শুক্রবার ওই ৫৩০২৮ ডাউন মালদহ-আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার ও ৫৩০৩০ ডাউন ভাগলপুর-আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার ট্রেন দু’টি চালানো হয়। তবে কোনও ট্রেনেই যাত্রী ছিল না বললেই চলে।

সাকুল্যে জনা ৪০ যাত্রী নিয়ে দু’টি ট্রেনই নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পেরেছে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। রেলযাত্রীদের যাতে কোনওরকম হামলার মুখে পড়তে না হয় সে জন্য প্রতিটি স্টেশনেই রেল নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরা টহল দিয়েছে। মালদহের ডিআরএম জিতেন্দ্র প্রসাদ বলেন, ‘‘যেখানে সিগন্যালিং সিস্টেম ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেখানে ম্যানুয়াল সিগন্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই লাইনে শুক্রবার একটি দু’কামরার বিশেষ ট্রায়াল ট্রেন চালানো হয় সকালে। তার পরেই মালদা ও পরে ভাগলপুর থেকে আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার ট্রেন দুটি চালানো শুরু হয়।’’

এ দিন ফরাক্কা-আজিমগঞ্জ শাখায় ট্রেন চলাচল শুরু হতেই রীতিমতো খুশির হাওয়া। প্রাণতোষ সরকার মালদহ থেকেই চড়েছেন ট্রেনে। যাবেন কাটোয়া। আপাতত আজিমগঞ্জ পর্যন্ত গিয়ে সেখানেই অন্য ট্রেন ধরবেন। বলছেন, ‘‘ভাবতেই পারিনি এত ক্ষয়ক্ষতির পর এত তাড়াতাড়ি আবার ট্রেন চলবে। ফিরতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’ মালদহ থেকে এদিন জঙ্গিপুরে আসেন সবুজ সরকার ও সঙ্গে স্ত্রী লক্ষ্মী সরকার। বলছেন, ‘‘জঙ্গিপুর হাসপাতালে এক আত্মীয়কে দেখার জন্য এসেছি। ট্রেন এসেছে ভাল ভাবেই। তবে গতি খুব কম থাকায় সময় লেগেছে। তবে ট্রেন যে এত তাড়াতাড়ি চলেছে এটাই খুশির খবর।’’ জঙ্গিপুরের স্টেশন ম্যানেজার বাবলু আচার্য বলেন, ‘‘প্রত্যেকটি স্টেশনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। স্টেশনের ঘড়িগুলিও আস্ত নেই একটিও। জঙ্গিপুরে সিগন্যালিং ব্যবস্থা ঠিক রয়েছে। কিন্তু মণিগ্রাম, নিমতিতা, সুজনিপাড়া, ধুলিয়ানে একটাও স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা ভাল নেই। রেলকর্মীরা পড়ে রয়েছেন বিভিন্ন স্টেশনে। জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলছে সর্বত্র।’’

গুজিরপুরের সৃঞ্জয় হালদার জঙ্গিপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ধরলেন আজিমগঞ্জে যাওয়ার জন্য। বলছেন, ‘‘ট্রেন পথ ছাড়া আজিমগঞ্জ যাওয়ার কোনও পথ নেই। চার দিন ধরে রোজ স্টেশন থেকে ঘুরে যাচ্ছি।’’

তবে ফরাক্কা-আজিমগঞ্জ রেলপথে ট্রেন চললেও রেজিনগর-লালগোলা রেল পথে কবে ট্রেন চালানো যাবে তা শুক্রবারও অনিশ্চিত। এ দিন সকালে বেলডাঙা স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল প্ল্যাটফর্ম সাফাই করা হচ্ছে। তাণ্ডবের পর এটাই প্রথম ঝাঁট পড়ল ওই স্টেশনে। পুড়ে যাওয়া আসবাব সরানোর কাজ চলছে। এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘শনিবার ওই লাইনে দু’একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানোর চেষ্টা চলছে যাত্রীদের অসুবিধের কথা ভেবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE