উত্তরায়নের মেলায় সারসার ছানাবড়া। নবাবের জেলার বিখ্যাত ছানাবড়া নাকি বহরমপুরেই তৈরি হয়। সেটা দেখতে যেতে হবে বহরমপুরের চৌরিগাছা অঞ্চলে। ১ মাঘ সোমবার শুরু হয়েছে ভাগীরথীর তীরে কয়েকশো বছরের পুরনো উত্তরায়ন মেলা। চলবে পাঁচ দিন। সেখানে প্রতিটি ছানাবড়া ৫ টাকা থেকে ৩০০ টাকার দামের। সঙ্গে রয়েছে বেনারসী রাজভোজ, বাহারি জিলিপি, রকমারি গজা। সারসার খই, মুড়কির দোকানের সারি। লোকমুখে এই মেলা ‘মিষ্টির মেলা’ কেউ বলেন ‘খই মিষ্টির’ মেলা। সম্প্রদায় ভেদে মেলায় আসেন হাজারে হাজারে মানুষ।
সিরাজদৌল্লা তখন বাংলার নবাব। তাঁর নির্দেশে নাকি চৌরিগাছা গ্রামে রাস্তা তৈরি হয় গোবিন্দ গুপীনাথ মন্দিরের সামনে দিয়ে ভাগীরথী নদী পর্যন্ত। সেই রাস্তা আজও বর্তমান। এই মন্দির ও মেলা ঘিরে সব চেয়ে বড় জনশ্রুতি হল, চৈত্র গাজনের আগে এক সাধারণ ভক্ত মন্দিরের সামনে এসে দেখেন মন্দিরে পুরোহিত নেই, তাই বহিরাগতদের সেবা হচ্ছে না। সাধারণ পোশাকে থাকা ব্যক্তি এগিয়ে আসেন। শোনা যায় তার নিজের পায়ের মল ও হাতের বালা খুলে দেন মুদি দোকানে। তার বদলে নেন রান্নার প্রয়োজনীয় সামগ্রী। নিজ হাতে রান্না করে উপস্থিত ভক্তদের খাওয়ান। জনশ্রুতি, পরে দেখা যায় মন্দিরের কষ্টি পাথরের মূর্তিতে নেই ওই অলঙ্কার।
জানা যায় এই চৌরিগাছা গোবিন্দ গুপীনাথ মন্দির আজিমগঞ্জের বিনোদ আখড়ার শাখা। তাঁরাই এটা প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দির কমিটি এই মেলা পরিচালনা করেন। চৌরিগাছা গোবিন্দ গুপীনাথ মন্দির কমিটির সম্পাদক বাসুদেব হাজরা বলেন, “প্রায় পাঁচশো বছরের পুরনো বিগ্রহ –মন্দির ও তাকে ঘিরে মেলা। আমার বাবা, ঠাকুরদার মুখে যা শুনেছি তাতে তাই অনুমান। মন্দিরের বিষয় সম্পত্তি সব বর্ধমানের রাজার।”
তিনি বলেন, এখানে সোমবার ভাগীরথী নদী তীরে কান্দি মহকুমার লোক জন পরিবার পরিজন নিয়ে উত্তরায়ণের স্নান ও বনভোজন করেন। মন্দিরে পুজো দেন। মিষ্টি কিনে বাড়ি ফেরেন। স্থানীয় হালসানা পাড়া, বাসাবাড়ি, কাঁঠালিয়া সব জায়গা থেকে মানুষ আসেন।
এই মন্দির প্রাঙ্গণ জুড়ে মেলায় প্রায় ১০০ টির বেশি দোকান। তার মধ্যে মিষ্টির প্রাধান্য বেশি। যারা মিষ্টির দোকান দিয়েছেন তাদের মধ্যে হীরেন রুজ বলেন, “আমাদের দোকানে ছানাবড়া, রাজভোগ, জিলিপি সবই রয়েছে। দাম পাঁচ টাকা থেকে তিনশো টাকা। সবই প্রতি পিসের (ভাগ) দাম। তবে জিলিপি কিলো দরে।” ছানাবড়ার দোকান কৃষ্ণময় নন্দীর। তাঁর কথায়, “বিভিন্ন মাপের ছানাবড়া রয়েছে। নিজে হাতে তৈরি। ছানা ও ঘিয়ের মান ভাল রাখি। ফলে সুস্বাদু তা বলতে পারব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy