প্রতীকী ছবি।
দলের আগাম অনুমতি ছাড়া কোনও পঞ্চায়েত প্রধান বা উপপ্রধানের বিরুদ্ধে প্রস্তাব অনাস্থা আনা যাবে না বলে নির্দেশ জারি করল জেলা তৃণমূল। শুধু তা-ই নয়, বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর যে সব পঞ্চায়েতের প্রধান বা উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দলের পঞ্চায়েত সদস্যেরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন, সেগুলিও প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মহুয়া মৈত্রের স্বাক্ষরিত এই নির্দেশে জানানো হয়েছে, দলের রাজ্য নেতৃত্ব এই নির্দেশ দিয়েছেন। তবে দলের অন্দরে অনেকেই মনে করছেন, নিজেদের দখলে থাকা পঞ্চায়েতে গৃহযুদ্ধ সামলাতেই এই ফরমান।
বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বেশ কিছু প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট করার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনের পরে সেই সব গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে শুরু করেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা। শুধু চাপড়াতেই এমন পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। এই প্রধানেরা দলের প্রার্থী রুকবানুর রহমানের বদলে নির্দল হয়ে দাঁড়ানো দলের চাপড়া ব্লক সভাপতি জেবের শেখের হয়ে ভোটে কাজ করেছিলেন বলে অভিযোগ। রুকবানুর জেতার পরে এঁদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এসেছে।
মুশকিল হল, জেলা সভানেত্রী নির্দেশ দেওয়ার পরও কিন্তু এই সব পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্যেরা অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহার করেননি। মহৎপুর পঞ্চায়েতে অনাস্থা প্রস্তাব আনা সদস্যদের অন্যতম নুর হোসেন শেখ বলেন, “ওই প্রধান তো তৃণমূলের নয়। উনি তো ভোটে আমাদের দলের প্রার্থীকে হারাতে নির্দল প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছেন। আমরা পঞ্চায়েতের কোনও কাজ করতে পারি না। ওই প্রধানকে সরাব। তেমন হলে দল করব না।” কার্যত একই কথা জানি।য়ে হাতিশালা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনা সদস্যদের অন্যতম আজাদ মহলদারও বলেন, “কোনও ভাবেই এই প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে পারব না।”
জেবের এই নিয়ে মন্তব্য করতে না চাইলেও রুকবানুর দাবি করেন, “এই নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমায় জানিয়ে কেউ কিছু করেনি। তা ছাড়া জেলা সভানেত্রী নিজে আমাকে এমন কোনও চিঠি পাঠাননি। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক জন হোয়াটসঅ্যাপে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। সেটা সভানেত্রীর লেখা কি না বলতে পারব না।”
জেলার আরও কিছু পঞ্চায়েতেও একই অবস্থা। নাকাশিপাড়া বিধানসভা এলকায় একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। তার মধ্যে যেমন বিজেপির প্রধান আছেন তেমনই নিজের দলের প্রধানের বিরুদ্ধেও অনাস্থা এনেছেন তৃণমূলের সদস্যরা। এলাকার তৃণমূল বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেন, “দল যখন নির্দেশ দিয়েছে, সেটা মানতে হবে।”
তৃণমূলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে, অনাস্থা প্রস্তাব আনতে গেলে দলের আগাম অনুমতি বলতে কার অনুমতি নিতে হবে? তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র বাণীকুমার রায় বলেন, “পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরা ব্লক সভাপতির মাধ্যমে জেলা সভানেত্রীর কাছে আবেদন করবেন। তিনিই সেই আবেদন বিচার করে সিদ্ধান্ত নেবেন। আর জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্য নেতৃত্ব।” তার মানে কি নিচুতলার সংগঠনে কার্যত সভানেত্রীর একাধিপত্য কায়েম করা? তৃণমূলের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান উজ্জ্বল বিশ্বাসের দাবি, “আমরা সবাই মিলে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। করোনা পরিস্থিতির কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
সেই সিদ্ধান্ত কেউ অগ্রাহ্য করলে কী হবে, তা অবশ্য স্পষ্ট হয়নি। রুকবানুর বলেন, “যারা ভোটের সময়ে দলবিরোধী কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হবে, সেটাও দলই ঠিক করুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy