বিজেপির অবরোধ চাকদহ চৌমাথায়। — নিজস্ব চিত্র।
করিমপুর-সহ নদিয়ার বেশ কয়েকটি জায়গায় গৃহযুদ্ধ মিটিয়ে অতিরিক্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। যদিও আজ, মঙ্গলবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে দলেই অনেকের সন্দেহ আছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সোমবার রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান নাসিরুদ্দিন আহমেদের বাড়িতে আসেন। বিশেষত করিমপুরের বিবদমান দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে উচ্চতর নেতৃত্বের পাঠানো তালিকা ধরিয়ে দেন তাঁরা। এ-ও জানিয়ে দেন যে, যাঁদের নাম তালিকায় নেই তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হবে।
প্রাক্তন ও বর্তমান বিধায়কের অনুগামী গোষ্ঠীর কোন্দলের জেরে নদিয়ায় সবচেয়ে বেশি আসনে তৃণমূলের অতিরিক্ত মনোনয়ন পড়েছে করিমপুর ১ ও ২ ব্লকেই। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত— তিন স্তরেই অধিকাংশ আসনে দলের দুই পক্ষের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আজ মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে সেই ঝামেলা না মিটলে অতিরিক্ত প্রার্থীরা নির্দল বা গোঁজ প্রার্থী হিসাবে দলেরই প্রার্থীর ভোট কাটবেন, এই আশঙ্কাই বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কাদের ফেরাতে বলা হচ্ছে মনোনয়ন?
করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে জেলা পরিষদের পাঁচটি আসন রয়েছে। ১ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে (জেড পি ১) বিদায়ী সদস্য সাজেদা বিবি মণ্ডলের বদলে নতুন প্রার্থী হিসেবে শাসক গোষ্ঠী কমলা খাতুন বিশ্বাসকে প্রার্থী করতে চায়। সাজেদা বিবি এলাকায় বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়ের অনুগামী বলেই পরিচিত ছিলেন। তবে তিনি প্রার্থিপথ প্রত্যাহার করবেন কি না, তা জানা যায়নি। সোমবার একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি।
জেড পি ২-এর প্রার্থী হিসেবে আবার দলের পছন্দ প্রাক্তন বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের অনুগামী বলে পরিচিত চম্পা ঘোষ। ওই আসনে বিমলেন্দু-শিবির থেকে প্রার্থী হিসাবে বন্যা প্রামাণিক সাহার নাম দেওয়া হয়েছিল। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করার রাত পর্যন্ত কিছু বলতে চাননি। তবে দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, তিনি সম্ভবত মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।
৩ নম্বর জেলা পরিষদ আসন তেহট্ট বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। জেডপি ৪-এর বিদায়ী সদস্য, মহুয়া-অনুগামী বলে পরিচিত সীমা দাস ঘোষ মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। দলীয় সূত্রের দাবি, তাঁকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে। ওই আসনে বিধায়ক-অনুগামী অনুভা মুখোপাধ্যায়কে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতৃত্ব। রাতে সীমা জানিয়েছেন, তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।
জেডপি ৫ আসনে দলীয় নেতৃত্ব সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন মহুয়া-শিবিরের নেতা বলে পরিচিত, প্রাক্তন করিমপুর ১ ব্লক সভাপতি তরুণ সাহাকে। ওই আসনে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অতনু ঘোষ মনোনয়ন জংমা দিলেও তিনি তা প্রত্যাহার করে নেবেন এ দিনই জানিয়ে দিয়েছেন। জেড পি ৬ আসনে বিমলেন্দু-শিবিরের তরফে সঙ্গীতা বিশ্বাস মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। কিন্ওতু দলের তরফে তাঁদের বিরোধী শিবিরের শম্পা ঘোষ বিশ্বাসকে প্রার্তী করতে বলা হয়েছে। সোমবার রাতে সঙ্গীতা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
জেলা পরিষদ আসনে ঝামেলা এক রকম মেটানো গেলেও নীচের দুঅই স্তরে কী হবে, তা নিয়ে ঘোরতর সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। করিমপুরে পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশ আসনে দুই শিবিরের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তবে করিমপুর ২ ব্লক সভাপতি রেজাউল হক হালসানা বলেন, "সকলকেই দলে সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে।"
আর, তাঁদের বিপক্ষ শিবিরের অন্যতম তরুণ সাহার বক্তব্য, “বিষয়টি আপাতত মিটে গিয়েছে। পরে যখন যেমন পরিস্থিতি হবে, দেখা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy