(বাঁ দিকে) শাওনি সিংহ রায় এবং হুমায়ুন কবির। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন পাঁচ বিধায়ক। তাঁর অপসারণের দাবি জানিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে যৌথ ভাবে চিঠিও দিয়েছিলেন। জেলা সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায়ের ডাকে সদ্য শেষ হওয়া বিজয়া সম্মেলনীতে অনুপস্থিত ছিলেন একাধিক বিধায়ক। সাংগঠনিক নেতৃত্বের অনেকেই যাননি। সোমবার রাজ্য জুড়ে জেলা নেতৃত্বের রদবদল হতেই দেখা গেল বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রীর পদ থেকে শাওনিকে সরানো হয়েছে। যদিও দলে শাওনির পদোন্নতি হয়েছে। তিনি এখন রাজ্য সম্পাদক। কিন্তু জেলা সভানেত্রীর পদ থেকে সরানোর খবরে আবার সুর চড়ালেন ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক হুমায়ুন কবির। ভরতপুরের বিধায়কের কথায়, ‘‘লঙ্কা রাবণমুক্ত হল।’’
মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাওনিকে সরিয়ে নতুন জেলা সভাপতি করা হয়েছে কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার (ডেভিড)-কে। একই সঙ্গে চেয়ারম্যান পদেও বদল হয়েছে। অসুস্থতার কারণে আবু তাহের খানকে পাকাপাকি ভাবে সরিয়ে চেয়ারম্যান করা হয়েছে রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীকে। এ ছাড়া জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলাতেও সংগঠনে রদবদল হয়েছে। তবে ওই জেলায় খলিলুর রহমানকে সভাপতি পদে রেখে শুধু চেয়ারম্যান পদে আনা হয়েছে জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেনকে। অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে নবগ্রামের কানাই মণ্ডলকে। তিনি এখন দলের রাজ্য সম্পাদক। এই রদবদলে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল মিটবে কি না তা, সময়ই বলবে। তবে হুমায়ুন মনে করছেন, দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আগামী লোকসভা ভোটে জেলায় তাঁদের ফল ভাল হবে। নানা সময়ে তিনি বলেছেন, দলের জেলা সভানেত্রী শাওনিকে তিনি ‘মানেন না’। সেই শাওনির পদবদল নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে হুমায়ুন বলেন, ‘‘লঙ্কায় পৌঁছনোর পরেই শাওনি রাবণের ভূমিকা নিয়েছিল। রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে লঙ্কা থেকে রাবণকে সরানো হল। নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করি, লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে অত্যন্ত ভাল ফল করবে তৃণমূল।’’
আসলে মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূলকে দুই ভাগে ভাগ করার পর থেকে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সাংসদ আবু তাহের খানকে। দলের জেলা কমিটির ঘোষণা নিয়ে জেলা সভাপতি শাওনি সিংহ রায়ের সঙ্গে আবুর বিবাদ চরমে ওঠে। পরবর্তী কালে আবু অসুস্থ হলে জেলার পাঁচ বিধায়কের সঙ্গে প্রকাশ্য সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন শাওনি। দীর্ঘ অসুস্থতা কাটিয়ে জেলা রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হওয়া আবুকে চেয়ারম্যান পদ থেকে পাকাপাকি ভাবে সরিয়ে দেওয়া এবং শাওনির রায়ের জেলা সভানেত্রী পথ থেকে অপসারণ আসলে লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটানোরই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। দলে ‘পদোন্নতি’তে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি শাওনি। তিনি হুমায়ুনের কটাক্ষের প্রেক্ষিতে বলেন, ‘‘জেলা সভানেত্রী পদের থেকে কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে সন্তুষ্ট করা সম্ভব নয়। প্রথম প্রায়োরিটি দেওয়া হয় সংগঠনকে। রাজ্য নেতৃত্ব আমার কাজে খুশি হয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছে। আমি রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy