খলিলুর-আমিরুল বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
কাঁধে দলকে জেতাবার দায়িত্ব। তাই অতীত ভুলে বিধানসভা নির্বাচনের ছক কষতে শমসেরগঞ্জের দলীয় প্রার্থী আমিরুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করলেন তৃণমুলের জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান। শুধু তাই নয়, বুধবার সকাল, বিকেল দু’দুটি কর্মী বৈঠক করলেন দুজনে মিলে শমসেরগঞ্জে।
এদিন অবশ্য কোনও বৈঠকেই দেখা যায়নি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ আনারুল হক বিপ্লবকে। এক সময় বিপ্লবের পণ ছিল আমিরুলকে হারাবার। সময় ও পরিস্থিতি বদলে সুর বদলেছে বিপ্লবেরও। জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলের হয়েই শমসেরগঞ্জে প্রচারে নামবেন তিনি।
কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূল দেখে বিপ্লবকে এখন সেভাবে গুরুত্ব দিতেই রাজি নন আমিরুল। তাই বিপ্লব ডাক পাচ্ছেন না দলের কোনও প্রচার সভাতেই। বিপ্লব পারিবারিক সম্পর্কে খলিলুর রহমানের ভাইপো। কিন্তু খলিলুর রহমান বিপ্লবকে নিয়ে এই মুহূর্তে কোনও বিতর্কে জড়াতে চাইছেন না।
তাঁর কথা, “সব কর্মীদের বলেছি অতীত ভুলে প্রচারে নামুন। এখানে আমিরুল বা জাকির বলে কোনও কথা নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে প্রচারে নামুন। এখনও যারা সরে আছেন তারাও নামবেন প্রচারে। আমি জঙ্গিপুরের সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হিসেবে সকলকে নিয়ে চলতে চাই। রেকর্ড ভোটে জেতানোর জন্য এটা জরুরি।”
তৃণমূল যখন দুই কেন্দ্রে দ্বন্দ্ব ভুলে পুরোমাত্রায় প্রচারে নেমে পড়েছে শমসেরগঞ্জে তখন কংগ্রেস মাঠছাড়া খেলা শুরুর আগেই। কার্যত ওয়াকওভার দিয়েছে তৃণমূলকে। শেষ মুহূর্তে মুখ বাঁচাতে বিধানসভা নির্বাচনে শমসেরগঞ্জে সিপিএমকে সমর্থনের কথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ঘোষণা করলেও নিচুতলার দলীয় কর্মীরা কতটা সে ডাকে সাড়া দেবেন তা নিয়ে সংশয়ে সিপিএম।
এমনকী কংগ্রেসের নেতারাও সংশয়ে। শমসেরগঞ্জে দলের কর্মী ও সমর্থকেরা কংগ্রেস নেতাদের কথা শুনবেন তো? অতীতের নির্বাচনী অভিজ্ঞতা থেকেই এই সংশয় সিপিএমের। শমসেরগঞ্জে কংগ্রেসের ভোট আছে, কিন্তু নেতা নেই। কংগ্রেস ভোট লোকসভায় যায় নিজের দলের পক্ষেই, বিধানসভায় জোট শরিক সিপিএমের বিপক্ষে।
খোদ কংগ্রেসের এক নেতা বলছেন, “শমসেরগঞ্জ কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি ছিল। কিন্তু শমসেরগঞ্জে কংগ্রেসের ভোট থাকলেও তারা তা সিপিএমের পক্ষে দিতে চান না কখনওই, অতীতের নির্বাচনী ফলাফল থেকেই তা স্পষ্ট। তাই ঠেলায় পড়ে দলের নেতারা সিপিএমকে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছেন। নেতারা যতই বলুন সিপিএমকে ভোট দেওয়ার কথা, কংগ্রেস কর্মীদের ভীষণ মাত্রায় এলার্জি রয়েছে বামেদের ভোট দিতে। সেক্ষেত্রে দেখবেন আসরে না থাকলেও জইদুরের বোতাম টিপবেন অনেকেই।”
সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তোয়াব আলি মনে করছেন, “শমসেরগঞ্জের ভোটের লড়াই থেকে কংগ্রেস সরে যাওয়ায় তাদের ভোটের হার বাড়বে অনেকটাই। লড়াইটা হবে। তবে নেতারা বলে দিলেই সব কংগ্রেস ভোট বামেরা পেয়ে যাবে, বিষয়টা যে তা নয় তা আমরা বুঝি। বিজেপি এখানে নেই। তাই বিজেপিকে ঠেকানো শমসেরগঞ্জে ইস্যু নয়। তৃণমূল বিরোধী ভোটকে টেনে আনাটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলব। যদি তাদের নেতারা শমসেরগঞ্জে এসে দলের কর্মীদের নির্দেশ দেয়।”
কংগ্রেস নেতা ও ফরাক্কার প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হক বলছেন, “সিপিএমকে সমর্থন করা ছাড়া শমসেরগঞ্জে কংগ্রেসের সামনে বিকল্প কোনও রাস্তা খোলা নেই। অথচ এই শমসেরগঞ্জ কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে সিপিএমের সঙ্গে কম লড়াই করেনি কংগ্রেস। এক সময় আমার এলাকার মধ্যেই ছিল শমসেরগঞ্জ। আব্দুস সাত্তারের সময় থেকে দুটি ব্লককেই দলের হয়ে নার্সিং করতাম আমি। তারপর থেকে জেলা কংগ্রেস নিজের খেয়ালেই চালায় শমসেরগঞ্জকে। কে কখন ব্লক সভাপতি, শহর সভাপতি হচ্ছে, কাকে প্রার্থী করা হচ্ছে,জইদুরকে প্রার্থী করা হল কেন এসব বিষয়ে একবার কেঊ আলোচনাও করেনি আমার সঙ্গে। সঠিক পথে দল চললে শমসেরগঞ্জে এ ভাবে হোঁচট খেত না কংগ্রেস, এটা বলতে পারি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy