প্রতীকী ছবি।
একে বলে বসে বসে মার খাওয়া! যেখানে কয়েক মাস আগেও একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তৃণমূলের সেই কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভাতেই এখন মার খেয়ে পাল্টা মার দেওয়া বা প্রতিরোধের ক্ষমতা নেই তৃণমূলের।
তাদের পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি হামলা-বোমাবাজি হচ্ছে। কর্মীদের মারধর, একাধিক দলীয় কার্যালয় দখল ও ভাঙচুর করা হচ্ছে। দু-দুটো কলেজের দখল নিয়ে নিয়েছে এবিভিপি। কিন্তু প্রতিরোধ দূরের কথা তৃণমূল নেতৃত্বের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখে এলাকার মানুষের একটা বড় অংশও অবাক হচ্ছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূলের দাপটে এখানে সিংহভাগ আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। সেখানে কী ভাবে রাতারাতি কোনঠাসা হয়ে গেল শাসক দল?
অনেকেই বলছেন, বিধায়ক হওয়ার পর সত্যজিৎ বিশ্বাস নিজের একচ্ছত্র কতৃত্ব কায়েম করতে গিয়ে পুরনোদের সরিয়ে তুলে এনেছিলেন নিজের পেটোয়া লোকজনকে। ফলে ভিতরে ভিতরে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব তৈরি হয়েছিল। ঘুণ ধরেছিল। তিনি মারা যাওয়া মাত্র দলীয় সংগঠন হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। লোকসভা ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রেও ভুগতে হয়েছে দলকে। আর এখন বরাবরই ডানপন্থী রাজনীতির উর্বরভূমি হাঁসখালি, কৃষ্ণগঞ্জে বিজেপির হাতে মার খেয়েও অসহায়ের মত মুখ বুজে থাকতে হচ্ছে তাদের। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন থেকেই বগুলা-১ ও বগুলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগে ময়ূরহাট বাজারে বিজয় মিছিল করার সময় এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য তথা এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতার দোকান ঘর ভাঙচুরের পাশাপাশি দলের ঝাণ্ডা পুঁতে দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ওই দিনই গাজনা বাজারেও বিজয় মিছিলের সময় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছিল বিজেপি। কৃষ্ণগঞ্জের তারকগরে একই ভাবে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে।
রাজনৈতিক মহলের মত, সত্যজিৎ বিশ্বাসের বলে বলিয়ান ছিল কৃষ্ণগঞ্জের অধিকাংশ ‘মাসলম্যান’রা। তাঁর মৃত্যুর পর এদের পক্ষে আর বিজেপিকে প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্লক সভাপতি কল্যাণ ঢালি দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হলেও কোন দিনই আগ্রাসী নেতা নন। সত্যজিৎ বিশ্বাস ছিলেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের একান্ত অনুগামী। গৌরীবাবুকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকেও একই অবস্থা। সেখানেও পঞ্চায়েত ভোটের পর সত্যজিৎ পদ থেকে সরিয়ে দেন লক্ষণ ঘোষ চৌধুরীর মতো পোড় খাওয়া নেতাকে। এখন যাঁরা নেতৃত্ব আছেন সেই প্রাক্তন ব্লক সভাপতি প্রণব বিশ্বাস, কল্যাণ চক্রবর্তীরা যোগ্য হলেও আগ্রাসী নন। ফলে তাঁদের নেতৃত্বে পাল্টা মার দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করতে পারছেন না তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার হাঁসখালি ও কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের বর্তমান ও পুরনো নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহ। তিনি বলেন, “এলাকায় অনেক যোগ্য নেতা আছেন। তাঁরা আবার সক্রিয় হচ্ছেন। এমন অবস্থা বেশি দিন স্থায়ী হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy