Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
TMC

ভোটার তালিকা বিলি নিয়ে ক্ষোভ, মহুয়ার বৈঠকেই ফের স্পষ্ট দলীয় বিবাদ

সম্প্রতি ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। নদিয়া জেলার তরফে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে সেই ভোটার তালিকা সংগ্রহের জন্য দল মহুয়া মৈত্রকে দায়িত্ব দিয়েছে।

 প্রকাশ্যে করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়ের সঙ্গে মহুয়ার বিবাদ।

প্রকাশ্যে করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়ের সঙ্গে মহুয়ার বিবাদ। ফাইল চিত্র।

সুস্মিত হালদার
শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৪২
Share: Save:

সাংসদ মহুয়া মৈত্রের ডাকা জেলার কো-অর্ডিনেশন কমিটির প্রথম সভা উত্তপ্ত হয়ে উঠল করিমপুর নিয়ে। সেই করিমপুর, যেখান থেকে সরে এসে নিজের এলাকা কৃষ্ণনগরে মহুয়াকে মন দেওয়ার জন্য কলকাতার সভামঞ্চে প্রকাশ্যে নির্দেশ দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়ের সঙ্গে মহুয়ার বিবাদ প্রকাশ্যে এসে দলকে অস্বস্তিতে ফেলছিল।

যদিও সাম্প্রতিক প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একই মঞ্চে ছিলেন মহুয়া। আর ওই সভাতেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রীতিমতো ধমক খেয়েছেন বিমলেন্দু।

সম্প্রতি ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। নদিয়া জেলার তরফে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে সেই ভোটার তালিকা সংগ্রহের জন্য দল মহুয়া মৈত্রকে দায়িত্ব দিয়েছে। মঙ্গলবারের সভায় মহুয়া এবং বিমলেন্দুর উপস্থিতিতেই অভিযোগ উঠল, দলের ব্লক সভাপতিদের মাধ্যমে জেলার অন্য সব ব্লকে ভোটার তালিকা বিলি করা হলেও করিমপুরের ক্ষেত্রে তা হয়নি। বরং সেখানে দুই ব্লক সভাপতিকে অন্ধকারে রেখেই বিলি হচ্ছে ভোটার তালিকা। শুধু তাই নয়, অন্য বিধায়কেরা যেখানে ভোটার তালিকা হাতে পেয়ে গিয়েছেন সেখানে করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায় তা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।

এ দিনের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন করিমপুর-১ ব্লক সভাপতি আশিস চট্টোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “সব ব্লকের সভাপতি ভোটার তালিকা বিলি করছেন। আমার ব্লকেও ভোটার তালিকা বিলি হচ্ছে, অথচ আমরা তার কিছুই জানি না!” তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই আমাদের অপমান করা মানে তাঁকেই অপমান করা। এটা দৃষ্টিকটূ। দলের পক্ষে শোভনীয় নয়।”

সবেমাত্র জেলা সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় নেতাদের মিলেমিশে কাজ করার বার্তা দিয়ে গিয়েছেন। তার পরেই এই ঘটনা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের জেলায় তৃণমূলের ক্রমবর্ধ্বমান অন্তর্দ্বন্দ্বকে সামনে এনে দিয়েছে। করিমপুর ২ ব্লক সভাপতি রেজাউল হক হালসানা এ দিন বলেন, “সর্বত্রই বিধায়কেরা ভোটার তালিকা নিয়ে ব্লক সভাপতিদের মাধ্যমে বিলি করছেন। আমরা কেন পেলাম না তা বিধায়কের কাছে জানতে চাইব। তার পর তিনি যা করার করবেন।” এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়। কোনও বক্তব্য মেলেনি মহুয়া মৈত্রেরও। নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ বলছেন, “বিষয়টি আমি আগেও শুনেছি, আজও শুনলাম। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখে তার পর যা বলার বলব।”

মহুয়া মৈত্র-র কো-অর্ডিনেশন কমিটির বৈঠক ডাকার এক্তিয়ার আছে কিনা, সে ব্যাপারে আগেও যেমন প্রশ্ন উঠেছিল তেমনই মঙ্গলবারও দলীয় নেতাদের অনেকে নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। যদিও প্রায় সকলেই এ দিনের বৈঠকে হাজির হন, কারণ জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তাঁরা ইন্ধন জোগাচ্ছেন এমন বার্তা যেন কালীঘাটে না-যায় সে ব্যাপারে সকলেই এখন সতর্ক। তবে ভিতরে-ভিতরে অনেকেই অসন্তুষ্ট বলে জানা গিয়েছে। নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ যেমন বলেন, “এই বিষয়ে আমি কিছু বলব না। যা বলার দল বলবে।” সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ নেতা শঙ্কর সিং‌হ। তিনিও মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ দিনের সভায় বিবাদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এক সঙ্গে লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বুথের এজেন্টদের প্রশিক্ষণ ও ব্লক স্তরে মাসে এক দিন আর পঞ্চায়েত স্তরে দু’বার করে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকগুলিতে কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যদের উপস্থিত থাকতেও বলা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy