Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
বদল হয়নি চেয়ারম্যানও
TMC

TMC: শাওনি, খলিলুরই স্বপদে থাকলেন

মনে করা হচ্ছে, জেলা এ বার তিন ভাগ হলে তৃণমূলেরও আরও একটি জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যান করা হবে। সে জন্যই পূর্বতনদের অপরিবর্তিত রাখা হল।

ফাইল চিত্র।

বিমান হাজরা , বিদ্যুৎ মৈত্র
জঙ্গিপুর ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২২ ০৭:৩৮
Share: Save:

সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে জল্পনা ছিল। কিন্তু সে জল্পনা নস্যাত করে ফের মুর্শিদাবাদের দুই সাংগঠনিক জেলাতেই অপরিবর্তিত রইল চেয়ারম্যান ও সভাপতি। বহরমপুর সাংগঠনিক জেলায় চেয়ারম্যান রইলেন সাংসদ আবু তাহের খান। সভাপতি শাওনি সিংহ রায়। একই ভাবে জঙ্গিপুরের সাংগঠনিক জেলায় চেয়ারম্যান রইলেন কানাই চন্দ্র মণ্ডল ও সভাপতি খলিলুর রহমান।

অথচ দু’টি জেলাতেই বার বার সামনে এসেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি। বড়ঞা, ভগবানগোলা, রানীনগর, শমসেরগঞ্জ, সাগরদিঘি, ফরাক্কা সর্বত্রই মাথা চাড়া দিয়েছে নেতাদের মধ্যে লড়াই। এমনকি মন্ত্রী সুব্রত সাহাকে পর্যন্ত হেনস্থা হতে হয়েছে। নিষেধ সত্ত্বেও অন্তত ৩০টিরও বেশি পঞ্চায়েতে দলেরই সদস্যরা অনাস্থা ডেকে অপসারণ করেছেন প্রধান ও উপপ্রধানদের। ফরাক্কায় সিন্ডিকেট তৈরি করে দলের নেতাদের তোলাবাজির অভিযোগ তো আছেই। সাগরদিঘিতে থানার মধ্যে দলের জঙ্গিপুরের চেয়ারম্যান বিধায়ক কানাই চন্দ্র মণ্ডল হেনস্থা হয়েছেন সাগরদিঘির তৃণমূল কর্মীদের দ্বারা। পুরসভা নির্বাচনে শমসেরগঞ্জে বোর্ড গঠন নিয়ে সভাপতি খলিলুর রহমানকে প্রকাশ্যে গালিগালাজের মুখে পড়তে হয়েছে দলের নেতাদের। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি অভিযুক্ত দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে। জেলা জুড়ে প্রায় সর্বত্রই দুটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত তৃণমূল। এই অবস্থাতেও দলের রাজ্য নেতৃত্ব আস্থা রেখেছেন পূর্বতনদের উপরেই।

মনে করা হচ্ছে, জেলা এ বার তিন ভাগ হলে তৃণমূলেরও আরও একটি জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যান করা হবে। সে জন্যই পূর্বতনদের অপরিবর্তিত রাখা হল।

তবে তৃণমূলের একাংশেরই বক্তব্য, আবু তাহের ও শাওনির মধ্যে বিবাদ রয়েছে। বর্তমান অবস্থায় দু’পক্ষই অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন। রাজ্যের জেলাকে ডাক প্রসঙ্গে দুই পক্ষই চেয়েছিল অন্য পক্ষকে সরে যেতে হবে, রাজ্য নেতৃত্বের কাছে একে অপরের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে। কিন্তু বাস্তবে তা না হওয়ায় তৃণমূলের নয়া ঘোষণায় প্রসঙ্গ এড়াচ্ছেন সকলেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁদেরই এক পরিচিত মুখ বলেন, “রাজ্যে যদি কথা বলার সুযোগ পাই এই প্রসঙ্গ ফের তুলব।” অন্য অংশ এদিন জেলা কার্যালয়ে শাওনিকে অভিনন্দন জানাতে ফুল হাতে হাজির ছিলেন জেলা কার্যালয়ে। তাঁদের এক জন জেলায় সব ক’টি পুরসভা তাঁর আমলেই দল দখল করেছে বলে শাওনির পক্ষে যেমন সওয়াল করেছেন, তেমনই তাহের পক্ষ সেখানেই পাল্টা দাবি করেন, “ক্ষমতায় আসার পরে জেলায় তাহেরদা’র আমলেই দল ২০ জন বিধায়ক পেয়েছেন।”

চেয়ারম্যান আবু তাহের খান এই প্রসঙ্গে বলেন, “যা হয়েছে তা ভাল হয়েছে।” বিধায়ক সৌমিক হোসেনের সঙ্গে ইদানিং শাওনির ঠান্ডা সম্পর্ক বলে তৃণমূলের একাংশই জানাচ্ছেন। এ দিন তিনিও বলেন, “আমি কোনও গোষ্ঠীতে নেই। আমি তৃণমূল নামক দলের সদস্য।”

সভাপতি পরিবর্তন না হওয়ায় তাঁদের সঙ্গে দলের দূরত্ব ঘুচলো না বলে মনে করেন তৃণমূলের পুরনো নেতা উৎপল পাল। এ দিন তিনি বলেন, “মুর্শিদাবাদ সভাপতি পরশ্রীকাতর, সংকীর্ণমনা। তাতে দল কতটা এক সুতোয় বাঁধা থাকবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকে গেল।” আর এক কর্মী সত্যেন চৌধুরী বলেন, “২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে আমাদের একপেশে করে রাখা হয়েছিল। তা মেনে নিয়েই দল করেছি। আগামীদিনেও করব।”

শাওনি অবশ্য বলেন, “আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি বলেই এ বার একুশে জেলা থেকে এত মানুষ ধর্মতলায় গিয়েছেন। তাই কে কোথায় কী বলছেন সেটা আমার কাছে কোনও বিষয় নয়। যারা দলমুখী তাঁদেরকে নিয়েই আমরা চলতে চাই।” জেলা মহিলা সভানেত্রী শাহনাজ বেগমও বলেন, “দলের এই সিদ্ধান্তে আমি খুশি।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy