Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

স্মার্টফোন নেই, পড়ায় ধাক্কা গরিব পড়ুয়াদের

শান্তিপুর শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্কুল মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক বার মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় উজ্জ্বল হয়েছে। সেই স্কুলও এই সময়ে পড়ুয়াদের জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে পড়াশোনার পথেই হেঁটেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২০ ০২:৩৭
Share: Save:

লকডাউনের কারণে মার্চ মাসেই ক্লাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুলের। প্রায় মাসতিনেক ধরে স্কুলে এসে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন বন্ধ। তবে ডিজিটাল মাধ্যমে ক্লাস সচল রাখার উদ্যোগ করা হয়েছে। শহরাঞ্চলের স্কুলগুলির পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের নানা স্কুলও সেই কাজে পিছিয়ে নেই। নানা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ও সাইট ব্যবহার করেই চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে পড়াশোনার কাজ।

শান্তিপুর শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্কুল মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক বার মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় উজ্জ্বল হয়েছে। সেই স্কুলও এই সময়ে পড়ুয়াদের জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে পড়াশোনার পথেই হেঁটেছে। সে কাজে নিজেদের ফেসবুক পেজ যেমন ব্যবহার করা হচ্ছে, তেমনই প্রতি ক্লাসের জন্য হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেমন পড়ুয়াদের কাছে ফেসবুক পেজ বা হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে পাঠদান করছেন, আবার কোনও বিষয়ে সমস্যা হলে তা নিয়েও কথা বলছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কিংশুক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই সময়ে ডিজিটাল মাধ্যম এক‌টি বড় প্ল্যাটফর্ম। পঠনপাঠন চালিয়ে যাওয়ার জন্য তা উপযোগী, সকলে উৎসাহের সঙ্গেই তা ব্যবহার করছেন।’’

আবার, শহরের বাইরে শান্তিপুরের বাথানগাছি হাইস্কুল এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকেই ডিজিটাল মাধ্যমের সাহায্য নিয়ে পঠনপাঠনের কাজ শুরু করেছে। তাদের ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়েছে শিক্ষা দফতরের দেওয়া মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক। স্কুল খুললে তার উত্তর লিখে জমা দেবে পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, বিভিন্ন বিষয় নিয়েও সেখানে পোস্ট করছেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা। জ্যামিতি, ভূগোল, ইংরেজি, ইতিহাস, বাংলা, বিজ্ঞান ইত্যাদি নানা বিষয়ের জটিল জিনিস ছবি, ভিডিয়োর মাধ্যমে সেখানে তুলে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যবস্থা রয়েছে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য।

দ্বাদশ শ্রেণির জন্য তৈরি হয়েছে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ। উচ্চ মাধ্যমিকে এই স্কুলে কলা বিভাগ রয়েছে। সেখানে সরাসরি যেমন পড়ুয়ারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর করতে পারছেন, তেমনই ছবি, ভিডিয়ো, লেখার মাধ্যমে তাদের পাঠ দেওয়া হচ্ছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মানস প্রামাণিক বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। নতুন মাধ্যমে তারাও উৎসাহিত।’’

করিমপুর জগন্নাথ উচ্চ বিদ্যালয় গত মে মাসে প্রথমে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এই অনলাইন ক্লাসের পঠনপাঠন চালু করে। তার কয়েক দিনের মধ্যেই দ্বাদশ শ্রেণি অর্থাৎ আগামী বর্ষের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও কলা বিভাগে অনলাইন পড়াশোনা শুরু হয়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রিয়তোষ সরকার জানান, বেশির ভাগ ছেলেমেয়েদের স্মার্টফোন না থাকায় প্রথম দিকে অনলাইন ক্লাস নিয়ে সংশয় ছিল। পরে দেখা যাচ্ছে, অনলাইন ক্লাসে ভাল সাড়া মিলেছে। এবং যত দিন যাচ্ছে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যত দিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হচ্ছে, তত দিন এ ভাবেই ক্লাস চলবে।

তবে, ক্লাসের সময় ছাড়া অন্য সময়ে যাতে ছাত্রছাত্রীরা অকারণে মোবাইল ব্যবহার না করে, সে দিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখা দরকার বলে জানাচ্ছেন তিনি।

অন্য দিকে, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অনলাইন ক্লাস চালু করলেও দশম বা দ্বাদশ ছাড়া অন্য শ্রেণির ক্লাস সফল হচ্ছে না সীমান্তবর্তী বালিয়াডাঙা উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষক অসিত পাল বলেন, ‘‘এলাকার বেশির ভাগ মানুষ গরিব। যাদের বাড়িতে স্মার্টফোন নেই, যেমন ষষ্ঠ শ্রেণির প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারীর কোনও ফোন নেই, তাদের সমস্যা হচ্ছে। আবার, অনেক ছাত্রকে গ্রুপে যোগ করলেও সেই ফোন অভিভাবকদের কাছে থাকায় তারা বুঝতেই পারে না। তবে, উঁচু ক্লাসের ছেলেমেয়েরা অনলাইন ক্লাসের সুবিধা পাচ্ছে।’’ ধানতলা থানার বঙ্কিমনগর আদর্শ বিদ্যাপীঠ, আড়ংঘাটা উপেন্দ্র মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউশনের মতো স্কুলগুলিও একই মাধ্যমে পঠনপাঠনের কাজ চালাচ্ছে। তাতে সফলতা আসছে বলে জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

অন্য বিষয়গুলি:

smartphone online study Coronavirus poor education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy