মানিক ভট্টাচার্যের গ্রেফতারির খবর পেয়ে বিজেপি সমর্থকদের আবির খেলা। মঙ্গলবার ঘোড়াইক্ষেত্র গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
বিধায়ক তহবিলে উন্নয়নের জন্য ফি বছর বরাদ্দ হয় ৬০ লক্ষ টাকা। সেই টাকা উন্নয়নের কাজে লাগানো ছাড়াও এলাকার মানুষের জন্য নানা কাজ থাকে বিধায়কের। পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য গ্রেফতার হওয়ার পরে এলাকার উন্নয়নেরই বা কী হবে আর এলাকাবাসী পরিষেবাই বা পাবেন কী করে, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
নিয়ম অনুযায়ী, বিধায়ক কোও নির্দিষ্ট প্রকল্পের বিষয়টি জেলাশাসককে জানালে তিনি সেই প্রকল্পের কাজের জন্য ব্লক বা পঞ্চায়েতকে সেই টাকা দেন। তবে বিধায়ক তহবিলের টাকা উন্নয়নের কাজে লাগাতে বিধায়কের অনুমতি প্রয়োজন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, পলাশিপাড়ায় বিধায়ক তহবিলের টাকায় একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে এবং কিছু কাজ এখনও চলছে। যদিও এটা সবে দ্বিতিয় বছর। পরের বছরগুলির জন্য যে তহবিল বরাদ্দ হবে, বিধায়ক অনুপস্থিত থাকলে সেই টাকায় নির্দিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক কাজ কী করে হবে, সেই পলাসিপাড়ায় ঘোরাফেরা করছে।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, মানিক নিজের সাম্মানিকের টাকাও উন্নয়নের কাজে লাগানোর কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু সাম্মানিক পেতে হলে সমস্ত বিধায়ককেই মাসে দু’বার করে চারটি সই করতে হয়। ইডি-র হেফজতে থাকা মানিক সেই সই করতে না পারলে সাম্মানিকও পাবেন না, ফলে তা কাজে লাগানোর প্রশ্নও উঠছে না। আবার পলাশিপাড়া প্রীতিময়ী গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী কল্যাণ সমিতির গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানও মানিক। ফলে তিনি না থাকলে রোগী কল্যাণ সমিতির পরিচালনার ক্ষেত্রেও ব্যাঘাত ঘটবে। তার সুরাহা কী? ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিক শ্যামল বিশ্বাস বলেন, “এটা স্বাস্থ্য ভবনের বিষয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বলতে পারবেন।”
শুধু কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা নয়। অস্বস্তিতে পড়েছে মানিকের দলও। তেহট্ট ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, “বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বলার কিছু নেই। তবে মানুষের কাছে কৈফিয়তের জায়গাটা বড় কঠিন হয়ে গেল।” তেহট্ট ২ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রণদাপ্রসাদ বসুও মানছেন, “এতে বিরোধীরা একটু মাইক ধরার সুযোগ পাবে।” তবে তাঁর আশ্বাস, “উন্নয়ন আটকে থাকবে না।” তেহট্ট ২ যুব তৃনমূলের সভাপতি আতাউর মণ্ডল আবার দাবি করছেন, “মানুষ ঠিকই বুঝবে, কেন্দ্রের প্রতিহিংসা স্বীকার হচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। সত্যের উদ্ঘাটন এক দিন হবেই।”
বিজেপি উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের পাল্টা দাবি, “চাকরি দেওয়ার নামে প্রচুর মানুষের থেকে টাকা তুলেছেন মানিক। তৃণমূলের অনেক নেতামন্ত্রী এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।” ২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের ভোটেও এই পলাশিপাড়ায় মানিক যার কাছে হেরেছিলেন, সিপিএমের সেই এস এম সাদির দাবি, “শুধু মানিক ভট্টাচার্য কেন, রাজ্যের সমস্ত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে। চোর হটাও, দুর্নীতিমুক্ত সরকার তৈরি করো।” তৃণমূলের উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ বলেন, “এই ঘটনায় দলের নেতাকর্মীদের মনে আঘাত তো লাগবেই। তবে সম্পূর্ণটাই আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। দলের নেতৃত্ব নিশ্চয়ই চিন্তাভাবনা করবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy