—প্রতীকী ছবি।
পূর্ব রেলের রানাঘাট-গেদে শাখায় বৃহস্পতিবার ভোরে রেল লাইনের পাশ থেকে উদ্ধার হল এক কিশোরীর দেহ। বাড়ি নদিয়ায়। প্রাথমিক তদন্তের পর রেল পুলিশ জানিয়েছে, ‘আত্মঘাতী’ হয়েছে ওই ছাত্রী। যদিও মৃতের দিদির দাবি, মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে।
বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের দাবি, ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। পুলিশ ধর্ষককে ‘আড়াল’ করে চাইছে। অন্য দিকে, পুলিশের দাবি, ওই বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ হলে তদন্ত করে দেখা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর সওয়া ৪টে নাগাদ ডাউন গেদে-শিয়ালদহ ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর। খবর পেয়ে রানাঘাট রেল পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে ওই ছাত্রীর বাবার মৃত্যু হয়। বছর দেড়েক আগে মাও মারা যান। বর্তমানে সে দিদি, জামাইবাবুর সঙ্গে থাকত। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ এক বান্ধবীর বাড়িতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বার হয় ওই ছাত্রী। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ পরিবারের তরফে তাকে ফোন করা হয়। সেই সময় সে জানায়, রাতে সে বন্ধুর বাড়িতেই থাকবে। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ ছাত্রীর ফোনে ফোন করে পরিবারের লোকজন। সেই সময় রানাঘাটে জিআরপি পুলিশ ফোন ধরে পরিবারের লোকজনকে রানাঘাটে আসতে বলে।
মৃতার মেজ দিদি বলেন, ‘‘বোন আগেও ওর বান্ধবীর বাড়িতে রাতে ছিল। তবে ও আত্মঘাতী হবে এটা বিশ্বাস হচ্ছে না। আমাদের সন্দেহ, ওর মৃত্যুর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে। তা ছাড়া যে পোশাকে বোনকে পাওয়া গিয়েছে, সেটা ওর পোশাক নয়।’’
অন্য দিকে, ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত তদন্তের দাবিতে রানাঘাট জিআরপি থানায় এ দিন দুপুরে হাজির হন রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক বিজেপির অসীম বিশ্বাস। পরে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তিনি রানাঘাট পুলিশ মর্গে যান।
যে ট্রেনের ধাক্কায় ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে সেই ট্রেনের চালক মহম্মদ এ এম মোল্লা বলেন, ‘‘ট্রেনের হেডলাইটের আলোয় মনে হয়েছিল লাইনের পাশে কেউ দাঁড়িয়ে রয়েছে। ট্রেন এগোতেই এক জন লাইনে চলে আসে। সেই সময় ঘন ঘন হর্ন দিচ্ছিলাম। ব্রেক কষে ট্রেন থামানোর চেষ্টাও করি। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।’’
বিষয়টি নিয়ে রানাঘাটের সাংসদ সমাজ মাধ্যমে একটি পোস্ট করছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে আরও একটি ধর্ষণ’। এমনকি মৃতার নাম-পরিচয়ও তিনি সামনে এনেছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জগন্নাথ বলেন, ‘‘মৃত্যুর পর নাম প্রকাশে কোনও বাধা থাকে না। যে অবস্থায় রেললাইনে দেহ পাওয়া গিয়েছে, সেই ছবি দেখে বিষয়টি ধর্ষণ বলেই মনে হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী রেলের চালক যখন দেখবেন কেউ ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিচ্ছেন, তখন তিনি ব্রেক কষবেন। ভোরের ঘটনা অথচ পুলিশকে অনেক পরে খবর দেওয়া হয়েছে। আসলে পুলিশ ধর্ষককে আড়াল করতে চাইছে।’’ আবার বিজেপিরই বিধায়ক অসীম বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা এর তদন্ত চাই।’’
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের পরিবার ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এ দিন ময়না-তদন্ত হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃত্যুর ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ এলে বিষয়টি তদন্ত
করে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy