প্রতীকী ছবি।
একইদিনে নিজেরাই নিজেদের বিয়ে রুখল দুই নাবালিকা। হরিহরপাড়ার বিডিও অফিস পাড়া ও ডাঙাপাড়া এলাকার ঘটনা।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে হরিহরপাড়ার বিডিও অফিস পাড়ার এক ব্যক্তি তাঁর নাবালিকা মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন ডোমকলের গরীবপুর গ্রামে এক যুবকের সঙ্গে। বছর ষোলোর ওই নাবালিকা স্থানীয় এইচএবি সিনিয়র মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী। বৃহস্পতিবার ছিল ওই নাবালিকার বিয়ে। জানা গিয়েছে ওই নাবালিকার অমতেই পরিবারের লোকেরা চুপিসাড়ে তার বিয়ের বন্দোবস্ত করেছিল। কিন্তু নারাজ নাবালিকা। নিজের বিয়ে রদের আর্জি জানায় তার বন্ধুদের। ওই নাবালিকার বন্ধুরাই যোগাযোগ করেন ব্লকের কন্যাশ্রী যোদ্ধা দিদিদের সঙ্গে। ওই নাবালিকার বন্ধুরা চাইল্ড লাইনের টোল ফ্রি নম্বরেও ফোন করে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে ওই নাবালিকার বাড়িতে যান ব্লকের সমাজ কল্যাণ আধিকারিক শ্যামসুন্দর মণ্ডল, কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের কো-অর্ডিনেটর জাকিরন বিবি, চাইল্ড লাইন, পুলিশ কর্মী ও জনা কয়েক কন্যাশ্রী যোদ্ধা।
অন্যদিকে ডাঙাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তি তাঁর নাবালিকা মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন নওদার মধুপুর ডাঙাপাড়া গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে। জানা গিয়েছে ওই নাবালিকাও দশম শ্রেণির ছাত্রী। পাত্র পেশায় ফেরিওয়ালা। বুধবার রাতেই চুপিসাড়ে তার বিয়ের বন্দোবস্ত করেছিলেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু সে-ও নারাজ এই বয়সে বিয়ে করতে। গোপনে ওই নাবালিকা বিয়ে রদের আর্জি জানায় নিজেরই গ্রামের বাসিন্দা ব্লকের কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের কো-অর্ডিনেটর জাকিরন বিবির কাছে। বুধবার সকালেই জাকিরন হাজির হন নাবালিকার বাড়িতে। উভয় পরিবারের লোকেদের বোঝানো হয় বাল্যবিবাহের কুফল ও আইন সম্পর্কে। দুই পরিবারের লোকেরাই মুচলেকা দেন মেয়ে সাবালিকা হলে তবেই মেয়ের বিয়ে দেবেন। নিজেদের বিয়ে রদ হওয়ায় খুশি ওই দুই নাবালিকা।
জাকিরন বলছেন, ‘‘আমরা এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছি। দুই নাবালিকা যে বুদ্ধি করে আমাদের খবর দিয়েছে তার জন্য তাদেরকে কুর্নিশ জানাই।’’
ওই দুই নাবালিকা বলছে, ‘‘এখনই বিয়ে নয়। পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।’’ উল্লেখ্য করোনা আবহে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে স্কুল। বিধিনিষেধের মাঝেই চুপিসাড়ে বিয়ের তোড়জোড় বেড়েছে। এদিকে নাবালিকার বিয়ে রদে তৎপর প্রশাসন ও কন্যাশ্রী যোদ্ধারা। হরিহরপাড়ার বিডিও রাজা ভৌমিক বলেন, ‘‘করোনা আবহেও নাবালিকার বিয়ের খবর পেলেই আমরা বিয়ে রদ করছি। এই দুই নাবালিকা সাহস দেখিয়েছে। আমরা তাদের পাশে রয়েছি। তাদের পড়াশোনার যাতে ব্যাঘাত না হয় আমরা সেদিকে নজর রাখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy