আলুর খোসা ছাড়াচ্ছেন শিক্ষক। নিজস্ব চিত্র
পেন খাতা ছেড়ে হাতা-খুন্তি হাতে নিলেন শিক্ষকেরা। এই বিরল ছবি চোখে পড়ল নাকাশিপাড়ার এক প্রাথমিক স্কুলে। কর্মীর অভাবে স্কুলের বাচ্চাদের মিড-ডে মিল রান্না করতে লেগে পড়লেন স্কুল শিক্ষকেরাই।
সংশ্লিষ্ট স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে মিড-ডে মিলের কর্মীদের মাইনে বৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবি নিয়ে তাঁদের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার একটি কর্মসূচি রয়েছে। তার জেরে এ দিন জেলার বেশির ভাগ স্কুলেই মিড-ডে মিলের কর্মীদের অভাব লক্ষ করা গিয়েছে। ব্যতিক্রম ঘটেনি ডাঙামাঠ কলোনি জিএসএফপি বিদ্যালয়টির ক্ষেত্রেও।
ওই স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার মিড-ডে মিলের কর্মীদের স্মারকলিপি জমার কথা থাকার কারণে গত কয়েক দিন ধরেই জেলা ও ব্লক প্রশাসনের তরফে স্কুল কর্তৃপক্ষের উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল যে, কোনও অবস্থাতেই স্কুলে মিড-ডে মিলের রান্না বন্ধ করা যাবে না। সেই কারণে শিক্ষকেরা চিন্তিত ছিলেন। শেষে স্কুলপড়ুয়াদের এ দিনের মিড-ডে মিলের জোগান দিতে অনেক জায়গায় রাঁধুনি ভাড়া করা হয়। আবার, অনেক জায়গায় শিক্ষকেরা নিজেরাই রান্নার কাজে হাত লাগান।
এ দিন ডাঙামাঠ কলোনি জিএসএফপি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল চার জন শিক্ষক মিড-ডে মিল রান্না করছেন। এক দিকে যখন স্কুলঘরে ক্লাস চলছে, অন্য দিকে প্রধান শিক্ষক ব্যস্ত রয়েছেন মিড-ডে মিলের রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় আনাজপাতি কাটায়। একটু পরে অন্য শিক্ষকদের সহযোগিতায় বাকি দিনগুলোর মতোই রান্না চাপল।
তবে এ দিনের রান্নার মেনু অন্য দিনের চেয়ে ছিল সামান্য আলাদা। বৃহস্পতিবার ভাতের সঙ্গে ছাত্রদের চাহিদা মাফিক মাংস দিয়ে ঘুগনি রান্না করে পরিবেশন করা হয়। শিক্ষকেরা ক্লাস করানোর সঙ্গে সঙ্গেই রান্না সম্পন্ন করেন এবং পড়ুয়াদের পাতে মিড-ডে মিল পরিবেশন করেন।
তবে প্রশাসনের চাপের কথা মানতে নারাজ ডাঙামাঠ কলোনি জিএসএফপি বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৈকত পোদ্দার। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলে দুই জন রাঁধুনি। ওঁরা নিজেদের দাবি নিয়ে কলকাতা গিয়েছেন। সে কারণে বাচ্চারা যাতে অভুক্ত না থাকে, তাই নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে রান্না করি। এতে স্কুলের ছাত্রেরা খুব আনন্দ পেয়েছে। ওতেই আমাদের আনন্দ। তবে সকলের সহযোগিতায় ক্লাসও হয়েছে অন্য দিনের মতো।’’
ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সোহানা ইয়াসমিন বলে, ‘‘স্যরেরা আমাদের খুব ভালবাসেন। রান্না করে খাওয়াচ্ছেন, খুব ভাল লাগছে।’’
অন্য দিকে, বেথুয়াডহরি জেসিএম স্কুলে মিড-ডে মিল কর্মীদের অনুপস্থিতির কারণে অন্য জায়গা থেকে রাঁধুনি এনে রান্না করে খাওয়ানো হয়। ওই স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি অংশুমান দে বলেন, ‘‘মিড-ডে মিল কর্মীরা অনুপস্থিত থাকায় অন্য ভাবে ছাত্রদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
এই বিষয়ে নাকাশিপাড়ার বিডিও কল্লোল বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যা রিপোর্ট আছে, তাতে সব স্কুলেই রান্না হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy