Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিউরে উঠে দেখেছি, এই আমার দেশ

বাড়ির উঠোনে হাসি ফোটাতে বাড়তি রুজির হাতছানিতে ওঁদের ঠিকানা ভিন প্রদেশে। কিন্তু লকডাউনের অনুশাসনে  রুজি তো গেছেই ঘরে ফেরাও ঝুলে ছিল সুতোর উপরে। দুর্বিষহ সেই প্রবাস কিংবা অনেক লড়াইয়ের পরে ফিরে আসার সেই গল্প বলছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা, শুনল আনন্দবাজার বাড়ির উঠোনে হাসি ফোটাতে বাড়তি রুজির হাতছানিতে ওঁদের ঠিকানা ভিন প্রদেশে। কিন্তু লকডাউনের অনুশাসনে  রুজি তো গেছেই ঘরে ফেরাও ঝুলে ছিল সুতোর উপরে। দুর্বিষহ সেই প্রবাস কিংবা অনেক লড়াইয়ের পরে ফিরে আসার সেই গল্প বলছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা, শুনল আনন্দবাজার

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সাবিনা ইয়াসমিন
কাঞ্চনতলা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ০৩:৫৩
Share: Save:

আমি আমার বাবা-মায়ের সব থেকে আদরের ছোট মেয়ে। আমরা ছয় বোন ও এক দাদা। আমাকে সবাই খুব ভালবাসত। বাবা গ্রামীণ চিকিৎসক। আয় খুব একটা ছিল না। গ্রাজু়য়েশন করার পর এক দিদি ও আমার বিয়ে হয়। কিন্তু স্বামীর ব্যবসা দু’বছরের মাথায় বন্ধ হয়ে যায়। স্বামী ও সন্তান সহ আমি বাপের বাড়িতেই ফিরে এলাম। তখন খুবই অসহায় লাগত।

আমার বড় দিদির ননদ দিল্লিতে থাকে, তাকে একদিন মোবাইলে আমার সব কথা বলি। সে আমাদের দিল্লি যাওয়ার কথা বলে। সেখানে একটা কাজের ব্যাবস্থ করবে। তার কথা শুনে আমরা দিল্লি চলে যাই। দিল্লি আমার স্বামীর কাজ হয় একটি শপিং মলে পাহারাদারের। দুমাস পরে আমিও শপিং মলে কাজে যোগ দিই। পাঁচ বছর কাজ করে কখনো অসুবিধার সম্মুখীন হইনি। ভাবছিলাম দিল্লির একটু বাইরে দুই ঘরের ফ্ল্যাট নেব। সেখানেই থেকে যাব।

সেই সময় আমার জীবনে ঘটল বিনা মেঘে বজ্রপাত। করোনার আবহে লকডাউন। বন্ধ হয়ে গেল শপিং মল, বন্ধ হয়ে গেল আমাদের রোজগার। এক দিকে লকডাউন অন্য দিকে করোনার ভয়। আমরা যেখানে থাকি সেখানে বেশ কয়েকজন করোনা আক্রান্ত। ভয়ে বাইরে বের হয় না। সঙ্গে ছোট্ট মেয়ে আছে। দাদা সব শুনে তাদের কাছে চলে আসতে বলে। কিন্তু যাব কী করে। ট্রেন, প্লেন সবই বন্ধ। বাসস্ট্যান্ডে হাজার হাজার বাঙালি বাড়ি আসার জন্য অপেক্ষা করছে। খালি পায়ে ছোট শিশু কে কোলে নিয়ে এক মা চলেছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে, এ দৃশ্য দেখে আমি অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। এই আমার দেশ। দাদা,বাবা আমাকে অনেক সাহস জুগিয়েছে তাই শেষ পর্যন্ত আবার কাঞ্চনতলা আসতে পারলাম। স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে ফরাক্কায়। তারপর হোম কোয়রান্টিন কাটিয়ে আবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছি। এখন ভাল আছি। ভাবছি এখানে একটা ঘর নিয়ে নিজে ব্যবসা করব।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus lockdown migrant worker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy