গরম ওড়াতে: রঘুনাথগঞ্জে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
আষাঢ়স্য প্রথম দিবস! অথচ তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৪১ ডিগ্রির আশপাশে।
কাগজ-কলমে বর্ষা নেমেছে। কিন্তু বাস্তবে প্রবল দাবদাহে হাঁসফাঁস করছে নদিয়া-মুর্শিদাবাদ। চড়া রোদ আর আপেক্ষিক আদ্রতার দমবন্ধ করা গুমোটে ঘরে-বাইরে গলদঘর্ম মানুষ।
ভৈরবমূর্তি আষাঢ়ের প্রথম দিন, শনিবার ছিল ইদ। এ দিকে, রাত পোহালেই মঙ্গলবার জামাইষষ্ঠী। মাত্রাছাড়া গরমে জামাই বাবাজীবনের খাতিরদারি নিয়ে বিলক্ষণ দুশ্চিন্তায় শ্বশুর-শাশুড়িরা। ইতিমধ্যেই বেপরোয়া গরমে বদল ঘটেছে ইদের ঐতিহ্যপূর্ণ রান্নায়। ইদের দুপুরে মাটন বিরিয়ানির সঙ্গে চিকেন চাঁপ মেনু হিসাবে বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু এই গরমে তেল-ঝাল-মশলার গুরুপাকে শরীর খারাপের আশঙ্কায় অনেক বাড়িতেই মাটন বা বিরিয়ানি হয়নি। বাদ গিয়েছে চালের রুটিও। বরং বেশি বিকিয়েছে সাদা দই।
বহরমপুর কদবেলতলার বাসিন্দা সুমিতা বেনজির বলছেন, “এত দিন জানতাম ইদ মানে দুপুরে মাটন-বিরিয়ানি আর চিকেন অথবা মাটন কষা হবেই। সঙ্গে টিকিয়া-কাবাব। কিন্তু যে গরম পড়েছে তাতে ওই ধরনের রান্না খেলে শরীর খারাপ আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ও দিকে সোমবার স্কুল খোলার দিনই মেয়ের বাংলা পরীক্ষা। তাই হালকা ঘিয়ের তৈরি পোলাও ও চিকেনের পাতলা ঝোল করেছি। ছিল পোড়া আমের সরবত এবং লস্যি।”
নদিয়ার শোনডাঙার ফরিদা ইসলাম বলেন, “তাছাড়া বিরিয়ানি, কাবাব, কোর্মা, কোপ্তা, টিকিয়া জাতীয় খাবার গরম না খেলে স্বাদ পাওয়া যায় না। কিন্তু এই আবহাওয়ায় গরম খাবার খেলে শরীর খারাপের সম্ভাবনা প্রবল। কাউকে নিমন্ত্রণ করে এনে এই গরমে মশলাদার খাবার খাওয়ানোটাও ঝুঁকির ব্যাপার। নিজেরা রান্নাঘরে টানা বেশিক্ষণ রান্না করতে পারছি না।”
এই গরমে ইদের মেনুতে পাত দাপিয়েছে সাদা দই। চাপড়ার সাহিদুল মণ্ডল বলেন, “শনিবার আমাদের মেনু ছিল সাদা দই, চিঁড়ের ফলার আর সঙ্গে রসগোল্লা।” বহরমপুর গোরাবাজারের জিনিয়া কাদের আরও সতর্ক। তিনি বলছেন, ‘‘সেমুই রান্নায় প্রচুর ঘি দিতে হয়। কিন্তু গরমে ঘি চপচপে সেমুই বানাতে মন সায় দেয়নি। যদি শরীর খারাপ হয়!’’
ইদ না হয় মিটল। কিন্তু এই গরমে জামাইষষ্ঠীর কী হবে? গরমের বহর দেখে ষষ্ঠীর দুপুরের মেনু নিয়ে ঘোর বিপাকে শাশুড়ি। নবদ্বীপের সঙ্গীতাদেবীর মেয়ে-জামাই কয়েক বছর পর ষষ্ঠীতে আসছে। হরিদ্বার নিবাসী বাবাজীবন এই গরমের গল্প শুনে আগে থেকেই শাশুড়িকে শুক্তো, চচ্চড়ি জাতীয় খাবারের আবদার করে বসেছেন।
সঙ্গীতাদেবী বলেন, “মেয়ে ফোনে জানিয়েছে, একেই জামাই পেটরোগা। তার উপরে এই গরম। কোনও ‘রিচ আইটেম’ চলবে না। মাংস নাকি একেবারেই খাবে না।’’ বহরমপুরের এক জামাই শ্যামলকুমার বাকুলি আবার শাশুড়িকে জানিয়ে দিয়েছেন, এ বারের ষষ্ঠীতে চিকেন-মাটন সব বাদ। পনির চলতে পারে। সঙ্গে আম আর ঘরে পাতা সাদা দই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy