Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
Santali Students

স্নাতকে ভর্তি হতে পারছেন না সাঁওতালি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা

জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি ও নবগ্রাম ব্লকের হাতে গোনা কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অলচিকি হরফে সাঁওতালি মাধ্যমে পঠনপাঠন শুরু হয়েছিল।

education.

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৩ ০৯:০১
Share: Save:

ডিগ্রি কলেজগুলিতে স্নাতকে প্রথম বর্ষে ভর্তি প্রায় শেষের পথে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন কলেজে সাধারণ বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ একই সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেও উপাচার্য না থাকায় সাঁওতালি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তি হতে পারলেন না। ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাঁওতালি মাধ্যমের উচ্চ মাধ্যমিক পাশ ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে তাঁদের অভিভাবক, আদিবাসীদের সংগঠনগুলি। তাঁরা শীঘ্রই তাঁদের স্নাতকে ভর্তির দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় তাঁরা বৃহৎ আন্দোলনে নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, প্রায় আড়াই মাস ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ শূন্য। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষে সাঁওতালি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির অনলাইন পোর্টাল খুলতে পারেনি। যার জেরে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করা যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, আশাবাদী শীঘ্রই নতুন উপাচার্য আসবেন। উপাচার্য এলে ছাত্র ভর্তি করা যাবে।

জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি ও নবগ্রাম ব্লকের হাতে গোনা কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অলচিকি হরফে সাঁওতালি মাধ্যমে পঠনপাঠন শুরু হয়েছিল। ২০১৩ সালে মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের পাখিরাডাঙায় ও চোরদিঘিতে দু’টি সাঁওতালি মাধ্যম জুনিয়র হাইস্কুল চালু হয়েছিল। ২০১৭ সালে সাগরদিঘির চোরদিঘি জুনিয়র হাইস্কুলে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ানোর অনুমোদন পায়। পরে ওই বিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে সেখান থেকে প্রথমবার উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে প্রায় ৪৫ জন পড়ুয়া। কিন্তু মুর্শিদাবাদে অলচিকি হরফে সাঁওতালি মাধ্যমে স্নাতক স্তরে কোনও কলেজে ভর্তির সুযোগ ছিল না। যার জেরে সে বার ভর্তি হতে না পেরে পড়ুয়ারা আন্দোলনে নামে। শেষ পর্যন্ত সে বার মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে অলচিকি হরফে সাঁওতালি মাধ্যমে ছাত্র ভর্তি নেওয়া হয়। গত বছরও এখানে ছাত্র ভর্তি হয়েছে। কিন্তু এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য না থাকায় জুলাই মাস থেকে তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে।

সাগরদিঘির খাটোয়া গ্রামের জয়িতা টুডু বলেন, ‘‘এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছি। কিন্তু পোর্টাল না খোলায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ হয়নি। আমাদের আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়। ফলে অন্য জেলার কলেজে গিয়ে ভর্তি হওয়ার পরিস্থিতি নেই। তাই এখানে ভর্তি হতে না পারলে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।’’

আদিবাসী সমাজ শিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সংস্থার জেলা সম্পাদক মিস্ত্রি টুডু বলেন, ‘‘এ বার সাঁওতালি মাধ্যমে জেলার ১৬ জন ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। তাঁরা এখনও ভর্তি হতে পারেননি। তাই তাঁদের ভর্তির দাবিতে শীঘ্রই আমরা আন্দোলনের নামব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Murshidabad Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE