এ ভাবেই ক্লাস। ডোমকলের ইসলামটুলি শিক্ষাকেন্দ্রে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
কোথাও ছাদের ঢালাই খসে রড বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও ছাদের বিমে ফাটল ধরেছে। ক্লাস ছেড়ে বারান্দায় ঠাঁই হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের।
নাকাশিপাড়া থানার গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচটি ঘরের মধ্যে দু’টিই অকেজো। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস চলছে বারান্দায়, তৃতীয় শ্রেণির ক্লাস কাম অফিস অন্য একটি ঘরে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাহাজুদ্দিন শেখ বলেন, “দোতলায় দু’টি আর একতলায় তিনটি মিলিয়ে মোট পাঁচ। দোতলায় ঘর দু’টির ছাদে ফাটল। তাই সর্বশিক্ষা মিশনের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শে মাস ছয়েক থেকে ওই দু’টি ঘরে ক্লাস নেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।” স্কুলের বারান্দায় হচ্ছে একটি ক্লাস, অন্য একটি ক্লাস অফিস ঘরে। একাধিক বার ঘর সারানোর জন্য দরবার করেও টাকা পাননি।
ডোমকলের ইসলামটুলি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে চারটি ক্লাসের জন্য বরাদ্দ দু’টি ঘর। বাঁশবাগানের নীচে সেই ঘরেও নীচের তলায় জানলা-দরজা কিছু নেই। দু’টি ক্লাসের পড়ুয়াদের পাশাপাশি সেখানে ঠাঁই হয়েছে মিড-ডে মিলের জ্বালানির। কখনও আবার সামনে খোলা মাঠে ক্লাস চলছে। প্রধান সহায়িকা মাসুমা খাতুন বলেন, ‘‘ছাত্রসংখ্যা কম থাকায় কোনও ক্রমে চলছে। ঘরের জন্য আবেদন করেছি। নীচের ঘরটা সংস্কার হলেও অনেকটা সুরাহা হয়।’’
বছর তেরো আগে একটি বাড়ির বারান্দায় শুরু হয়েছিল ওই কেন্দ্র। পরে ছোট্ট একফালি জমিতে পাকা বাড়ি হয়। কিন্তু তা ব্যবহারের যোগ্য হয়নি কখনওই। অভিভাবক সাইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রথমে দু’একটি ক্লাস থাকায় বছর তিনেক অসুবিধা হয়নি। চতুর্থ শ্রেণি হওয়ার পর থেকে শুরু হয়েছে সমস্য। তাই ছাত্রসংখ্যাও কমছে। ডোমকলের বিডিও সোয়াং গ্যাটসো ভুটিয়া বলেন, ‘‘আমাদের নজরে নেই ওই স্কুলটি। তবে ওরা আবেদন জানালে গোটা বিষয়টি নিয়ে জেলার সর্বশিক্ষা মিশনের সঙ্গে কথা বলব। যাতে দ্রুত ওই সমস্যার সমাধান হয় সেটিও দেখব আমরা।’’
গোপালপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাড়ি হয়েছিল ২০০৪ সালে। অল্প সময়ের মধ্যে ঘরের ছাদ খারাপ হল কী করে? প্রধান শিক্ষক জানান, তিনি ২০১১ সালে বদলি হয়ে এসেছেন। তাই ছাদ কী করে খারাপ হল, তা তাঁর জানা নেই। ক্লাসঘরের ছাদে ফাটলের খবর পেয়ে অভিভাবকেরা মাস ছয়েক আগে স্কুল ঘেরাও করেছিলেন। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, ছাদ ভেঙে পড়ে ছেলেমেয়েরা যখন হতে পারে, তখন তার দায় কে নেবে? অভিভাবক ওসমান মল্লিক, বিলকিস বিবিরা বলছেন, ‘‘ক্লাসঘরের ছাদে ফাটল। ছেলেমেয়েদের স্কুল পাঠিয়েও আতঙ্কে থাকি। আমাদের দাবি মেনে স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ওই দুটি ঘরে ক্লাস বন্ধ রেখেছে। আমরা চাই, ঘর দু’টি তাড়াতাড়ি সারানো হোক।
গোপালপুরের স্কুলের কথা অবশ্য জানাই নেই নদিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায়ের। তিনি শুধু বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখব।” সর্বশিক্ষা মিশনের জেলার প্রকল্প আধিকারিক সচ্চিদানন্দ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “স্কুল বাড়ি সংস্কারের জন্য সর্বশিক্ষা মিশন টাকা বরাদ্দ করে। ওই স্কুলটির আবেদন এসেছে কি না খোঁজ নিয়ে দেখছি।” তবে সর্বশিক্ষা মিশনেরই এক আধিকারিক জানান, স্কুলবাড়ি তৈরির ২৫ বছর পরে সংস্কারের জন্য আবেদন করা যায়। এ ক্ষেত্রে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। টানাপড়েন চলতেই থাকে। খুদে পড়ুয়ারা শুধু চাইছে পড়াশোনার উপযোগী একটা ঠাঁই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy