পিটিআই-এর প্রতীকী ছবি।
শমসেরগঞ্জের বাসুদেবপুর রেললাইনের ধারে আমার চায়ের দোকান ছিল। দোকান একটুখানি বাজারের ভেতরের দিকে হলেও খদ্দেরের অভাব ছিল না। বেচাকেনা ভালই হোত। আমাদের পাঁচ জনের সংসার ভালই চলছিল। ২০০৫ সালে রেলের কর্তারা এসে রেল লাইনের ধারে যে সব দোকান ছিল তা ভেঙে দেয়। এর মধ্যে আমার দোকান ও ভাঙা হয়। আমি বেকার হয়ে গেলাম। আমি দুর্গাপুর চলে যাই। সেখানে একটি লৌহ ফ্যাক্টারি তে ঠিকা শ্রমিক হিসাবে কাজে যোগ দিই। বাড়ির লোক খুশি হল। মাস মাইনে বেতন।
কিন্তু দেশ জুড়ে লকডাউনে আমাদের জীবনের তার আবার কেটে গেল। লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়ে গেল। তাই বাড়ি চলে আসব তা স্থির করে ফেলি। কিন্তু বাড়ি যাব কী করে? রাস্তায় দেখলেই পুলিশ ছুটছে পেছনে। কি করা যায় ভাবছি। বাড়ি আমাকে যেতে হবে। দুর্গাপুরে বাইক ভাড়া পাওয়া যায়। একজন বাইক ওয়ালার সঙ্গে কথা বললাম সে বলে সাঁইথিয়া পর্যন্ত যাবে তেল বাদে এক হাজার টাকা লাগবে। তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ করলেও সে রাজি হল না। ভোরবেলা দুর্গাপুর থেকে দুপুরবেলা আমাকে সাঁইথিয়ায় নামিয়ে বাইক ঘুরিয়ে সে চলে যায়। আমি থাকলাম। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা এল, কিন্তু কোনও গড়ি পাওয়া গেল না। কোথাও রাত কাটাবার যায়গা না থাকায় রাস্তার ধারেই ছিলাম। খবার কিছু না থাকায় না খেয়ে থাকলাম। রাত আটটায় পুলিশ এসে তুলে নিয়ে গেল। তারপর সারা রাত পুলিশ থানায় রেখে নানা রকম প্রশ্ন করে শেষে সকালে ছেড়ে দেয়। রাতে দুটো রুটি আর তরকারি খেতে দিয়েছিল। সকালবেলা থানা থেকে বেরিয়ে রাস্তা ধরে হাঁটতে লাগলাম কিছুটা পথ হাটার পর একটা তেলের ট্র্যাঙ্কার দেখতে পেলাম। ড্রাইভার কে হাত দেখিয়ে থামতে বললে গাড়িটা দাঁড়িয়ে যায়। গাড়ি যাবে মালদহ। আমি তাকে বাসুদেবপুর নিয়ে যেতে বললে, আমাকে নিয়ে আসে। ভাড়া নিয়েছিল ৬০ টাকা। তারপর থেকে বাড়িতে আছি। কোন কাজ নেই। সরকার ৬০ কেজি চাল আর ২ কেজি ছোলা আমাকে দিয়েছিল পরযায়ী শ্রমিক বলে। ভাবছি যদি একটা কাজ দিত তা হলে বাড়ি ছেড়ে যেতে হত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy