কলকাতা হাইকোর্ট। ফাইল চিত্র।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্থায়ী বদলিতে থাকা শিক্ষকদের’-দের কোথাও বদলি করা যাবে না। এমনই ৩৪ জন শিক্ষকের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ওই নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী ২৯ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন তিনি। ওই ৩৪ জন ছাড়াও আরও জনা চল্লিশেক শিক্ষক সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে একই রকম মামলা দায়ের করেন।
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তথা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে ১ জুন থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ জেলার ৩২৯ জন প্রাথমিক শিক্ষককে অস্থায়ী ভাবে বদলি করা হয়েছিল। ওই অবৈধ বদলি বাতিল করে শিক্ষকদের আগের স্কুলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, ২৯ জুলাই-এর শুনানিতে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের জয় হবে। তা ছাড়াও ৩২৯ জনের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ শিক্ষক নির্দেশ মেনে নিয়ে আগের বিদ্যালয়ে ফিরে গিয়েছেন।’’
অস্থায়ী ভাবে বদলিতে থাকা শিক্ষকদের আইনজীবী এক্রামুল বারি বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের ১০ জুলাইয়ের জারি করা নির্দেশটাই অবৈধ। তার প্রাথমিক ধাপ হিসাবে হাইকোর্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের ১০ জুলাই-এর জারি করা নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে।’’
রঘুনাথগঞ্জের বড়শিমুল প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক মিলনকুমার সিংহের বাড়ি কান্দির জেমো এলাকায়। তাঁর বাবা ৮০ বছরের বৃদ্ধ মা ৭০ বছর বৃদ্ধা। তিনি একমাত্র ছেলে। মামলাকারীদের অন্যতম মিলনকুমার সিংহ বলেন, ‘‘তিন বার টোটো ও তিন বার বাস পাল্টে কান্দি থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে বড়শিমুল প্রাথমিক স্কুলে পৌঁছতে হয় আমাকে। বিদ্যালেয় যাওয়ার জন্য সকাল ৭টায় বাড়ি থেকে বেরোতে হয়। ফেরার পথে একই ভাবে তিন বার টোটো ও তিন বার বাস পাল্টে বাড়ি পৌঁছতে রাত ৮টা হয়ে যায়।’’
তাঁর বাড়ি থেকে গোপীনাথপুর-ভোলানাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার। মিলন বলেন, ‘‘১১০ কিলোমিটার দূরের বড়শিমুল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বাড়ির পাশের গোপীনাথপুর-ভোলানাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় বদলির জন্য চাকরি পাওয়ার পর থেকে ১৪ বছর ধরে আবেদন নিবেদন করেও কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে কয়েক মাস আগে অস্থায়ী ভাবে বাড়ির কাছে বদলি হয়েছি। বাকি ৩২৯ জন শিক্ষকদের অনেকেরই দশা আমারই মতো। তাঁদের সবার বাড়ির কাছের বিদ্যালয়ের স্থায়ী শিক্ষক হিসাবে বদলি করলে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়া সবার মঙ্গল হবে।’’
২০০৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হাজার দুয়েক এমন শিক্ষক রয়েছেন। গত বছরের ১ জুন থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ জেলার ৩২৯ জন প্রাথমিক শিক্ষককে অস্থায়ী ভাবে বদলি করার পাশাপাশি ১১০ জন শিক্ষকের স্থায়ী বদলি হয়েছে। মিলনের দাবি, ‘‘২০০৫ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সব ‘ড্রাফটিং’ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বদলির নির্দেশ জরি করল না কেন প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ? ৩২৯ জন শিক্ষকের সঙ্গেই ১১০ জন শিক্ষকের স্থায়ী বদলি করা হয়েছে। তাঁদেরও কেন আগের বিদ্যালয়ে ফিরে যাওয়ার জন্য ১০ জুলাই প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ থেকে নির্দেশ জারি করা হয়নি? এই সব কারণে আমরা মামলা করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy