Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Nadia Congress

কংগ্রেস কি বাম পথে? আশঙ্কা বাড়ছে ঘাসফুলে

তৃণমূলের নেতা-জনপ্রতিনিধিরা অনেকেই ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করছেন যে সংখ্যালঘু ভোটের কিছুটা কংগ্রেস ও সিপিএমের দিকে ঝুঁকেছে। বিশেষ করে কংগ্রেসের দিকে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৫
Share: Save:

কংগ্রেসের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের জোট হবে নাকি পুরনো সঙ্গী বামেদের সঙ্গে, সেই প্রশ্নই এখন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের রাজনৈতিক নেতাকর্মী থেকে সাধারণ ভোটারদের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা অনেকেই মনে করছেন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ভবিষ্যতের উপর নির্ভর করছে এই কেন্দ্রের ফলাফলও।

কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের মোট ভোটারের প্রায় ৪৫ থেকে ৪৭ শতাংশ সংখ্যালঘু। চাপড়া, কালীগঞ্জ ও পলাশিপাড়া এই তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে যথাক্রমে প্রায় ৭০, ৬৫ ও ৬০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে এই তিনটি কেন্দ্রই তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রকে ‘লিড’ দিয়ে জিতিয়েছিল। তবে বেশি মার্জিনে নয়, মাত্র প্রায় ৬২ হাজার ভোটে। এ বার এই কেন্দ্রের ভবিষ্যৎ আরও বেশি সংখ্যালঘু ভোটের উপর নির্ভরশীল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, গত পঞ্চায়েত ভোটে অনেক জায়গাতেই, বিশেষ করে সংখ্যালঘু-প্রধান এলাকায় সিপিএম ও কংগ্রেস অপেক্ষাকৃত ভাল প্রভাব বিস্তার করেছে। জিততে না পারলেও তাদের ভোট বেড়েছে।

তৃণমূলের নেতা-জনপ্রতিনিধিরা অনেকেই ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করছেন যে সংখ্যালঘু ভোটের কিছুটা কংগ্রেস ও সিপিএমের দিকে ঝুঁকেছে। বিশেষ করে কংগ্রেসের দিকে। তৃণমূল পরিচটালিত নদিয়া জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষের মতে, “মুসলিম ভোট আর একচেটিয়া আমাদের পক্ষে নেই। একটা অংশ কংগ্রেসের দিকে চলে গিয়েছে। সিপিএমও কিছু ভোট পাবে। অন্য দিকে, গ্রামেগঞ্জে বাকি সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষ আগের চেয়ে বেশি বিজেপির দিকে ঝুঁকছে।” তৃণমূলের এক বিধায়কও মনে করছেন, “বিজেপির সংগঠন আগের চেয়ে শক্তিবৃদ্ধি করেছে। এ বার হিন্দু ভোট যদি বিজেপির দিকে ঝোঁকে আর সংখ্যালঘু ভোট যদি ভাগ হয়ে যায়, তা হলে আমাদের প্রার্থীর বিপদ আছে।”

চাপড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমানের দাবি, “কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলে আমাদেরই লাভ। জোট হলে কংগ্রেসের ভোট আমাদের দিকে আসবে, না হলে ভাগ হয়ে যাবে। তবে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন সর্বোচ্চ নেতৃত্ব।” তবে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা।, দলের নিচুতলার নেতাকর্মীরা তৃণমূলের সঙ্গে জোট চাইছেন না। জেলা কংগ্রেস সভাপতি অসীম সাহা বলেন, “তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে আমরা জেলার সংগঠন ধরে রাখতে পারব না। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সকলেই একই কথা জানিয়ে দিয়েছেন। কারণ পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের মার কর্মীদের গা থেকে এখনও শুকোয়নি।”

কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের কর্মীরা বরং সিপিএমের সঙ্গে জোটে অনেক বেশি সচ্ছন্দ। কারণ ইতিমধ্যে একাধিক বার তাঁরা জোট করে ভোট করেছেন। বিগত পঞ্চায়েত ভোটেও তাঁরা কাঁধে কাঁধ দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়েছেন। কংগ্রেসের অসীম সাহার আশঙ্কা, “অন্য রকম কিছু হলে আমাদের কর্মীরাই বিজেপিকে ভোট দিয়ে দিতে পারে।”

এ ক্ষেত্রে সিপিএমের দলীয় অবস্থান স্পষ্ট, যদিও তাদের কর্মীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্য আছে। অনেকেই বলছেন যে বিগত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে সিপিএমের সব ভোট কংগ্রেস পেলেও কংগ্রেসের ভোট সিপিএম প্রার্থীরা পাননি। আবার সিপিএমের ভোটে জিতে কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধিদের পরে তৃণমূলে যোগদান করার বিষয়টাও ভাবাচ্ছে। তবে অনেকে আবার মনে করছেন যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলে ভোট বাড়বে। মানুষের ভরসা তৈরি হবে। সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, “আমরা চাই, বিজেপি ও তৃণমূলকে হারাতে সব গণতান্ত্রিক দল এক জায়গায় আসুক। এ বার কংগ্রেস ঠিক করুক, তারা কী করবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy