নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতে স্কুলে অনুপস্থিত বহু ছাত্রছাত্রী। প্রতীকী চিত্র।
করোনা আবহে মাঝে প্রায় দু’ বছর স্কুল বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে পঠনপাঠন। তবে অধিকাংশ স্কুলেরই শিক্ষক জানাচ্ছেন, দুর্গাপুজোর ছুটি পেরিয়ে স্কুল খোলার পর থেকে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার অনেক কম। গড়ে মোটামুটি ৭০-৭৫ শতাংশ। তাঁদের দাবি, অনুপস্থিতির অন্যতম কারণ—ছাত্রীদের অনেকেরই নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, অনেক ছাত্র কাজের সন্ধানে পাড়ি দিয়েছে ভিন রাজ্যে।
সোমবার থেকে জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসায় শুরু হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা। প্রথম দিন পরীক্ষা দিতে আসেনি বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। এই ছবি কম-বেশি সবক’টি মাদ্রাসাতেই। নওদার গঙ্গাধারী এইচবি মাদ্রাসার দশম শ্রেণিতে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ১৮।
এ দিন পরীক্ষা দিয়েছে ১২ জন। চার ছাত্র ও দুই ছাত্রী অনুপস্থিত ছিল। ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক বাবর আলি মালিত্যা বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, দুই ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। চার জন ছাত্রের কেউ বেঙ্গালুরু কেউ বা কেরলে কাজে চলে গিয়েছে। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি, যাতে তারা মাধ্যমিকপরীক্ষা দেয়।’’
হরিহরপাড়ার গোবরগাড়া হাই মাদ্রাসায় দশম শ্রেণির মোট ৭৮ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৬০ জন টেস্ট দিচ্ছে। সাত জন ছাত্র ও ১১ জন ছাত্রী পরীক্ষায় বসেনি। দ্বাদশ শ্রেণির ৩৮ জন ছাত্রের মধ্যে টেস্ট পরীক্ষা দিচ্ছে ২৫ জন এবং ১১২ জন ছাত্রীর মধ্যে টেস্টে বসেছে ৮৯ জন। ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক বকুল আহমেদ বলেন, ‘‘অনেক ছাত্রীরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলেদের অনেকে ভিন রাজ্যে কাজে চলে গিয়েছে বলে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি। শিক্ষকরা অনুপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন। অনুপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা যাতে সকলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে, সেই চেষ্টা হচ্ছে।’’
হরিহরপাড়ার পদ্মনাভপুর হাই মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ৪৬ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে টেস্ট পরীক্ষা দিচ্ছে ৩৬ জন। জানা গিয়েছে, ২৫ জন ছাত্রীর মধ্যে পাঁচ জন ও ২১ জন ছাত্রের মধ্যে চার জন অনুপস্থিত ছিল। দ্বাদশ শ্রেণির ৬৫ জন ছাত্রীর মধ্যে অনুপস্থিত সাত জন এবং ২১ জন ছাত্রের মধ্যে অনুপস্থিত চার জন। ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘অভিভাবকদের কাছে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পেরেছি, ছাত্রীদের কারও কারও নাবালিকা অবস্থাতেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। টেস্ট পরীক্ষা দিচ্ছে না এমন ছাত্রদের বেশির ভাগই ভিন রাজ্যে কাজে গিয়েছে।’’
নওদার ত্রিমোহনী হাই মাদ্রাসা সূত্রে খবর, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া ১৬২ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে ১৩৮ জন ছাত্রছাত্রী। ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘‘অনেক ছাত্রী বিয়ের পর স্কুল আসছে। অনেকে আবার আসছেই না। তবে ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।’’ আগামিকাল, বুধবার থেকে ওই মাদ্রাসার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা শুরু হবে। ছাত্রছাত্রীরা সকলে যাতে পরীক্ষা দেয়, তার জন্য ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন শিক্ষকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy