—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র র্যাগিং-এর ঘটনা সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে জরুরিকালীন বৈঠক ডেকে অ্যান্টি র্যাগিং বা শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তৈরি করতে শুরু করেছে। কোনও কোনও স্কুল সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো শুরু করেছে। এমনকি, নির্দিষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করে তা ছাত্রদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সোমবার কলেজিয়েট স্কুলের বেশ কয়েক জন অভিভাবক স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জেলাশাসকের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদনপত্র জমা করেছেন।
শিক্ষক দিবসে কলেজিয়েট স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঁচ পড়ুয়ার বিরুদ্ধে ষষ্ট শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের র্যাগিং করার অভিযোগ ওঠে। তারা জুনিয়র পড়ুয়াদের সিগারেট খেতে ও অশালীন গালিগালাজ করতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ। ষষ্ট শ্রেণির এক ছাত্র সেটা করতে রাজি না হলে তার জামা খুলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই পাঁচ ছাত্রকে এই শিক্ষাবর্ষের জন্য বরখাস্ত করেন।
বিষয়টি জানার পরে জেলার অনেক স্কুলই র্যাগিং ঠেকাতে তৎপর হয়ে উঠেছে। কৃষ্ণনগর হাইস্কুল সোমবার শ্রেণিকক্ষে ১৬টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছে। আগেও অবশ্য আটটি ক্যামেরা লাগানো ছিল। শুধু তাই নয়, তৈরি হয়েছে একাধিক নির্দেশিকা। যা নোটিস আকারে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।
যেমন, শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া বড়রা ছোটদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করবে না। স্কুলের পিছনের দিকের শৌচাগার পঞ্চম ও ষষ্ট শ্রেণির ছেলেরা ব্যবহার করবে, সামনের দিকের শৌচাগারে তারা যাবে না। মোবাইল নিয়ে স্কুলে এলে অভিভাবককে এসে পাঁচশো টাকা জরিমনা দিয়ে যেতে হবে। স্কুল পালালে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। সব ছাত্রকে প্রার্থনার আগে স্কুলে আসতে হবে। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা ক্লাস মনিটরের কাছ থেকে টোকেন নিয়ে তবেই শ্রেণিকক্ষের বাইরে যেতে পারবে। এর সঙ্গে ১১ জনের একটি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক ছাড়াও এনসিসি ও খেলার শিক্ষক ছাড়াও ওই কমিটিতে ‘কড়া’ শিক্ষক বলে পরিচিত অন্য শিক্ষকও থাকবেন। সেই সঙ্গে পরিচালন সমিতির প্রতিনিধিও থাকবেন বলে প্রধান শিক্ষক উৎপল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত ঘটনা না ঘটলেও আমরা আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছি না। র্যাগিং আটকাতে প্রয়োজনীয় সমস্ত ধরনের পদক্ষেপই করা হচ্ছে।”
কৃষ্ণনগর শহরের আর একটি বড় স্কুল এভি স্কুল। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১৮ সালেই সাত জনের একটি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তৈরি করে রেখেছেন কতৃপক্ষে। দাবি, এখনও পর্যন্ত র্যাগিং সংক্রান্ত তেমন কোনও অভিযোগ কমিটি পায়নি। তবে পাখার ব্লেড বাঁকিয়ে দেওয়া বা আলো ভেঙে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করেছেন।
কৃষ্ণনগর শহর সংলগ্ন ভাতজাংলা-কালীপুর হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ আবার কলেজিয়েট স্কুলের ঘটনায় রীতিমতো উদ্বিঘ্ন। ওই স্কুলে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও ঘটনার কথা জানা না গেলেও অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই কমিটিতে শিক্ষক থেকে শুরু করে পরিচালন সমিতি, অভিভাবকদের পাশাপাশি উঁচু ক্লাস থেকে ছাত্রছাত্রীর প্রতিনিধিও রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক সজিত সরকার। তিনি বলেন, “এই ধরনের খবর পড়ুয়ারাই আগে জানতে পারে। এমনকি, অনেক সময়ে আগাম জানতে পারে। সেই কারণেই আমরা পড়ুয়াদের রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
জেলার মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক দিব্যেন্দু পাল বলেন, “সাম্প্রতিক কালে আমাদের কাছে কলেজিয়েট স্কুলের ঘটনার মতো অন্য কোনও স্কুলে তেমন ঘটনার খবর আসেনি। তবুও আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy