Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
State employees General strike

ধর্মঘটে বেশি প্রভাব পড়ল স্কুল-কলেজেই 

শান্তিপুর মিউনিসিপাল স্কুল, ফুলিয়া শিক্ষা নিকেতন, ফুলিয়া বিদ্যামন্দিরের মতো স্কুলে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং পড়ুয়াদের সংখ্যা ছিল কম।

ধর্মঘটে শিক্ষকেরা।

ধর্মঘটে শিক্ষকেরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ১০:২৪
Share: Save:

প্রাথমিক থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক স্কুল, এসআই অফিস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দফতর। নদিয়ায় ধর্মঘটের প্রভাব পড়ল সর্বত্র। শুক্রবার জেলা জুড়ে শিক্ষামহল বনধের ভালই সাড়া দিয়েছে। বহু স্কুলেই শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে তালা খোলা হয়নি। কোথাও আবার শিক্ষকেরা কম-বেশি এলেও আসেনি পড়ুয়ারা। ফলে, স্কুলে পঠনপাঠন হয়নি। যদিও দিনের শেষে ধর্মঘট সমর্থক এবং বিরোধী উভয় পক্ষই নিজেদের সফল বলে দাবি করেছে।

শুক্রবার মাজদিয়া রেলবাজার হাইস্কুল, স্বরূপগঞ্জ ভাগীরথী বিদ্যাপীঠ, পাকুড়গাছি হাইস্কুল, ইটলা জুনিয়র হাইস্কুল, উশিদপুর জুনিয়র হাইস্কুলের মতো একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী আসেননি। দুই বা এক জন করে শিক্ষক এসেছিলেন পানশিলা বালিকা বিদ্যালয়, শান্তিভূষণ গার্লস হাইস্কুল, ভীমপুর স্বামীজি বয়েজ হাইস্কুলের মতো স্কুলে। হাতেগোনা শিক্ষক এসেছিলেন কৃষ্ণনগর হাইস্কুল, দেপাড়া-বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের মতো বিভিন্ন স্কুলে। আবার নবদ্বীপ, শান্তিপুর, রানাঘাট বা চাকদহের বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়া ও শিক্ষকের উপস্থিতি এবং পঠনপাঠন ছিল স্বাভাবিক। শিক্ষকেরা আসায় কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে ক্লাস হলেও পড়ুয়া কম থাকায় চতুর্থ পিরিয়ডের পর ছুটি দেওয়া হয়।

এ দিন শান্তিপুর এবং তাহেরপুরে ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব লক্ষ করা গিয়েছে। শান্তিপুর মিউনিসিপাল স্কুল, ফুলিয়া শিক্ষা নিকেতন, ফুলিয়া বিদ্যামন্দিরের মতো স্কুলে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং পড়ুয়াদের সংখ্যা ছিল কম। তবে পঠনপাঠনের পাশাপাশি স্কুলের অন্য প্রশাসনিক কাজকর্ম চলেছে স্বাভাবিক ভাবেই।

কালীগঞ্জের মীরা চক্র, তেহট্ট ১ নম্বর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন শিক্ষকেরা। তেহট্টে ১ নম্বর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের তালা খুলতে দেওয়া হয়নি। ওই অফিসের মধ্যেই ছিল তেহট্ট আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়। কালীগঞ্জের লাখুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এ দিন মাত্র চার জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। করিমপুরের স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে।

তেহট্ট পলাশিপাড়ায় শুক্রবার সকাল থেকেই বিভিন্ন স্কুলের সামনে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকা ধর্মঘটের ব্যানার ঝুলতে দেখা যায়। মিড-ডে মিল রান্না হয়নি অনেক স্কুলে। তেহট্ট বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পরিতোষ হালদার বলেন, “একটা সময়ে নিশ্চয় ডিএ দেবে সরকার। তাই স্কুল খোলা হয়েছে।” তবে শিক্ষক ও পড়ুয়ারা আসেনি।

বৃহত্তর যৌথ মঞ্চের ডাকে ধর্মঘটের সমর্থনে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতি ও পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে শুক্রবার সকাল থেকে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ দেখানো হয়। ধর্মঘটীরা এ দিন কাজে যোগ দেননি। ধর্মঘটের সমর্থনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রশাসনিক ভবনে দুপুর ১টা থেকে ৪টে পর্যন্ত অবস্থান-বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি কর্মসূচি নেওয়া হয়।

একই ভাবে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রমিক কর্মচারী সমিতিও শুক্রবার ধর্মঘটে অংশ নেয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে পোস্টারিং, লিফলেট বিলি করা হয়। বিসিকেভি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন সংগঠন ধর্মঘটের সমর্থনে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করে।

এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নদিয়া জেলা সভাপতি রমেন ঘোষ বলেন, “আমাদের জেলায় ৬৬১টি মাধ্যমিক স্কুল আছে। তার মধ্যে ২০-২২টা স্কুল বন্ধ ছিল। অন্য দিকে, অন্তত ২০০ স্কুলে আজ প্রায় একশো শতাংশ উপস্থিতি ছিল। আমরা মনে করি, ছাত্র স্বার্থ বিঘ্নিত করে শিক্ষকদের আন্দোলন করা অন্যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পড়ুয়ারাই।”

অন্য দিকে, এবিটিএর নদিয়া জেলা সম্পাদক সৌমেন পাল বলেন, “আমাদের দাবিগুলি যে যথার্থ, ন্যায়সঙ্গত ছিল তার প্রমাণ গোটা নদিয়া জেলায় ৮০-৯০ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট সফল হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন সাড়া ইতিপূর্বে দেখা যায়নি। ধর্মঘটে সার্বিক ভাবে সাড়া দিয়েছেন ব্লক থেকে জেলা সদরের সর্ব স্তরের কর্মীরা।”

অন্য বিষয়গুলি:

State employees General strike Nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy