সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হলেন না সাক্ষি। — ফাইল চিত্র।
কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হলেন না রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কৃষ্ণনগরের ডিভিশনাল ম্যানেজার। বুধবার বিধাননগর ময়ূখ ভবনের বিশেষ আদালতে ওই মামলায় তিন জনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। বাকি দু’জন উপস্থিত হয়েছিলেন।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ বিচারক মনোজজ্যোতি ভট্টাচার্যের এজলাসে প্রথম সাক্ষ্য দেন সত্যজিতের মরদেহের সুরতহাল করা পুলিশ অফিসার শ্যামলকুমার মণ্ডল। তিনি জানান ঘটনার, ওই রাতে ১২টার পর অর্থাৎ ১০/০২/২০১৯ তারিখে তিনি একটি সিজ়ার লিস্ট (বাজেয়াপ্তকরণ তালিকা) প্রস্তুত করেছিলেন। তাতে মিলন সাহার কাছ থেকে পাওয়া সত্যজিতের দু’টি মোবাইল এবং মিলন সাহার রক্তমাখা জামাকাপড় ছিল। পর দিন সকাল ৮টা ১৫ নাগাদ তিনি সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহের জামাকাপড় ও চুল-নখ ইত্যাদিরও একটি তালিকা তিনি প্রস্তুত করেছিলেন।
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী সুবীর দেবনাথ দাবি করেন, সিজ়ার লিস্টে যে দু’টি মোবাইল ফোন সত্যজিৎ ব্যবহার করতেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে তা মিলন সাহার কথা মতো অফিসার লিখেছিলেন। সিজ়ার লিস্টে সাক্ষী হিসাবে সই করেছিলেন সুমিত বিশ্বাস, সুজল বিশ্বাস, সমীর ঘোষ এবং মিলন সাহা। এদের মধ্যে মিলন ঘোষ ছাড়া বাকিরা কেউ তাঁদের পরিধেয় পোশাক দেননি, তাই তিনি সেগুলি তালিকাভুক্ত করতে পারেননি। যদিও ওই চার জন মিলেই সত্যজিৎকে হাসপাতালে আনেন। এ কথা অফিসার মেনে নেন। আইনজীবী আরও বলেন, সাক্ষী মৃতদেহের সাদা গেঞ্জি এবং পাঞ্জাবি ছেঁড়া অবস্থায় বাজেয়াপ্ত করেছিলেন। সুরতহাল রিপোর্টে মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ হিসাবে তিনি যা লিখেছেন, তা ওই চার জনের কথার উপর ভিত্তি করেই। ওই চার জন তাঁকে বলেছিল, গ্রামের চার জন এসে সত্যজিৎকে জাপটে ধরেছিল। তারা বিজেপি কর্মী। তা স্বীকার করেন সাক্ষী।
অভিযুক্তের আইনজীবীর পরের বক্তব্য: সুরতহাল করতে গিয়ে অফিসার মৃতদেহের ডান চোখের নীচে এবং মাথার পিছন দিকে দু’টি গভীর ক্ষত পেয়েছিলেন। অফিসার সম্মতি জানান। আইনজীবী দাবি করেন, “সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করার সময় আপনি জানতেন না কোনও নির্দিষ্ট মামলা শুরু হয়েছে কিনা। তিনি যখন জানলেন যে খুনের মতো একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তখন পুলিশ অফিসার হিসাবে তাঁর স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা শুরু করা উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি।” সাক্ষী বলেন, তিনি এমন কিছুই করেন নি।
সিজার লিস্ট অনুযায়ী সত্যজিতের পাজামা, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি, জাঙ্গিয়া এবং জহরকোট — এই পাঁচটি জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। অথচ আলামত হিসাবে আদালতে তার সঙ্গে পেশ করা হয়েছে মোজা, মাফলার এবং উত্তরীয়। আইনজীবী জানতে চান, সাক্ষী কি এগুলি বাজেয়াপ্ত করেছিলেন? অফিসার বলেন, “না।“ সুরতহাল করতে গিয়ে যে সব জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়, সেগুলি কবে তদন্তকারী অফিসারকে দিয়েছিলেন তাও আদালতে জানাতে পারেননি সাক্ষী। নিয়মমাফিক যে কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে একটি সাধারণ ডায়েরি করতে হয় যার ভিত্তিতে সুরতহাল হয়। এ ক্ষেত্রে ওই ডায়েরি আদালতে দেখাতে পারবেন কি না জানতে চাওয়া হলে সাক্ষী জানান, এই বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারবেন না। প্রশ্ন করা হয়: যদি আদালত সময় দেয় তা হলে সাক্ষী কি ওই ডায়েরি সংক্রান্ত তথ্য পেশ করতে পারবেন? অফিসার জানান, থানার সঙ্গে কথা না বলে এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবেন না। তৃতীয় সাক্ষী ছিলেন কনস্টেবল জয়দেব সরকার। তিনি জানান, হাসপাতালে গোটা সময়টা তিনি মৃতদেহের সঙ্গে ছিলেন। আগামী ২৪ ও ২৫ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy