Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Sandip Das

প্রতিমা বায়না হয়নি, মন্ত্রীর মূর্তি গড়ছেন শিল্পী

শেষ পর্যন্ত রুজির খোঁজে একখানি  দাদাঠাকুর গড়েছেন। স্থানীয় একটি স্কুল কর্তৃপক্ষ বরাত দিয়েছেন জনা তিনেক মনীষির ফাইবারের মূর্তি গড়ার, সন্দীপ তাতেই রাজি হয়ে গিয়েছেন।

দা’ঠাকুরের মূর্তি। নিজস্ব চিত্র

দা’ঠাকুরের মূর্তি। নিজস্ব চিত্র

বিমান হাজরা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৪:১৯
Share: Save:

বরাত পেয়ে শ্রাবণের প্রথম সপ্তাহেই ১৯টি প্রতিমার এক মেটের কাজ শেষ করে ফেলেছিলেন। তবে সে ঘটনা গেল বারের। এ বার কবেই পেরিয়েছে রথযাত্রা। এখনও একটি প্রতিমার বরাত পাননি মৃৎশিল্পী সন্দীপ দাস।

শেষ পর্যন্ত রুজির খোঁজে একখানি দাদাঠাকুর গড়েছেন। স্থানীয় একটি স্কুল কর্তৃপক্ষ বরাত দিয়েছেন জনা তিনেক মনীষির ফাইবারের মূর্তি গড়ার, সন্দীপ তাতেই রাজি হয়ে গিয়েছেন। আব্দুল কালাম, বিদ্যাসাগর, সুভাষচন্দ্র আর রবীন্দ্রনাথ গড়েই এ বার ভরা শ্রাবণে রুজির ব্যবস্থা করছেন তিনি। বলছেন, ‘‘ওঁরা সব দেবতূল্য মানুষ। ওঁদের মূর্তি গড়তে খারাপ লাগবে কেন, তবে কী জানেন, পুজোর মুখে মা দুর্গাকে গড়ে তুলতে না পারলে কী আর মন ভরে! রুজির সঙ্গে একটা চিরকালীন অভ্যাসটাও ভুলে যাই কী করে বলুন তো!’’ স্থানীয় জোতকমল হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ দাদাঠাকুরের মূর্তির সঙ্গে দিয়েছেন ওই মণীষিদের আবক্ষ মূর্তির বরাত। এত দিন প্রতিমা তৈরির চাপে তা গড়তে পরিনি। এখন হাত ফাঁকা, তাই সে কাজেই মন দিয়েছেন। রুজির টানে অবশ্য ইতিমধ্যেই কার্তিক গণেশের বদলে মন্ত্রী জাকির হোসেনের ফাইবারের মূর্তিও গড়ে ফেলেছেন তিনি। বলছেন, ‘‘চল্লিশ হাজার টাকায় চুক্তি করল, হাতে কাজ নেই। যা পাচ্ছি তাই তৈরি করছি।’’

একই কথা বলছেন, শিল্পী অনন্ত সরকার। বলছেন, ‘‘চার মাস কোনও কাজ নেই। একটি প্রতিমারও বরাত পাইনি। তাই রাস্তার ঠিকাদারির কাজ করছি। গত বার সাত খানা প্রতিমা গড়েছিলাম। এ বার শূন্য!’’ অরঙ্গাবাদারে তপন ঘোষ গত বার সাত-আটখানা প্রতিমা গড়েছিলান, এ বার জুটেছে একটির বায়না।

পরিচিত মৃৎশিল্পী সন্দীপ শহরের সব ক’টি নামী পুজোর প্রতিমা গড়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু এ বারে বাদ সেধেছে করোনা। কোনও নামী ক্লাবেরই বিগ বাজেটের প্রতিমা এ বার হচ্ছে না। অগত্যা ফাইবারের কাজ জানেন বলেই ‘পেটটুকু ভরছে’।

জঙ্গিপুরের সাহেববাজার স্পোর্টস অ্যশোসিয়েশনের পুজো প্রতিবারই নজর কাড়ে। পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা তাপস পাল বলছেন, “পুজো তো বন্ধ করা যাবে না, তবে করোনা আবহে পুজো হবে যৎসামান্য আয়োজনে। এক চালার মূর্তি। কিন্তু এখনও বায়না দিতে পারিনি। লোকের হাতে পয়সা নেই। তা ছাড়া লকডাউনের নানা বিধিনিষেধের বেড়াজাল। তাই অপেক্ষায় আছি।”

নামী পুজোর অন্যতম রঘুনাথগঞ্জের প্রতাপপুর জাগ্রত সঙ্ঘ। টিকিট কেটে প্রতিমা দর্শনের আয়োজন করেছিল গেল বার। ২০১৮তে রামায়ণের সাতটি কাণ্ডকে তুলে ধরতে ৮৬টি মূর্তির খরচ তুলতে কালঘাম ছুটেছিল উদ্যোক্তাদের। টিকিট করেও ওঠেনি বাজেটের টাকা। গত বছর খরচ ধরা হয়েছিল ১২ লক্ষ টাকার। শুধু মূর্তির জন্যই বরাদ্দ ছিল তিন লক্ষ। পুজো কমিটির সভাপতি মুক্তি ধর বলছেন, “পুজোটা করতে হবে, তবে খুবই সংক্ষেপে। সন্দীপই গড়বে ঠাকুর। কিন্তু বায়না করিনি প্রতিমার।”

অন্য বিষয়গুলি:

Sandip Das Statue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy