দোকানে শিঙাড়া ভাজতে ব্যস্ত সঞ্জয় চক্রবর্তী। — নিজস্ব চিত্র।
সময়ের চাকা যেন উল্টোপথে ঘুরছে নদিয়ার করিমপুরের দাড়ের মাঠ এলাকায়। ১৯ বছর আগে শিঙাড়া-ঝালমুড়ির যে দামে বিক্রি হত সেই দামেই এখনও বিক্রি করেন বাসিন্দা দাড়ের মাঠ এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় চক্রবর্তী। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে বেশ কয়েক গুণ। কিন্তু সঞ্জয়’দার শিঙাড়া-ঝালমুড়ি এখনও বিকোয় এক টাকাতেই।
করিমপুরের দাড়ের মাঠ হাইস্কুলের সামনে সঞ্জয়ের দোকান। দুপুরে স্কুলে টিফিনের ঘণ্টা পড়তেই সেই দোকানে ভিড় জমাতে শুরু করে পড়ুয়ারা। কারণ এক টাকাতেই সঞ্জয়ের দোকানে মেলে শিঙাড়া এবং ঝালমুড়ি। শিঙাড়ায় থাকে আলুর পুর। গত কয়েক বছরে আলুর দাম বেড়েছে অনেক গুণ। দাম বেড়েছে ভোজ্য তেলেরও। কিন্তু সে সবের পরোয়া না করেই সঞ্জয় শিঙাড়া বিক্রি করেন এক টাকাতেই। ঝালমুড়ির ক্ষেত্রেও ওই একই কথা প্রযোজ্য।
এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে কী ভাবে এত কম দামে শিঙাড়া, ঝালমুড়ি বিক্রি করেন? প্রশ্নটা শুনে মুচকি হেসে সঞ্জয় বললেন, ‘‘আমি শিঙাড়ার স্বাদ এবং মানের সঙ্গে কখনও আপস করিনি। তবে মূল্যবৃদ্ধির চাপে তার আকার কিছুটা ছোট করতে হয়েছে। খুব অল্প লাভ রেখে আজও এক টাকায় বিক্রি করছি।’’
শিঙাড়ার আকার ছোট করে না হয় সামলানো গেল মূল্যবৃদ্ধির হামলা। কিন্তু এক টাকায় ঝালমুড়ি দিচ্ছেন কী ভাবে? এ বারও হেসে সঞ্জয় বললেন, ‘‘হিসাব কষে দেখেছি। নো প্রফিট নো লস। বাকিটা ব্যবসায়ীর গোপনীয়তা। এর বাইরে আর কিছু বলব না।’’
মূলত স্কুল পড়ুয়ারাই সঞ্জয়ের ক্রেতা। স্কুলে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা থাকলেও, টিফিনের সময় স্কুল পড়ুয়ারা লাইন দিয়ে এক টাকার শিঙাড়া এবং ঝালমুড়ি কেনে। তেমনই প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস নামে এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘সঞ্জয়কাকুর শিঙাড়া, ঝালমুড়ির স্বাদই আলাদা। আর দামও কম। তাই প্রতি দিন খাই। অন্য দোকানে শিঙাড়া বিক্রি হয় পাঁচ টাকায়। কিন্তু এখানে মেলে মাত্র এক টাকায়।
প্রতি দিন গড়ে ৭০০-৮০০ টাকার বেচাকেনা হয় সঞ্জয়ের। তা দিয়েই সংসার চালান তিনি। চাইলে দাম বাড়িয়ে লাভের অঙ্ক খানিকটা বাড়াতেই পারেন সঞ্জয়। তবে তা তিনি করতে চান না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy