তাহিরের নামে গ্রামে পড়েছে পোস্টার। —ফাইল চিত্র।
সাহেবনগরে গুলি-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত তহিরুদ্দিন মণ্ডলকে গ্রেফতারের দাবিতে যে দিন নতুন করে মিছিল করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা, সে দিনই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে অসন্তোষ ছড়াল জলঙ্গির ওই প্রান্তিক এলাকায়।
জলঙ্গি এলাকার বাম-কংগ্রেস দু-তরফেই, শুক্রবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রতিবাদ করে পাল্টা কটাক্ষ করা হয়— ‘তহিরুদ্দিনকে গ্রেফতার না করার ব্যাপারে তা হলে সরকারি সিলমোহর পড়ে গেল!’
এ দিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী সাহেপনগরে গুলি-কাণ্ডের প্রসঙ্গে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের উত্তরে বলেন— ‘সরস্বতী পুজোর দিন ব্নধ ডাকতে গেল কেন, পুজো-পরবের দিনে কেউ ব্নধ ডাকে, ওখানে সাম্প্রদায়িক কার্ড খেলা হচ্ছিল।’ বিরোদীরা পাল্টা জানতে চান, তা হলে চলল কেনন গুলি, কে চালাল তা? মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের দিকে গুলি চালানোর আঙুল তোলেন বলে অভিযোগ।
বিকেলের দিকে তার আঁচই ছড়িয়ে পড়ে জলঙ্গির ওই গ্রামে। স্থানীয় সিপিএম নেতা জলঙ্গির প্রাক্তন বিধায়ক ইউনুস সরকার বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই প্রশ্ন তুলেছিলাম, ওই তৃণমূল নেতা এমন সাহস পায় কোথা থেকে! গোটা বিষয়টা এ দিন জলের মত পরিস্কার হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। সবটাই হয়েছে শাসকদল এবং পুলিশের মদদে। আর, সে জন্যই তহিরুদ্দিন গ্রেফতার হচ্ছে না।’’ জলঙ্গি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার কথায়, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছি তহিরুদ্দিন তৃণমূলের সম্পদ। আর এ দিন খোদ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমাণ করে দিলেন সত্যি সত্যি খুনিরা তাঁর দলের সম্পদ।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘‘উৎসবের দিনে বনধ করা যেমন ঠিক হয়নি, তেমনই তহিরুদ্দিনের বনধ রুখতে গুলি চালানোও ঠিক হয়নি। তবে তহির যে অন্যায় করেছে সে কথা মেনে নিলেই ভাল হত।’’
নাগরিকমঞ্চ নামে স্থানীয় একটি সংগঠনের ডাকা ওই বনধের সকালে সাহেবনগরে এসে গাড়ি থেকে এলোপাথারি গুলি চালায় তহির ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা— এমনই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তার জেরেই মারা যান এক পরিযায়ী শ্রমিক এবং গ্রামের এক মোয়াজ্জিন। ঘটনার পর উত্তাল হয়ে ওঠে সাহেবনগর। মৃতদেহ রাস্তায় রেখে অবরোধ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত তহিরুদ্দিন সহ তার দলবলকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছিল পুলিশকর্তারা। অবরোধ উঠলেও এলাকায় মিছিল-পোস্টারি চলতেই থাকে। নাগরিক মঞ্চের পক্ষে গোলাম রহমান বলছেন, ‘‘আমরা কোনও অন্যায় করিনি, এনআরসি বিরোধী আন্দোলন করতেই পথে বসে ছিলাম। কিন্তু তহিরুদ্দিন এসে আচমকা মারধর এবং গুলি চালাতে শুরু করে। আজ, বুঝতে পারছি কেন সে আজও অধরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy