জলঙ্গির নদীর উপর বাঁধাল। পলাশিপাড়ায়। ছবি:সাগর হালদার।
জলঙ্গি নদীর স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি ভাবে অনেকে তৎপর হলেও সরকারি ভাবে সেই তৎপরতা নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন ওঠার কারণ, জলঙ্গির বুকে একের পর এক বাঁশের বাঁধাল। শুধু এক জায়গায় নয়, এই বাঁধাল ছড়িয়ে বিভিন্ন এলাকা। লোকালয় থেকে যা সহজেই চোখে পড়ে। দিনের পর দিন আরও বাড়ছে এ ধরনের বাঁধাল। যার ফলে নতুন করে বিপদের মুখে নদীর জীবন। এমনই অভিযোগ নদী প্রেমীদের।
গোটা জেলায় জলঙ্গি নদীর অবস্থা বেহাল। বিভিন্ন জায়গায় মজে গিয়েছে। এছাড়াও প্রবাহ পথে নদীর বাঁকে বেশিরভাগ জায়গাায় মাছ ধরার জন্য আড়াআড়িভাবে ‘বাঁধাল, ‘কোমর’ ছড়িয়ে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্ট মহকুমার চরমোক্তারপুর থেকে প্রায় তিরিশ কিলোমিটার প্রবাহের বেশিরভাগটাই দখলে। তারপরেও নদী নিয়ে প্রশাসনের তরফে কোনও সঠিক পরিকল্পনা করতে দেখা যায়নি। পলাশিপাড়া ঢোকার আগে জলঙ্গির উপর সেতু রয়েছে। সেই সেতুর দু’দিকে দুটি বাঁধাল সেতু থেকেই স্পষ্ট দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বাঁশের ওই বাঁধাল রয়েছে। তেহট্ট ১ ও ২ ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাবে এই বাঁধাল। কোথাও নদীতে আড়াআড়ি ভাবে বাঁশ পুঁতে, কোথাও নদীতীরের কাছে বাঁশ পুতে বাঁধাল তৈরি করে মাছ ধরার ব্যবস্থা করেছে একশ্রেণির অসচেতন মানুষ। অভিযোগ, এর ফলে নদীর প্রবাহে বাধা পড়ছে। তেহট্ট ১ ও ২ ব্লকের মাঝে তারানগর, নিশ্চিন্তপুর এলাকার নদীর উপর তৈরি হয়েছে বাঁধাল। তেহট্ট ২ ব্লকের ঈশ্বরচন্দ্রপুরেও বড় বাঁধাল রয়েছে। মূলত নদীর বাঁকে বাঁকে এই দৃশ্য অতি পরিচিত। কয়েক বছর ধরেই নদী থেকে বাঁধাল তুলতে জোরাল আন্দোলন করছেন নদীপ্রেমীরা। তার জেরে বাধ্য হয়েই বাঁধাল তুলতে এক সময় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
পরিবেশ কর্মীরা জানাচ্ছেন, পরিবেশ বাঁচানো সবার কর্তব্য। এর মধ্যে নদী একটা বিরাট অংশ। তেহট্ট মহকুমার অর্ধেকের বেশি মানুষ কৃষিকাজে যুক্ত। তাঁরা সকলেই জলঙ্গি নদীর উপর নির্ভর করেন। নদী বাঁচাতে যখন পরিবেশকর্মীরা বারবার সোচ্চার হয়েছেন, তখন প্রশাসনের তরফে তেমন তৎপরতা চোখে পড়েনি। ‘সেভ জলঙ্গি’ ও ‘নদী বাঁচাও কমিটির দাবি, প্রশাসনের গা ছাড়া মনোভাব নদীকে বিপদের মুখে ফেলেছে। তেহট্টের মানুষকে সচেতন করতে একাধিক কর্মসূচি করেন তাঁরা। এমনকি জলপথে নদী সম্পর্কে সমীক্ষা করে নদীর গতিপথ সম্পর্কে সমীক্ষা করে রিপোর্ট কার্ডও প্রশাসনকে দেখানো হয়েছে। কিন্তু সময়মতো এবং সঠিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। নদী আন্দোলনকারীদের মধ্যে প্রলয় কুমার ভট্টাচার্য, শঙ্খশুভ চক্রবর্তী বলেন, “নদীকে বাঁচাতে নানা কর্মসূচি করা হয়। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণও করা হয়। কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ জরুরি। চাই, প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। পাশাপাশি আমরাও প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।” এই বিষয়ে তেহট্ট ২ ব্লকের বিডিও ধ্রুবাঙ্কুর ঠাকুরকে ফোন করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মহকুমা শাসকের দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy