সেহরির খাওয়া। নিজস্ব চিত্র
শেষ হল ছ’দিনের রোজা। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সেহরিতে মাতল সাগরদিঘির তেঘরিপাড়া গ্রাম। স্থানীয় এক ব্যক্তির উদ্যোগে এই সেহরির অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন লাগোয়া গ্রাম বালিপাড়া, চর কাবিলপুর, পাকালপাড়া ও কাশিয়াডাঙার প্রায় তিন হাজার সংখ্যালঘু মানুষ। এলেন বাড়ির মহিলারাও। খাদ্যতালিকায় ছিল ফ্রায়েড রাইস, সবজি, দু’রকমের মাংস, পায়েস আর চাটনি। গ্রামের আমবাগানে একসঙ্গে চেয়ার টেবিল পেতে ৫০০ মানুষের বসার ব্যবস্থা ছিল। পরিবেশনের দায়িত্ব সামলালেন জনা ২৫ গ্রামের তরুণ।
সেহরি অর্থাৎ ভোরবেলায় ফজরের আজানের আগে খাওয়া-দাওয়া সেরে সারাদিনের উপবাস বা রোজার শুরু হয়। ইফতার সন্ধ্যায়, সামান্য কিছু মুখে দিয়ে রোজা ভাঙা। এই এলাকায় ইফতার অনেক হয়। ক্লাব, মসজিদ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এমনকি ইদানিং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও আয়োজন করে ইফতারের। সেখানে থাকে মুড়ি, চানাচুর, চপ থেকে কেক, ফল-মূল, যার যা সামর্থ্য খাওয়া হয়। এক সঙ্গে বসে রোজা ভাঙার মধ্যে থাকে পরস্পরের প্রতি সৌজন্য, সৌহার্দ্য, প্রীতির বিনিময়। সংখ্যালঘু মানুষজনের কাছে অত্যন্ত পবিত্র রমজান মাস। রোজা তারই অঙ্গ। এলাকার প্রবীণ শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, “ইফতার আয়োজন শুনেছি সর্বক্ষেত্রেই। কিন্তু এলাকায় সেহরির আয়োজন এই প্রথম দেখলাম। এক সঙ্গে তিন হাজার মানুষকে খাওয়াবার আয়োজনের পাশাপাশি রাতের বেলায় সময়টা বড় ফ্যাক্টর। ভাল লাগে। সবাই এক সঙ্গে পাশাপাশি বসে খাওয়া-দাওয়া তো বড় একটা হয়ে ওঠে না। গোটা দিন রোজা থাকে বলে দেখা সাক্ষাৎও কম হয়। সেহরি তাই মিলনোৎসবের রূপ নিয়েছিল।”
আর এক শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, “এলাকার মানুষের কাছে এ ভাবে সেহরি পালন দারুণ অভিজ্ঞতা। ইফতার পালন হয় অনেকই। সেহরি অনুষ্ঠানে তিন হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ যোগ দিয়েছেন সেখানে। রাত একটা থেকে শুরু হয় খাওয়া দাওয়া। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছিল আয়োজন। প্রায় ভোর ৪টেয় শেষ হয়েছে তা। সেকানে লোকজন, বিশেষ করে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।”
সেহরিকে ঘিরে মাইল খানেক এলাকা জুড়ে ছিল আলোর রোশনাই। তবে এই সেহরির উদ্যোক্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, “রোজার ক’দিন খুব কষ্টে থাকি আমরা। বিশেষ করে মহিলারা। ইফতার শেষে রাতের খাওয়া সেরে আবার মাঝরাত থেকেই সেহরির আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তাঁরা। এর পর দিনভর উপবাস। তাই রোজাদারদের জন্যই আয়োজন করা হয় সেহরির। একটি স্কুলের পরিচালক ও স্থানীয়রা এগিয়ে এসেছেন এই সেহরিতে। তৃপ্তি করে সেহরির খাওয়াদাওয়া উপভোগ করেছেন এলাকার মানুষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy