Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Eviction Notice

রেলের নোটিসের সময়সীমা শেষ, উচ্ছেদের আশঙ্কা

লোকসভা ভোট চলার মধ্যেই সপ্তাহখানেক আগে তৃতীয় পর্যায়ে দোকানপাটের পসরা সরিয়ে উঠে যাওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে রেল।

চলছে দোকানের কাঠামো খুলে নেওয়া।

চলছে দোকানের কাঠামো খুলে নেওয়া। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নবদ্বীপ  শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ০৯:২৫
Share: Save:

ভোট মিটতে না মিটতেই ফের উচ্ছেদের নোটিশ ধরাল রেল। গত ২৩ মে পূর্ব রেলের তরফে নবদ্বীপ ধাম স্টেশনের উত্তর দিকের রাস্তার দুই ধারে হকার, দোকানদারদের উঠে যাওয়ার জন্য নোটিস দেওয়া হয় রেলের তরফে। ২৯ মে, বুধবার রেলের দেওয়া সময়সীমা শেষ হয়েছে।

এই নিয়ে তৃতীয় বার রেলের জমি পুনরুদ্ধারে নামল রেল। নবদ্বীপ ধাম স্টেশন সংলগ্ন রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য এর আগে দু’টি পর্যায়ে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে রেল। গত ১২ ডিসেম্বর উচ্ছেদের প্রথম পর্যায়ে রেল জেসিবি দিয়ে ভেঙে দেয় বেশ কিছু দোকান। যা নিয়ে প্রবল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আইএনটিটিইউসি-র সদস্য ওই সকল দোকানি সে দিন পথে বসে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। পরে অবশ্য রেল, দোকানদার এবং শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনার পরে সে দিনের মতো বিষয়টি মিটে যায়। এর পর ২১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় পর্যায়ে উচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় দোকানদারেরা নিজেরাই দোকান খুলে জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে যান।

লোকসভা ভোট চলার মধ্যেই সপ্তাহখানেক আগে তৃতীয় পর্যায়ে দোকানপাটের পসরা সরিয়ে উঠে যাওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে রেল। বৃহস্পতিবার অনেককেই নবদ্বীপ স্টেশন রোডে তাঁদের দীর্ঘ দিনের দোকানপাট খুলে নিতে দেখা যায়। ডিসেম্বরের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা দোকান রেল কর্তৃপক্ষ ভেঙে দেওয়ার আগে নিজেরাই দোকানপাট খুলে নিচ্ছেন। আপাতত, তাঁদের সঙ্গী চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা।

নবদ্বীপ ব্যাদড়া পাড়া মোড় থেকে স্টেশন পর্যন্ত কম-বেশি এক কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে শতাধিক দোকান রয়েছে। রেল লাইন সংলগ্ন জমিতে রয়েছে বেশ কিছু বসতবাড়ি। দোকানদার, হকারদের দাবি, বহু বছর ধরে তাঁরা ওই জায়গায় ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের আবেদন— নবদ্বীপ স্টেশনের উন্নয়ন হোক তাঁরাও চান। পাশাপাশি, সেই সঙ্গে তাঁদের রুটিরুজি যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, সেই ব্যবস্থাও করুক রেল।

এর আগে রেলের জমি থেকে উচ্ছেদের সময়ে হকার, দোকানদারদের সঙ্গে আন্দোলনে সামিল হয়েছিল আইএটিটিইউসি। সংগঠনের নবদ্বীপের সভাপতি ভানু সাহা বলেন, “উন্নয়ন হোক আমরাও চাই। কিন্তু কয়েকশো মানুষের উপার্জনের পথ বন্ধ করে দিয়ে এ কেমন উন্নয়ন? এর আগে বিষয়টি নিয়ে রেলের সঙ্গে আমরা, স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষ একযোগে কথা বলেছিলাম। রেলের আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন নবদ্বীপ ধাম মডেল স্টেশন হচ্ছে। মৌখিক ভাবে বলা হয়েছিল, রাস্তাঘাট চওড়া-সহ উন্নয়নের কাজ সম্পূর্ণ হলে হকারেরা অস্থায়ী ভাবে ব্যবসা করতে পারবেন। আমাদের দাবি মডেল স্টেশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হকার এবং দোকানদের জন্য আধুনিক মার্কেট করে দিক রেল।”

এই প্রসঙ্গে নবদ্বীপ ধামের স্টেশন ম্যানেজার বিধানচন্দ্র রায় বলেন, “নবদ্বীপ স্টেশন এবং সংলগ্ন এলাকার সার্বিক উন্নয়নের প্রয়োজনেই রেলের জায়গায় যাঁরা দোকান বা বাড়ি করে আছেন, তাঁদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নতুন করে স্টেশন ম্যানেজারের অফিস, বুকিং অফিস, টিসি অফিস, আরপিএফ অফিস, যাত্রীদের ওয়েটিং রুম ইত্যাদি করা হবে। বাইরে পার্কিং জ়োন হবে। দু’দিকে চওড়া রাস্তা হবে। কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে।”

তেঘরিপাড়ার বিশ্বজিৎ হালদার ৪০ বছরের বেশি দিন ধরে খাবারের দোকান চালাচ্ছিলেন স্টেশন রোডে। ২৬ বছরের স্টেশনারি দোকান ছিল ষষ্ঠীতলার অনিল বিশ্বাসের। পিন্টু বিশ্বাসের সেলুনের বয়স পেরিয়েছে নয় বছর।

বৃহস্পতিবার নিজের নিজের দোকান খুলে নেওয়ার ফাঁকে তাঁদের সকলের একটিই প্রশ্ন— উন্নয়ন তো মানুষের ভালর জন্য। কিন্তু তাঁদের ভবিষ্যৎ কী?

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways Nabadwip
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy