Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Jagaddhatri Puja

বৈষ্ণব গুরুর ভয়ে গোপনে রাজা শুরু করেন শাক্ত দেবীর পুজো, কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রীই প্রাচীনতম!

সময়টা ১৭৫৮ সাল। রাজ কর দিতে পারেননি বলে কৃষ্ণচন্দ্রকে বন্দি করে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন নবাব। গোটা দুর্গোৎসব জেলবন্দি হয়ে কাটাতে হয়েছিল কৃষ্ণচন্দ্রকে।

image of jagaddhatri pujo

কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে দেবী বসেন ঘোড়ার পিঠে। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৩ ২১:৪২
Share: Save:

স্বপ্ন পেয়ে দেবী চণ্ডীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। কিন্তু ভয় গেল না। রাজার মনে হল, কুলগুরু বৈষ্ণব আচার্য কোনও মতেই শক্তি আরাধনার অনুমতি দেবেন না। অথচ কুলগুরুর অনুমতি ছাড়া সম্ভব নয় সেই পুজো। তাই নদিয়ার রাজা ঠিক করলেন, পুজোর আগের দিন মধ্যরাতে কৃষ্ণনগরে ফিরবেন তিনি। পরের দিন সকালে অঞ্জলি দিয়ে সম্পন্ন করবেন পুজো। কুলগুরুকে অন্ধকারে রেখেই শিবচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়কে দায়িত্ব দেওয়া হল পুজো প্রস্তুতির। পরিকল্পনা অনুযায়ী, পুজোর আগের দিন গভীর রাতে গোপনে কৃষ্ণনগরের চলে আসেন কৃষ্ণচন্দ্র। সারা দিন নির্জলা উপোস থেকে অঞ্জলি দেন। এ ভাবেই শুরু হয় কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজো।

কেন জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন, তার নেপথ্যেও রয়েছে এক গল্প। সময়টা ১৭৫৮ সাল। রাজ কর দিতে পারেননি বলে কৃষ্ণচন্দ্রকে বন্দি করে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন নবাব। গোটা দুর্গোৎসব জেলবন্দি হয়ে কাটাতে হয়েছিল কৃষ্ণচন্দ্রকে। নবাবের নির্দেশে যে দিন তিনি মুক্তি পান, সে দিন মা দুর্গার নিরঞ্জনের প্রস্তুতি চলছে। দশমী তিথিতে নদীপথে কৃষ্ণনগর ফেরার সময় দুর্গোৎসবের কথা মনে করতে করতে বিষণ্ণ মনে ঘুমিয়ে পড়েন কৃষ্ণচন্দ্র। স্বপ্নে রক্তবর্ণা চতুর্ভুজা এক দেবীকে তিনি স্বপ্নে দেখেন। দেবী আদেশ দেন যে, কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে তাঁর পুজো করতে। দেবীর আদেশেই জগদ্ধাত্রীর আরাধনা শুরু হয় কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে।

মনে করা হয়, কৃষ্ণনগরেই প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়। কৃষ্ণনগরের ইতিহাসবিদদের দাবি, চন্দননগরের ফরাসি সরকারের দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী ছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কৃষ্ণনগর রাজপরিবারের জগদ্ধাত্রী পুজো দেখে ইন্দ্রনারায়ন ফরাসডাঙা অর্থাৎ অধুনা চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। কৃষ্ণনগরে দেবী ঘোড়ায় আসীন। বালিকা রূপের জগদ্ধাত্রীর স্বাতন্ত্র্য তার প্রাচীনত্বকে তুলে ধরে।

কৃষ্ণনগরে পুজো পদ্ধতি এবং মায়ের ভোগেও রয়েছে বিশেষত্ব। কৃষ্ণনগর রাজ পরিবারের বর্তমান ‘রানিমা’ অমৃতা রায় বলেন, ‘‘এক দিনে তিন বার পুজো হয় মায়ের। পূর্বাহ্ণে সাত্ত্বিক, মধ্যাহ্নে রাজসিক এবং সায়াহ্নে তামসিক রূপে দেবীর পূজা করা হয়। ভোগে থাকে খিচুড়ি, ন’রকম ভাজা, তরকারি, পোলাও, তিন রকম মাছ, চাটনি, পায়েস, সুজি ও বিভিন্ন রকম মিষ্টি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jagaddhatri Puja Raja Krishnachandra Krishna Nagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy