Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ভিজে রথ আর মেঘলা চাঁদের ইদ

রথ-সকালের বৃষ্টি আর মেঘ-আকাশের আড়ালে একটা কাস্তে চাঁদের খোঁজ— বুধবার সন্ধেতক এ ভাবেই জেগে থাকল বহরমপুর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৬ ০২:১৬
Share: Save:

রথ-সকালের বৃষ্টি আর মেঘ-আকাশের আড়ালে একটা কাস্তে চাঁদের খোঁজ— বুধবার সন্ধেতক এ ভাবেই জেগে থাকল বহরমপুর।

সকাল থেকে গঙ্গাতীরের রথের মেলা আর প্রাক-ইদের সাঁঝে সুরমা মাখা জুল জুল চোখ, মেহেন্দির আলপনা আঁকা হাত। রং মিলন্তি রেশমি চুড়ি, সস্তা তেলে পাঁপড়ের সুঘ্রাণ, ভেজা ভেজা জমি, আর সান্ধ্য নমাজ— শহরটাকে আজ নতুন করে চিনল গোরাবাজারের খুসবু খাতুন থেকে ইন্দ্রপ্রেস্থের বৈশালী বসু।

গঙ্গার পূর্বপাড়ের ঐতিহাসিক শহর বহরমপুরের থেকে পিছিয়ে নেই পদ্মাপাড়ের সীমান্ত শহর লালগোলাও। রমজানের শেষ উপবাস ভাঙতে এ দিন ইফতার ও তারপর মাগরিবের নামাজ পড়ার পরেই লালগোলা রাজবাড়ি লাগোয়া কাঠমিলের মাঠের ঐতিহাসিক রথের মেলায় ভিড় জমিয়েছেন প্রতিবেশী দুই সম্প্রদায়ের মানুষ।

এ দিন বহরমপুর শহরের কোথাও কৃষ্ণনাথ কলেজ লাগোয়া মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে, কোথাও টেক্সটাইল কলেজ মোড় থেকে গড়াতে শুরু করে রথের চাকা। তার মধ্যেই প্রাকসন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে সরু এক ফালি দ্বিতীয়ার চাঁদ দেখা যেতেই এক মাসব্যাপী রোজার নিরম্বু উপবাস ক্লিষ্ট মুখে খেলে যায় খুশির আভা। বুধবার ইদ ধরে নিয়ে যে সব এলাকায় ইদ মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজনে খামতি ছিল বৃষ্টিবাদলার কারণে, সেই সব এলাকা আলোকসজ্জা ও মঞ্চসজ্জার জন্য বাড়তি একটি দিন হাতে পাওয়ায় মহাখুশি উদ্যোক্তারা। বুধবার আকাশে চাঁদ দেখা যাওয়ায় তাঁদের মু‌খও হাস্যোজ্জ্বল। বহরমপুর শহরের খাগড়া বড়মুরির ধার এলাকার ‘সম্প্রীতি সঙ্ঘ ইদ উৎসব কমিটি’র ৫ দিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয় বুধবার সন্ধ্যায়। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ইদ সম্মিলনী অনুষ্ঠান রয়েছে গোরাবাজার নিমতলা মোড়, আইসিআই গলি, পুরনো পোস্ট অফিস, জমিদারি, শহর লাগোয়া পাকুড়িয়া, বদরপুর, পঞ্চাননতলা-প্রফেসর অ্যভিনিউ ছাড়াও সালার, ইসলামপুর, ডোমকল- সহ সারা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। পঞ্চাননতলা-প্রফেসর অ্যভিনিউ-এর ১৫তম বছরের চার দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থার নাম ‘ইয়ুথ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন’। চার দিনের ওই অনুষ্ঠানে রয়েছে মুরগি লড়াই, চামচ দৌড়, হাঁড়িভাঙা, মিউজিক্যাল চেয়ার, মোমবাতি জ্বালানো, স্কিপিং, বাস্কেট বল, যেমন খুশি সাজো, নৃত্য, আবৃত্তি- সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠান। রয়েছে ‘যুগান্নি’র নাটক ও ‘খেয়া’র লোকগান।

ইদ উৎসবের সঙ্গেই রয়েছে কান্দি, জিয়াগঞ্জ, চক-ইসলামপুর, অরাঙ্গাবাদের তাঁতিপাড়া- সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় রথের মেলা। মেলার মেয়াদ কোথাও সোজারথ থেকে উল্টোরথ পর্যন্ত পাক্কা সাত দিন। অরাঙ্গাবাদের তাঁতিপাড়ার মেলার মেয়াদ আট দিনের। লালগোলার মেলার মেয়াদ এক মাস।

অরাঙ্গাবাদের তাঁতিপাড়ার আয়োজন। প্রাচীন সেই রীতি মেনে বরাবর তাঁতিপাড়ার রথের রশিতে প্রথম টান দেন নববধূ। তারপর সেই রশিতে টান দেবেন অন্যরা। রথের মেলার সর্বজনীন চরিত্রের মতো ওই প্রথা আজও অটুট। রাত পোহালে রথের মেলার আনন্দের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে ইদের কোলাকুলি, সেমুই-লাচ্চার রস। তার জন্য রঙিন কাগজে ও আলোকমালায় সেজে উঠেছে মুর্শিদাবাদ।

অন্য বিষয়গুলি:

rathyatra eid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy