উপচে পড়া ভিড়। নিজস্ব চিত্র।
জেলার এক মাত্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কমেছে নিরাপত্তা। যার ফলে হাসপাতালের ভিতরে বাইরে সুরক্ষার অভাব বোধ করেন রোগী থেকে রোগীর আত্মীয়-পরিজন সকলেই। সপ্তাহের ছ’দিন এই হাসপাতালের বহির্বিভাগে ভিড় উপছে পড়ে জেলার প্রতিটি মহকুমার মানুষজন সহ প্রতিবেশী নদিয়া, বীরভূমের অসুস্থ মানুষেরও।
সেই ভিড়ে আজ কারও কানের দুল, কাল কারও মোবাইল, পরশু কারও টাকার ব্যাগ হারিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা গা সওয়া হয়ে গিয়েছে মানুষের। সে সব দেখার মত কোনও পাহারাদার নেই বলে আক্ষেপ চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসা মানুষজনের। শোনা যায়, হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টার জন্য পুলিশ পাহারা আছে। অথচ হাসপাতালে গেলে তাঁদের দেখা পাওয়া ভার।
এই হাসপাতাল চত্বরেই আছে ব্লাড ব্যাঙ্ক। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, “সেখানে এখন দালাল চক্র চলে।” সে কথায় সায় দিয়ে হাসপাতালেরই এক কর্মী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “এখানে দালাল ধরলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয় না রোগীদের। অপেক্ষা করতে হয় না এক্স-রে কিংবা স্ক্যানের জন্য। কোথাও কোনও প্রতিরোধ নেই।” এক জন মুমূর্ষু রোগীকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা কিংবা সেখান থেকে নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় স্ট্রেচার ধরতেও টাকা লাগে বলে জানান হাসপাতাল চত্বরে তিন দিন কাটানো ডোমকলের আজগর আলি। তিনি বলেন, “এখানে টাকা দিলে সবই মেলে। অপেক্ষা করলেই দেখতে পাবেন।”
শুধু তাই নয়, অভিযোগ, হাসপাতালের ভিতরেও সুরক্ষিত নন রোগীরা। আগে এই হাসপাতালেই প্রায় ২৫০ জন বেসরকারি প্রহরী সবসময় পাহারায় থাকতেন। এখন সেখানে ১৩০ জন প্রহরী কর্তব্যে অবিচল হাসপাতালের সুরক্ষায়। যদিও কোভিডের জন্য প্রহরীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। সরকারি হিসেবে হাসপাতাল চত্বরে সাড়ে পাঁচশো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে। সেই ক্যামেরার অধিকাংশই অকেজো বলে অভিযোগ।
অথচ সকাল থেকে দুপুর দেড়টা-দুটো পর্যন্ত কমপক্ষে সাত আট হাজার রোগীর লম্বা লাইন যেমন পড়ে বহির্বিভাগে তেমনই ভিড়ে ঠাসা ওষুধ নেওয়ার কাউন্টার। সেই ভিড় সামলানোর জন্য পর্যাপ্ত প্রহরী না থাকায় রোগীর বাড়ীর লোকজনের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মীদের ঝামেলা চলে রোজ।
হাসপাতাল সুপার অমিয় কুমার বেরা অবশ্য মানুষজনকেই দালালের হাত থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, “এমন কোনও ঘটনা ঘটলে সরাসরি আমাদের জানান। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি কি না, সেটাও দেখুন।” তবে কর্মীর সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে রোগীর তুলনায় স্থানও অনেক কম সে কারণেই এত ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হয় বলে অবশ্য মানছেন সুপার। তিনি বলেন, “পরিকাঠামো বাড়ানোর প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy