প্রতীকী চিত্র।
কেউ না কেউ খুন হতই। ঘটনা পরম্পরা এমনই ছিল। প্রদীপ সরকার খুনের তদন্তে নেমে এমনটাই ধারণা পুলিশের একাংশের। যদিও প্রদীপের মৃতদেহ উদ্ধারের পর চার দিন পেরিয়ে গেলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। খুনের অস্ত্র উদ্ধার হয়নি, এমনকি খুন কোথায় হয় তা-ও স্পষ্ট হয়নি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার সকালে কলকাতার বাসা থেকে বেরিয়ে রানাঘাটে আসেন শান্তিপুর নবলা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল সদস্য প্রদীপ। দুই ঘনিষ্ঠ চাঁদ বিশ্বাস ও উজ্জ্বল বিশ্বাসের সঙ্গে সারা দিন নানা জায়গায় ঘোরেন তিনি। বিকেলে বাড়িতে ফোন করে জানান, পরের দিন বাসায় ফিরবেন। সন্ধ্যায় ফুলিয়ার একটি ধাবায় কয়েক জনের খাওয়ার সময়ে একটি ফোন আসে এবং তার পরেই তড়িঘড়ি প্রদীপকে রানাঘাটের দিকে যেতে দেখা যায় বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রের খবর। পরের দিন হবিবপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে জলাশয়ের ধারে তাঁর কোপানো ও মাথায় গুলিবিদ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশের ধারণা, রাতে তাঁকে অন্য কোথাও খুন করে ওই জায়গায় দেহ ফেলে যাওয়া হয়েছিল। পরিবারের তরফে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে, যদিও পুলিশ ‘তদন্তের স্বার্থে’ তাদের নাম জানাতে চায়নি। শুক্রবার রাত পর্যন্ত চাঁদ বা উজ্জ্বলের হদিসও মেলেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
২০১৩ সালে তৃণমূলের টিকিটে নবলা পঞ্চায়েতের সদস্য হয়েছিলেন প্রদীপ। পরের বার আসনটি মহিলা প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় তাঁর স্ত্রী চঞ্চলা সরকারকে প্রার্থী করে তৃণমূল। কিন্তু নির্দল প্রার্থী চন্দ্রিমা মণ্ডলের কাছে হেরে যান চঞ্চলা। চন্দ্রিমা পরে তৃণমূলে যোগ দেন। গত বছর মে মাসে রাস্তায় হাম্প তৈরি নিয়ে বচসার জেরে চন্দ্রিমার ভাই দেবব্রতকে অস্ত্র দিয়ে কোপানোর অভিযোগ ওঠে প্রদীপ ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। নানা গুন্ডামিতে নাম জড়ানোয় প্রদীপের বিরুদ্ধে এলাকায় ক্ষোভ ছিলই।
কিন্তু একে শাসক দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা, তার উপর শারীরিক ভাবে প্রবল বলশালী হওয়ায় কেউ তাঁকে ঘাঁটাত না। কিন্তু দেবব্রতের উপর হামলার পরে প্রদীপ ও তাঁর সঙ্গীদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। এর পরেই প্রদীপ কলকাতায় গিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন।
তদন্তকারীদের একাংশের ধারণা, পুরনো শত্রুতার জেরে হোক বা নতুন করে শুরু হওয়া রেষারেষির জেরে, এক বা একাধিক ব্যক্তিকে খুনের ছক কষা হচ্ছিল। তারই মধ্যে ঘনিষ্ঠদের দিয়ে প্রদীপকে ডাকিয়ে এনে খুন করা হয়। তবে এর পিছনে কারা আছে, প্রদীপ বাদে আর কার খুন হওয়ার আশঙ্কা ছিল, কিছুই পুলিশ সূত্রে খোলসা করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy